ইসরাইলি হামলায় রক্তাক্ত মানবিক সহায়তা কেন্দ্র

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনী ও ড্রোন হামলায় মঙ্গলবার ভোর থেকে কমপক্ষে ৮৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তার মধ্যে ৫৬ জনই সাহায্যের খোঁজে মানবিক সহায়তা কেন্দ্রে জড়ো হয়েছিলেন। হাসপাতাল সূত্র উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। শুধু দক্ষিণের রাফাহ শহরেই ২৭ জন সাহায্যপ্রার্থীকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইলি সেনারা। গাজায় ইসরাইল যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে মোট নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৫৬,০০০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ১,৩১,৮৪৮ জন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে এমন ভয়াবহ পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে।

সম্প্রতি ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত হয় বিতর্কিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)। তাদের পরিচালিত সহায়তা কেন্দ্রে প্রতিদিনই ঘটছে হত্যাকাণ্ড। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র প্রধান ফিলিপ লাজারিনি এই কেন্দ্রগুলোকে সরাসরি ‘মৃত্যুকূপ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। মঙ্গলবার গাজা উপত্যকার কেন্দ্রস্থল সালাহ আল-দিন সড়কে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ২৫ জন নিহত এবং ১৪০ জনের বেশি আহত হন। তার মধ্যে ৬২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আল-আওদা হাসপাতাল (নুসেইরাত ক্যাম্প), নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স (খান ইউনিস) এবং আল-শিফা হাসপাতাল (গাজা সিটি) সহ বিভিন্ন স্থানে আহতদের নেয়া হলে চিকিৎসা দিতে না পারায় অনেকেই চিকিৎসার অপেক্ষায় মারা যান।

এপি ও আল জাজিরার সূত্রে জানা গেছে, ইসরাইলি ট্যাঙ্ক ও ড্রোন সরাসরি সহায়তা ট্রাকের কাছে জড়ো হওয়া মানুষদের ওপর গুলি ও ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করেছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী আহমেদ হালাওয়া বলেন, এটা ছিল এক নিখাদ হত্যাযজ্ঞ। আমরা যখন পালাতে চাইছিলাম, তখনও আমাদের ওপর গুলি চালানো হয়। জিএইচএফের মাধ্যমে পরিচালিত এই সহায়তা কার্যক্রম নিয়ে জাতিসংঘ বরাবরই আপত্তি জানিয়েছে। জাতিসংঘের মতে, জিএইচএফ ইসরাইলি সামরিক স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়, যা একটি নিরপেক্ষ, মানবিক ব্যবস্থার সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। এই সংস্থা চালুর পর থেকে কমপক্ষে ৪১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১০০০ জন আহত হয়েছেন ইসরাইলি হামলায়। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক বলেন, এই বিতরণ ব্যবস্থা হচ্ছে একটি সামরিকীকৃত প্রক্রিয়া যা নির্দোষ মানুষদের জীবন কেড়ে নিচ্ছে। মানুষ কেবল খাবারের জন্যই নিহত হচ্ছে।