ঢাকা, ১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৪ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

বিশ্বজমিন

একাট্টা চীন ও রাশিয়া

ট্রাম্পকে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা

মানবজমিন ডেস্ক

(১ সপ্তাহ আগে) ২১ জুন ২০২৫, শনিবার, ১১:০১ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৫:৪৮ অপরাহ্ন

mzamin

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা যখন সরাসরি যুদ্ধে পরিণত হওয়ার পথে, তখন বিশ্বরাজনীতিতে একটি ভিন্ন দৃশ্যপট তৈরি করছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার এক ফোনালাপে দুই নেতা এমনভাবে নিজেদের উপস্থাপন করেছেন যেন তারা এই সংঘাত নিরসনে যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হিসেবে উঠে আসতে চান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যখন ইসরাইলের সঙ্গে একত্রে ইরানে হামলা চালানোর কথা ভাবছেন, তখন এই ক্রমবর্ধমান সংঘাতকে ‘নির্বোধ আগ্রাসন’ হিসেবে তুলে ধরছে বেইজিং ও মস্কো। এ খবর দিয়ে বিশ্লেষণধর্মী একটি প্রতিবেদন সিএনএনে লিখেছেন নেকটার জান। 

তিনি আরও লিখেছেন ক্রেমলিন জানায়, ফোনালাপে পুতিন ও শি ইসরাইলের সামরিক কর্মকাণ্ডকে জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণও এক ধরনের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন, যা নিয়ে চীন বরাবরই নীরব থেকেছে। চীনের পাঠানো বিবৃতিতে অবশ্য শি জিনপিং একটু নরম ভাষায় কথা বলেন। তিনি বিশেষ করে ইসরাইলকে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান এবং বলেন— বড় শক্তিগুলোকে উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করতে হবে, উস্কানিতে নয়। এটা মূলত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্দেশে একটি পরোক্ষ সতর্কবার্তা।

চীনের সাংহাই ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ লিউ ঝোংমিন বলেন, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যে নীতিগত অনিশ্চয়তা ও লেনদেন-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যাচ্ছে, তা এই সংকটের মূল কারণ। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব এখন প্রশ্নবিদ্ধ। তারা নিজের মিত্রদের আস্থাও হারাচ্ছে এবং শত্রুদের ভীত করার ক্ষমতাও ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে।

চীন ও রাশিয়া এখন নিজেদের ‘শান্তির বার্তাবাহক’ হিসেবে তুলে ধরছে। চীন কেবল যুদ্ধবিরতির আহ্বানই জানাচ্ছে না, বরং তারা চার দফা প্রস্তাব দিয়েছে। তাহলো— যুদ্ধ বন্ধ ও বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা, পারমাণবিক ইস্যুতে সংলাপ, আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রশমন ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ইতিমধ্যেই ইরান, ইসরাইল, মিশর ও ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে একাধিক ফোনালাপ করেছেন।

চীন এর আগেও গাজা যুদ্ধের শুরুতে শান্তি প্রক্রিয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল, কিন্তু বাস্তব কোনো অগ্রগতি হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, চীনের এই অঞ্চলে বাস্তব রাজনৈতিক বা সামরিক প্রভাব নেই। তাই তারা যতই শান্তির দূত হওয়ার চেষ্টা করুক, বাস্তব ভূমিকা রাখতে পারা কঠিন। তবে চীন-ইরান সম্পর্ক ক্রমাগত গভীর হচ্ছে। চীন ইরানের অন্যতম প্রধান তেল ক্রেতা, এবং উভয় দেশ যৌথ সামরিক মহড়া পর্যন্ত করেছে। ইরান এখন চীনের নেতৃত্বাধীন ব্রিকস ও সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের সদস্য। এছাড়া চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে ইরান একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র— বিশেষত গোয়েদার বন্দর ও হরমুজ প্রণালীর কাছে অবস্থানের কারণে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ব নেতৃত্ব নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠছে, তখন বেইজিং ও মস্কোর এই কৌশল তাদের জন্য কূটনৈতিকভাবে এক প্রতীকী জয় এনে দিতে পারে— বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথ বা উন্নয়নশীল বিশ্বের চোখে।
 

পাঠকের মতামত

টুকরো টুকরো করে বাঁচো না, শান্তিতে বাঁচো

Nadim Ahammed
২২ জুন ২০২৫, রবিবার, ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন

অর্ধ কইল মর্দ বোঝে - দেখা যাক যে মর্দ কী না

জনতার আদালত
২১ জুন ২০২৫, শনিবার, ১:০৫ অপরাহ্ন

চীন এবং রাশিয়া, দয়া করে ইরানকে অবিলম্বে সাহায্য করুন। Please establish your power to the world.

Nadim Ahammed
২১ জুন ২০২৫, শনিবার, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

রাশিয়ার নিরাপত্তা কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান/ একাধিক দেশ ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র দিতে প্রস্তুত

নেতানিয়াহুর ভূয়সী প্রশংসা করলেন ট্রাম্প/ ইরানের ৩ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ইসরাইলের, প্রত্যাখ্যান তেহরানের/ ইরানে তীব্র হামলা চালানোর নির্দেশ

১০

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাবে ইরান/ সকল বিকল্প উন্মুক্ত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status