ভিয়েতনামে দুর্নীতির শাস্তি থেকে মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাহার

ভিয়েতনামের সংসদ এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে দুর্নীতি ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডসহ আটটি অপরাধে মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে ১২০০ কোটি ডলারের দুর্নীতিতে দণ্ডিত রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ট্রুয়ং মাই ল্যান-এর প্রাণ রক্ষা পাচ্ছে। ২৫শে জুন দেশটির পার্লামেন্ট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, ভিয়েতনামের আইনসভা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বুধবার সর্বসম্মতিক্রমে ফৌজদারি আইনে সংশোধনী অনুমোদন করে। সংশোধিত আইনে উল্লেখ করা হয়েছে, যে আটটি অপরাধে আর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে না, সেগুলোর সর্বোচ্চ শাস্তি হবে আজীবন কারাদণ্ড। মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাহারকৃত অপরাধসমূহ হলো-দুর্নীতি ও আত্মসাৎ, রাষ্ট্র উচ্ছেদের চেষ্টা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস, ভুয়া ওষুধ উৎপাদন, শান্তি বিনষ্ট করা, আগ্রাসী যুদ্ধ শুরু, গোয়েন্দাগিরি ও মাদক বহন।

ভিয়েতনামের সরকারি বার্তা সংস্থা ভিএনএ জানায়, যারা আগামী ১ জুলাইয়ের আগে এসব অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন কিন্তু এখনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি, তাদের সাজাও স্বয়ংক্রিয়ভাবে আজীবন কারাদণ্ডে রূপান্তরিত হবে। এর মধ্যে রয়েছেন ধনকুবের ট্রুয়ং মাই ল্যান। তিনি ভ্যান থিন ফাট হোল্ডিংস গ্রুপের চেয়ারপারসন। তিনি গত বছর ভিয়েতনামের ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ১২০০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হন। যদিও তার আইনজীবীরা রয়টার্সের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করেননি, তবে আইনজীবী নগো আন তুয়ান বলেন, আইনের সংশোধনের ফলে তার সাজা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কমে যাবে। ওদিকে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকছে যেসব অপরাধে তাহলো- হত্যা, রাষ্ট্রদ্রোহ, সন্ত্রাসবাদ, শিশুর যৌন নির্যাতন ও মাদক পাচার। ভিয়েতনামে মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত তথ্য রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা। তাই সেখানে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদির সংখ্যা অজানা। ২০১১ সালে ফায়ারিং স্কোয়াড বন্ধ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের একমাত্র পদ্ধতি হিসেবে প্রাণঘাতী ইনজেকশন চালু হয়। তবে সর্বশেষ সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর চাপে নেওয়া হয়েছে কিনা, তা পরিষ্কার না হলেও, এটি ভিয়েতনামের আইনি ব্যবস্থায় এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।