বাংলারজমিন
ঝিনাইদহে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ১৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে পলাতক শিক্ষক
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
২০ জুন ২০২৫, শুক্রবারঝিনাইদহের মহেশপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের ছবি ভোটার আইডি ও স্বাক্ষর জাল করে গ্যারান্টার বানিয়ে ১৫ লাখ টাকার ঋণ নিয়ে পালিয়ে গেছেন কামরুজ্জামান সাচ্চু নামে এক ফ্যাসিস্ট শিক্ষক। অভিযোগ উঠেছে- তিনি ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল আজম খান চঞ্চলের শ্যালক হওয়ায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এই মাহাজালিয়াতি করতে সক্ষম হন। ৫ই আগস্টের পর চাকরি ছেড়ে শিক্ষক কামরুজ্জামান সাচ্চু পালিয়ে গেছেন। এদিকে গ্যারান্টার হওয়ায় পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের আরিফুল ইসলাম ও নাসরিন আক্তার নামে দুই স্কুল শিক্ষকের তিন মাস ধরে বেতন বন্ধ রেখেছে ব্যাংক ম্যানেজার। বেতন না পেয়ে ওই দুই শিক্ষক এখন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
শিক্ষক আরিফুল ইসলাম জানান, পলাতক কামরুজ্জামান ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল আজম খান চঞ্চলের শ্যালক হওয়ার কারণে তিনি আওয়ামী সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরে স্কুলে না গিয়েই বেতন ভাতা তুলতেন। তার বিরুদ্ধে এলাকায় দখলবাজি ও বেপরোয়া চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
তিনি আরও জানান, ২০২২ সালে কামরুজ্জামান খালিশপুর রূপালী ব্যাংক শাখা থেকে তাদের ছবি, ভোটার আইডি ও স্বাক্ষর জাল করে গ্যারান্টার বানিয়ে ১৫ লাখ টাকার (কনজ্যুমার) ঋণ নেন। ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে তিনি পালিয়ে যান এবং ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন।
শিক্ষক নাসরিন আক্তার জানান, কামরুজ্জামান ব্যাংক ঋণ নিতে তাদের স্বাক্ষর জাল করে ও ছবি আর জাতীয় পরিচয়পত্র চুরি করে ব্যাংক ঋণের কাগজপত্রে সংযুক্ত করেন। অথচ ওই শিক্ষকের ব্যাংক ঋণের কাগজপত্রে তারা স্বাক্ষর করেননি। সাচ্চু রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা ও এক কর্মচারীর সহযোগিতায় স্বাক্ষর জাল করেছেন। ওই স্বাক্ষরের সঙ্গে তাদের স্বাক্ষরের কোনো মিল নেই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রঞ্জন কুমার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, তিনি ঢাকায় বিশেষ কাজে এসেছেন। তবে ঘটনা সত্য। শিক্ষক আরিফুল ইসলাম ও নাসরিন আক্তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
রূপালী ব্যাংক খালিশপুর শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ তুহিন আলী বৃহস্পতিবার বিকালে জানান, ঋণ গ্রহীতা শিক্ষক কামরুজ্জামান চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন কিন্তু ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করেননি। আইন মোতাবেক গ্যারান্টাররা এখন ঋণের টাকা পরিশোধ করবেন। যে কারণে তাদের বেতন আটকে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ওই দুই শিক্ষক এসেছিলেন। তাদের দাবি তারা শিক্ষক কামরুজ্জামানের ঋণপত্রে স্বাক্ষর করেননি। আমি বলেছি- আপনারা ঊর্র্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। যদি প্রমাণিত হয় স্বাক্ষর জাল, তাহলে আপনারা রিলিজ পেয়ে যাবেন।