দেশ বিদেশ
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ অস্বীকার করলেন বাংলাদেশের পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মানবজমিন ডিজিটাল
৫ জুলাই ২০২৫, শনিবারবাংলাদেশের পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। গত মঙ্গলবার তার রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এ কথা জানিয়েছেন। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই থেকে আগস্টের মধ্যে বাংলাদেশে ১,৪০০ জন নিহত হয়েছেন, যখন শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতা ধরে রাখার ব্যর্থ প্রচেষ্টায় বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়নের নির্দেশ দেয়। আগস্ট মাসে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহের চূড়ান্ত পর্যায়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান এবং ঢাকায় ফিরে আসার আদেশ অমান্য করেন। তার অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশে বিচার শুরু হয় ১লা জুন। আইনজীবীরা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ দায়ের করেছেন- প্ররোচনা, উস্কানি, কুকর্মে সহযোগিতা, ষড়যন্ত্র এবং গণহত্যা প্রতিরোধে ব্যর্থতা; যা বাংলাদেশি আইনের অধীনে মানবতাবিরোধী অপরাধের সমান। তার আইনজীবী আমির হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং সাংবাদিকদের বলেছেন যে, তিনি এই অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেতে নিজের যুক্তি উপস্থাপন করবেন। বাংলাদেশে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ লন্ডন থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে এটিকে ‘লোক দেখানো বিচার’ বলে অভিহিত করেছে এবং স্পষ্টভাবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। হাসিনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো স্পষ্ট করে তুলে ধরতে আইনজীবীরা তার অপরাধের বিশাল তালিকা থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ তুলে ধরেছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সহিংসতায় উস্কানি দেয়ার পাশাপাশি হেলিকপ্টার থেকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, হাসিনা যেকোনো মূল্যে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে মরিয়া ছিলেন। তিনি তার প্রয়াত পিতা, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমানের ‘উপাসনা’ করার জন্য লোকদের চাপ দিতেন। ক্ষমতা ধরে রাখার ব্যাপারে তার পিতারও একই রকম নেশা ছিল বলে উল্লেখ করেছেন আইনজীবী তাজুল ইসলাম। প্রসিকিউটররা বলেছেন যে, বিদ্রোহের সহিংস দমনের সঙ্গে সম্পর্কিত তিনটি নির্দিষ্ট মামলায় (যার পৃথক বিচার চলমান) সামগ্রিকভাবে নির্দেশ এসেছিল হাসিনার কাছ থেকে। সেই মামলাগুলো হলো- ২৩ বছর বয়সী প্রতিবাদী ছাত্র আবু সাঈদের হত্যা, ঢাকার চানখারপুল এলাকায় আরও ছয়জনকে হত্যা এবং রাজধানীর শহরতলী আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যা ও পুড়িয়ে মারা। হাসিনার সঙ্গে আরও দুইজন কর্মকর্তার বিচার চলছে। তাদের মধ্যে একজন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, যার বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে, তিনিও পলাতক। দ্বিতীয়জন, সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, হেফাজতে রয়েছেন। তারও বিচার চলছে।
সূত্র : দ্য হিন্দু