ঢাকা, ১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৪ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

শরীর ও মন

ওভারির সিস্ট ও টিউমারের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

ডা. এম এ হক, পিএইচ. ডি
২ সেপ্টেম্বর ২০২২, শুক্রবার
mzamin

নারীদের ওভারি একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ওভারি থেকে ওভাম বা ডিম্বাণু উৎপন্ন হয় যা শুক্রাণুর সঙ্গে মিলিত হয়ে সন্তান জন্ম হয়। প্রত্যেক নারীর দুইটি ওভারি থাকে। নারীদের ওভারি বা ডিম্বাশয়ে সিস্ট এবং টিউমার হওয়া বর্তমানে কমন একটি সমস্যা। ওভারিতে সিস্ট অথবা টিউমার থাকলে সুস্থ ওভাম বা ডিম্বাণু উৎপাদন হয় না। ফলে, ঐ নারী গর্ভধারণ করে না। আবার কখনো গর্ভধারণ করলেও অসুস্থ ওভামের কারণে গর্ভস্রাব (এবোর্শন) হয়ে যায়। সিস্ট ও টিউমারের কারণে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। ওভারির সিস্ট: সাধারণত মাসিক শুরু হওয়ার পর থেকে মনোপোজ বয়সের মধ্যে এই রোগ হয়। 

মূলত ওভারিতে পানিপূর্ণ থলিকে ওভারিয়ান সিস্ট বলে। ইদানীং অনেক নারী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ওভারিতে নানা ধরনের সিস্ট হয়ে থাকে যেমন: ফাংশনাল সিস্ট, পলিসিস্টিক সিস্ট (পিসিওএস), এন্ডোমেট্রিওটিক সিস্ট, ডারময়েড সিস্ট, এডানোমা সিস্ট, চকোলেট সিস্ট ইত্যাদি। ওভারিয়ান টিউমার: ওভারিতে এক গুচ্ছ কোষ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেলে তাকে ওভারিয়ান টিউমার বলে। ওভারিয়ান টিউমার সাধারণত দুই প্রকার। ১. বিনাইল (ক্যান্সারবিহীন) টিউমার ২. ম্যালিগনেন্ট (ক্যান্সারযুক্ত) টিউমার। ওভারিয়ান টিউমার যেকোনো বয়সের মহিলাদেরই হতে পারে। 

লক্ষণ: সিস্ট ও ওভারিয়ান টিউমারের সাধারণ একই ধরনের লক্ষণসমূহ প্রকাশ পায়। উল্লেখযোগ্য লক্ষণসমূহের মধ্যে অনিয়মিত মাসিক, মাসিক পরবর্তী যোনিতে রক্তপাত, যৌন সংগমের সময়ে বা পরে জরায়ুতে ব্যথা বা অস্বস্তি, পেছনে ব্যথা, তলপেট ফোলা অনুভূতি, তলপেট ভারী বোধ, ক্ষুধামন্দা, অতিরিক্ত ক্লান্তি, বমি বমি ভাব, ঘন ঘন প্রস্রাব ইত্যাদি। পরীক্ষা: জরায়ুর টিভিএস করলে ওভারিয়ান সিস্ট বা টিউমার খুব সহজেই শনাক্ত করা যায়। ক্যান্সার শনাক্তের জন্য বায়োপসি করতে হয়। চিকিৎসা: বর্তমান সময়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন, সহজ ও আধুনিক চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মাধ্যমে ওভারি সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। ফলে, শরীর থেকে কোনো ওভারি কেটে বাদ দেয়ার প্রয়োজন হয় না। হোমিওপ্যাথিক ওষুধের দ্বারা আমাদের চিকিৎসা সেবায় সিস্ট ও ওভারিয়ান টিউমারের কতো শত নারীর মুখে আজ খুশির হাসি। সাধারণত ওভারির সিস্ট ও জরায়ুর টিউমারের কারণে ডিম্বাণু ছোট হয়। ফলে, অসংখ্য নারী গর্ভধারণ করতে পারে না। 

এ ছাড়াও এক ধরনের রুগী আছে যাদের গর্ভধারণের ৩ মাস বা ৫ মাসে গর্ভপাত হয়। ওভারির সিস্ট ও টিউমারের সমস্যা নিয়ে কোনো রুগী যখন আমাদের চেম্বারে আসেন তখন তাদের সকল রিপোর্ট পর্যালোচনা করে সঠিক ওষুধটি প্রয়োগ করলে অল্প দিনের মধ্যেই সিস্ট এবং ওভারি সুস্থ হয়ে যায়। সিস্ট ও ওভারির টিউমারের কারণে সৃষ্ট ক্যান্সারও আমাদের চিকিৎসায় আরোগ্য লাভ করে। যে সমস্ত কারণে জরায়ু বা ওভারির অপারেশনের পরামর্শ দেয়া হয় সে সব ক্ষেত্রে অপারেশন ব্যতীত শুধুমাত্র ওষুধ সেবনের মাধ্যমে জরায়ু বা ওভারির সুস্থ হয়। আমাদের চিকিৎসায় ওভারির সিস্ট ও টিউমার সুস্থ হওয়ার পাশাপাশি প্রজনন অঙ্গের অন্যান্য জটিল রোগ-ব্যাধিও আরোগ্য হয়। আমরা সুদীর্ঘ সময় ধরে সফলতার সহিত ওভারির সিস্ট, টিউমার, ওভারি ও জরায়ুর ক্যান্সার ও বন্ধ্যত্বর গবেষণামূলক চিকিৎসাসেবা প্রদান করে আসছি।  

 

লেখক: ডা. এম এ হক, পিএইচ. ডি (স্বাস্থ্য), এম. ফিল. (স্বাস্থ্য), ডি এইচ এম এস. (বন্ধ্যত্ব ও ক্যান্সার চিকিৎসায় অভিজ্ঞ)। চেম্বার: ড. হক হোমিও ট্রিটমেন্ট অ্যান্ড রিসার্স সেন্টার, বিটিআই গ্রান্ড সেন্ট্রা ভবন, গ্রাউন্ড ফ্লোর (জি-৪), ১৪৪ গ্রীন রোড, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫; ফোন: ০১৭০৭-০৭ ৩১ ৪১

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status