বিশ্বজমিন
ফোনালাপ ফাঁস
ক্ষমা চাইলেন থাই প্রধানমন্ত্রী
মানবজমিন ডেস্ক
(৬ ঘন্টা আগে) ২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ১২:৫৭ অপরাহ্ন

একটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়াকে কেন্দ্র করে জনরোষের মুখে ক্ষমা চেয়েছেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়তুনতার্ন শিনাওয়াত্রা। এতে তার সরকার চরম সঙ্কটে পড়েছে। এমনকি সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির আশঙ্কাও তৈরি করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গার্ডিয়ান ও বার্তা সংস্থা এএফপি। এতে বলা হয়, ফাঁস হওয়া ফোনে তিনি কম্বোডিয়ার সাবেক নেতা হুন সেনের সঙ্গে কথা বলছিলেন। হুন সেন তাদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত। হুন সেনের সঙ্গে তাকে সীমান্ত নিয়ে বিরোধের বিষয়ে অকথা বলতে শোনা যায়। এতে থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনীর একজন সিনিয়র কমান্ডারের সমালোচনা করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তিনি ওই কর্মকর্তাকে তিনি বিরোধী মতের বলে উল্লেখ করেন। হুন সেন’কে আঙ্কেল আখ্যায়িত করে পায়তুনতার্ন শিনাওয়াত্রা বলেন, তিনি যদি আমাকে কিছু জানাতেন তাহলে সে বিষয়ে আমি ব্যবস্থা নিতাম। এসব নিয়ে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে পায়তুনতার্ন বলেন— কম্বোডিয়ার এক নেতার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস হয়ে যাওয়ায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে— আমি এর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
হুন সেন ৪ দশক কম্বোডিয়া শাসন করার পর ২০২৩ সালে তার ছেলে হুন মানেট প্রধানমন্ত্রী হন, তবে তিনি এখনও রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত প্রভাবশালী। ফাঁস হওয়া ফোনালাপে পায়তুনতার্নের ব্যাখ্যা ছিল, এটি ছিল একটি আলোচনামূলক কৌশল। কিন্তু তার এ ব্যাখ্যায় জনরোষ প্রশমিত হয়নি। থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করে প্রতিবাদপত্র দিয়েছে, যদিও পুরো অডিওটি প্রকাশ করেন হুন সেন নিজেই— প্রথমে ছোট একটি ক্লিপ ফাঁস হওয়ার পর।
এই ফোনালাপ সরকারের ভেতরে ভাঙনের সূচনা করেছে। জোট সরকারের অন্যতম বড় দল সংরক্ষণশীল ভুমজাইতাই পার্টি ইতিমধ্যে সরকার থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। ফলে পায়তুনতার্নের জোট পার্লামেন্টে ন্যূনতম সংখ্যাগরিষ্ঠতায় নেমে এসেছে। চাটথাইপট্টানা, ইউনাইটেড থাই নেশন ও ডেমোক্র্যাট পার্টির নেতারা জরুরি বৈঠকে বসেছেন। তবে সরকার ছাড়েননি। তবে যদি আরও একটি দল সরে যায়, তাহলে হয়তো নির্বাচনের প্রয়োজন হবে বা নতুন জোট গঠনের চেষ্টা শুরু হতে পারে। বিরোধীদল পিপল’স পার্টির নেতা নাট্তাফং রুয়েংপন্যাওয়ুত আহ্বান জানিয়েছেন, পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার জন্য— যাতে কেউ পরিস্থিতিকে উসকে দিয়ে গণতন্ত্রকে বিপন্ন করতে না পারে।
তিনি সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কাও ব্যক্ত করেছেন। থাইল্যান্ড ১৯৩২ সালে রাজতন্ত্রের অবসানের পর ডজনখানেক অভ্যুত্থানের শিকার হয়েছে। গত দুই দশকজুড়ে দেশের রাজনীতি শিনাওয়াত্রা পরিবার ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে ঘূর্ণায়মান। পায়তুনতার্নের বাবা থাকসিন শিনাওয়াত্রা ২০০৬ সালে অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন এবং তার ফুফু ইংলাক শিনাওয়াত্রা ২০১৪ সালে আদালতের রায় ও সামরিক হস্তক্ষেপে পদচ্যুত হন। বৃহস্পতিবার সরকারবিরোধী শত শত মানুষ, যাদের মধ্যে অনেকে পুরনো ‘ইয়েলো শার্ট’ রাজতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মী, প্রধানমন্ত্রী অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন পায়তুনতার্নের পদত্যাগ দাবি করে।