বিশ্বজমিন
মৃত্যু যেখানে মধুর
একটি ফোনেই যুদ্ধ থামাতে পারে
মানবজমিন ডেস্ক
(১ সপ্তাহ আগে) ২১ জুন ২০২৫, শনিবার, ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:৪৬ অপরাহ্ন

ইরানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা মজিদ ফারাহানি শুক্রবার সিএনএন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চাইলে এই যুদ্ধ আজই শেষ হতে পারে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি ইসরাইলি নেতাদের একটিমাত্র ফোন করে বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে বলেন, তাহলে কূটনৈতিক আলোচনার পথ আবার খুলে যাবে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ইরান সবসময় বেসামরিক সংলাপের পক্ষে। সেটা সরাসরি হোক কিংবা পরোক্ষভাবে— পদ্ধতিটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু বোমা পড়তে থাকলে আলোচনার কোনো মানে হয় না। ফারাহানি আবারও নিশ্চিত করেন যে, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ পুরোপুরি বন্ধ করবে না। তবে কিছুটা কমানো যেতে পারে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বলেছি, থামাব না। কিন্তু হয়তো কমানো সম্ভব। এই মন্তব্য এমন এক সময় এসেছে, যখন ফ্রান্সসহ ইউরোপীয় শক্তিগুলোও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সঙ্গে একত্র হয়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ শূন্যে নামিয়ে আনার অবস্থান গ্রহণ করেছে।
ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ক্রিস্টোফ লেমোইন শুক্রবার সিএনএন-কে বলেন, আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্ট— শূন্য সমৃদ্ধিকরণ ছাড়া কোনো আলোচনায় আমরা যাব না। ওদিকে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ইরানকে আলোচনার জন্য দুই সপ্তাহের সময় দেওয়ার ঘোষণা এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে একমাত্র আশার আলো হিসেবে দেখা হচ্ছে, যদিও তা বাস্তবে কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। শুক্রবার জেনেভায় ইরান, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধানের মধ্যে সরাসরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়— যা চলমান যুদ্ধ শুরুর পর প্রথম সরাসরি কূটনৈতিক আলোচনা।
সাম্প্রতিক বক্তব্য ও নীতিগত অবস্থান বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরেই ইরানকে সামরিকভাবে আক্রমণ করা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ কেউ সরাসরি হামলার পক্ষে, আবার কেউ কূটনীতির সুযোগ রেখে চলেছে। ফারাহানি বলেন, যদি আমেরিকা সরাসরি যুদ্ধে জড়ায়, তবে আমাদের অনেক বিকল্প আছে এবং সব বিকল্পই হাতে আছে।
মৃত্যু আমাদের জন্য মধুর
শুক্রবার তেহরানে বিপুল সংখ্যক মানুষ রাজপথে নেমে আসে। সরকারি সমর্থনে আয়োজিত এই বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মানুষজন ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। সিএনএনের প্রতিনিধি জানান, লোকজন ইরান, ফিলিস্তিন ও হিজবুল্লাহর পতাকা নেড়ে এবং আমেরিকা ও ইসরাইলের পতাকা পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানায়। বিক্ষোভে বারবার ধ্বনিত হয় ‘ইসরাইল নিপাত যাক, আমেরিকা নিপাত যাক’। এক বিক্ষোভকারি সিএনএনকে বলেন, ‘ট্রাম্প, তুমি আমার নেতাকে হুমকি দিচ্ছ? তুমি কি জানো না যে আমার জাতি বিশ্বাস করে, মৃত্যুও আমাদের কাছে মধুর!’