ঢাকা, ২৯ জুন ২০২৫, রবিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

বিশ্বজমিন

সব পক্ষই জয় দাবি করছেন, শান্তি বহু দূরের পথ

মানবজমিন ডেস্ক

(৪ দিন আগে) ২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ২:২৬ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:১৩ পূর্বাহ্ন

mzamin

যুদ্ধবিরতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজি হয়েছে ইরান, ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে এই ১২ দিনের যুদ্ধে সবাই নিজের জয় দাবি করছে। জেরুজালেম থেকে বিবিসির সাংবাদিক হুগো বাশেগা বলছেন, বৃহৎ পরমাণু স্থাপনায় ইরানের উপর চালানো যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইরানের পূর্বনির্ধারিত, প্রতীকী ও সুপরিকল্পিত পাল্টা হামলার কয়েক ঘণ্টা পরেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। যুদ্ধটি চলে ১২ দিন। এখন সবাই দাবি করছে তারা জিতেছে। যুদ্ধবিরতির প্রতি সম্মান দেখানোর কারণ দু’পক্ষেরই রয়েছে। ইসরাইল তাদের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের সামরিক অভিযানে পরমাণু ও সামরিক খাতে ইরানের বড় ধরনের ক্ষতি সাধন করেছে বলে দাবি করছে। এতে ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা ও পরমাণু বিজ্ঞানীরাও নিহত হয়েছেন। তারা ট্রাম্পকে এমন কিছু করতে রাজি করাতে পেরেছে, যা অতীতের অনেক মার্কিন প্রেসিডেন্টই করতে চাননি। এই যুদ্ধবিরতি ইসরাইলিদের ওপর থেকে চাপ কমাবে, যারা গত দুই বছর ধরে চলমান গাজা যুদ্ধেও অবসাদগ্রস্ত। যদিও গাজা যুদ্ধের কোনো সুস্পষ্ট শেষ দেখা যাচ্ছে না। এখন ইসরাইল কর্তৃপক্ষ দেশের অর্থনীতি পুনরায় খুলে দিতে পারবে। ইরানের জন্য এটি সেই জনগণের জন্য স্বস্তি বয়ে আনবে, যারা প্রায় নিয়মিতভাবে বোমার নিচে ছিলেন। লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এখন তাদের সামনে কঠিন কাজ- ধ্বংস হওয়া অবকাঠামো ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সেবাগুলো পুনর্গঠন করা। এটি একেবারে সহজ নয়, বিশেষ করে একটি গভীর অর্থনৈতিক সংকটে থাকা ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত দেশের জন্য।

ওদিকে বিবিসির আরেক সাংবাদিক লিসে ডসেট বলেন, শান্তি ও যুদ্ধের হঠাৎ পরিবর্তন হলো। মাত্র দুই দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র এমন এক ‘লাল রেখা’ পার করেছে, যা বহু বছর অতিক্রম হয়নি। তারা ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় সরাসরি বোমা হামলা চালায়। এটি ছিল এক নজিরবিহীন মুহূর্ত, বিপদের সম্ভাবনায় ভরা। বিশ্বজুড়ে সঙ্কেত ঘণ্টা বেজে ওঠে। তারপর প্রত্যাশিতভাবেই ইরান পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় নামে। তারা মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে থেকেই জানিয়ে দেয় যে তারা তাদের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত হানবে, তবে এমনভাবে যেন খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানি না ঘটে। এই মুহূর্তের গতি এত দ্রুত যে কাতার, যার সার্বভৌম ভূখণ্ডে ইরান হামলা চালিয়েছে, মুহূর্তেই মধ্যস্থতাকারী হয়ে ওঠে যুদ্ধবিরতির প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেয়। এই সেই যুদ্ধবিরতি যা হঠাৎ করেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্বকে জানিয়ে দেন।

এই চমকের সাথে মিশে আছে এক ধরনের গভীর স্বস্তি। সবচেয়ে বেশি স্বস্তি এসেছে ইরান ও ইসরাইলের সাধারণ জনগণের জন্য, যারা গত ১২ দিন ধরে টানা গোলাবর্ষণের মধ্যে ছিল। এই অঞ্চলে ও এর বাইরেও একটি সম্মিলিত স্বস্তির নিঃশ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সেই উচ্ছ্বাসে বিশ্বাস করতে চায়- যেখানে তিনি বলেছিলেন, ভালোবাসা, শান্তি ও সমৃদ্ধির সূচনা হয়েছে।
কিন্তু বাস্তবে এটিকে বলা যায় এই যুদ্ধের প্রথম অধ্যায়ের সমাপ্তি। ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে প্রকৃত শান্তির শুরু এটা নয়- সেটা এখনো বহু দূরের পথ।
 

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

১০

ইরানের আকাশসীমা দখলের দাবি ইসরাইলের/ ‘আকাশে যুদ্ধবিমান দেখা যাবে, তেহরান জ্বলবে’

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status