বিশ্বজমিন
দেশে ফেরার আর্তনাদ ইসরাইলে আটকে পড়া বৃটিশ নাগরিকদের
মানবজমিন ডেস্ক
(১ সপ্তাহ আগে) ১৮ জুন ২০২৫, বুধবার, ৫:০৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৬ পূর্বাহ্ন

ষষ্ঠ দিনে পদার্পণ করেছে ইরান-ইসরাইল সংঘাত। অব্যাহত আছে হামলা, পাল্টা হামলা। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ইসরাইলের আকাশসীমা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে সকল ফ্লাইট। এতে সেখানে আটকা পড়েছেন কয়েক হাজার বৃটেনের নাগরিক। কবে দেশে ফিরতে পারবেন এ নিয়ে তাদের মনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নিজেদের দেশে ফেরার আর্তি জানিয়েছেন তারা। বিবিসির সঙ্গে কথা বলার সময় বিগত কয়েকদিনে ইসরাইলে তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন এমন কয়েকজন। সাইরেনের শব্দ শুনে নির্ঘুম রাত পার করা, ক্রমাগত আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। আটকে পড়া অনেকে তাদেরকে উদ্ধারে বৃটেনের সরকারকে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এমন একজন ভুক্তভোগী হলেন ডেবোরাহ ক্লেডন (৪১)। কাজিনের বিয়ে উপলক্ষে তিন দিনের সফরে ইসরাইলে পাড়ি জমান তিনি।
ক্লেডন পেশায় একজন স্কুল শিক্ষিকা। সংঘাতের কারণে ৮১ বছর বয়সী বৃদ্ধ মা’কে নিয়ে ইসরাইলে আটকা পড়েছেন। বলেছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করার পর আমরা সাইরেনের আওয়াজ শুনতে পাই। এর পর পরই আমাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে বলা হয়। আরও বলেছেন, প্রায় প্রতি রাতের সাইরেনের শব্দে তার ঘুম ভেঙ্গে যায় এবং তাৎক্ষণিক আশ্রয়কেন্দ্রের উদ্দেশে ছুটে যেতে হয়েছে। বলেছেন, যদিও তিনি যে হোটেলে আছেন সেখানে আশ্রয় নেয়ার ব্যবস্থা থাকলেও বেশিরভাগ মানুষই আতঙ্কিত। ক্লেডন বলেছেন, আমি ইতিবাচক মনোভাব রাখার চিন্তা করছি কারণ আমার সঙ্গে আমার মা আছেন। তবে আমি আর এখানে থাকতে চাইনা। রাতে একাধিকবার সাইরেনের শব্দ শুনে আশ্রয়কেন্দ্রের উদ্দেশে দৌঁড়াতে চাইনা। আমি আমার দেশে ফিরতে চাই। আমার বাচ্চাদের কাছে।
শুক্রবার থেকে ইরানের হামলায় ইসরাইলে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২৪ জন নিহত হয়েছেন। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলায় দেশটিতে নিহত কমপক্ষে ২০০ জন। শুক্রবার তেল আবিবের মূল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তা চালু করা হবে না। এতে সেখানে আটকা পড়েছেন ৪০ হাজার পর্যটক। কিছু মানুষ স্থলপথে ইসরাইলের সীমানা ত্যাগ করে প্রতিবেশী দেশ জর্ডান ও মিশর থেকে ফ্লাইটে করে নিজেদের গন্তব্যে যাওয়ার কথা ভাবছেন। গত মঙ্গলবার ইসরাইলের জাফফাতে নিজের পিতাকে দেখতে যান হান্নাহ লায়নস নামের এক গায়িকা। যিনি সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা পরই যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। বলেছেন, এ ঘটনা তার বৃদ্ধ পিতা-মাতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। হান্নাহ বলেছেন, তিনি তার দেশে ফিরতে চান এবং বাচ্চাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন। লন্ডনের বাসিন্দা হওয়ার্ড ইয়ঙ্গরহুড (৭৯)। এ মাসের শুরুতে নাতনির সঙ্গে দেখা করতে তিনি ইসরাইলে যান। তিনি বলেছেন,আমরা ক্লান্ত। আমাদের মতো বৃদ্ধদের আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছাতে অনেক সময় ব্যয় করতে হয়। এদিকে ২২ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে ইসরাইলে আটকা পড়েছেন ্অ্যাঙ্গাস এডি (৫২)। বলেছেন, এখানকার পরিস্থিতি ভয়াবহ। এসময় তিনি বৃটিশ সরকারের বিরুদ্ধে তাদের উদ্ধারে যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযোগ আনেন।