ঢাকা, ১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

বিশ্বজমিন

হানিমুনে স্বামী হত্যা, সন্দেহ স্ত্রী সোনমকে, ভারতজুড়ে তোলপাড়

মানবজমিন ডেস্ক

(১ সপ্তাহ আগে) ১০ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯:৫০ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:৩৯ অপরাহ্ন

mzamin

মাত্র ক’দিন আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন সোনম ও রাজা রঘুবংশী। কিন্তু মধুচন্দ্রিমার মাঝেই ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। রাজা মারা গেলেন, আর স্ত্রী সোনম পরিণত হলেন প্রধান সন্দেহভাজনে। ঘটনা সামনে আসতেই ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আলোড়ন। অভিযোগ উঠেছে রাজা রঘুবংশীকে খুনের সঙ্গে জড়িত সোনম। সোনমের দাবি, তিনি ভিকটিমে পরিণত হয়েছেন। এই রহস্যের কিনারা করার চেষ্টা করছে স্থানীয় পুলিশ। তাদের সন্দেহ সোনম ও রাজ নামে এক যুবককে নিয়ে। তারা মনে করছে, রাজের সঙ্গে সোনমের আগে থেকেই প্রেম ছিল। সেই প্রেমের কারণেই তারা পরিকল্পনা করে হত্যা করেছে রাজা রঘুবংশীকে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।

১১ মে বিয়ে করেন সোনম ও রাজা। ২০ মে তারা মধুচন্দ্রিমার উদ্দেশে মেঘালয়ের শিলং শহরে পৌঁছান। পরদিনই তারা নিখোঁজ হন। ২৩শে মে থেকে শুরু হয় তাদের খোঁজ। অবশেষে ২রা জুন রাজা রঘুবংশীর মৃতদেহ উদ্ধার হয় একটি গভীর গিরিখাতে, যা পুরো তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। নিখোঁজ থাকার এক সপ্তাহ পর সোনম নিজেই হাজির হন উত্তরপ্রদেশের গাজীপুরে। তিনি দাবি করেন, আমাকে মাদক খাইয়ে জোর করে গাজীপুরে আনা হয়েছে। উত্তর প্রদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আইন ও শৃঙ্খলা) অমিতাভ ইয়াশ এনডিটিভি’কে জানান, সোনম নিজেকে পুলিশ ও পরিবারে সামনে ‘ভিকটিম’ হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছেন। তিনি ওইদিন ভোর ৩টায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান যে, তিনি গাজীপুর-বারাণসী সড়কের একটি স্থানে রয়েছেন। পরিবার তাৎক্ষণিকভাবে মধ্যপ্রদেশ পুলিশকে জানায়। তারা স্থানীয় গাজীপুর পুলিশকে খবর দেয়। এরপর সোনমকে গ্রেফতার করে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় এবং পরে একটি ‘ওয়ান স্টপ সেন্টারে’ রাখা হয় তাকে।

মেঘালয় পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, সোনমের একটি বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল রাজ কুশওয়াহ নামের এক যুবকের সঙ্গে। রাজ ছিলেন সোনমের কর্মচারী। তাদের কথোপকথনের পরিমাণ ছিল সন্দেহজনকভাবে বেশি। মেঘালয় পুলিশ জানিয়েছে, প্রেমিকের সঙ্গে মিলে রাজাকে খুন করার ছক কষেছিলেন সোনম। তদন্তকারীদের মতে, চাপে পড়ে ৮ই জুন সোনম আত্মসমর্পণ করেন। অমিতাভ ইয়াশ বলেন, সোনম খুব খারাপ পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন নিজেকে ভিকটিম সাজিয়ে পালাতে পারবেন। কিন্তু তদন্তে সেই কৌশল ব্যর্থ হয়েছে। মেঘালয় পুলিশ অসাধারণ কাজ করেছে। প্রয়োজনে আমরা সাহায্য করব।

মেঘালয় পুলিশ জানায়, দেহ লুকানোর উদ্দেশ্যে পাহাড়ি এলাকার এক দুর্গম গিরিখাতে মৃতদেহ ফেলা হয়েছিল, যাতে খোঁজ পাওয়া কঠিন হয়। কিন্তু প্রযুক্তি, সিসিটিভি ফুটেজ এবং টেলিকম ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অবশেষে পুলিশ সোনম ও রাজের গতিবিধি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। রাজা রঘুবংশীর ভাই বিপুল রঘুবংশী জানান, আমি রাজ কুশওয়ার নাম শুনেছি। কিন্তু তাকে কখনও দেখিনি। যদি রাজ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাহলে সোনমের ভূমিকা থেকেও সন্দেহ দূর করা যায় না। বর্তমানে সোনম ও রাজ দু’জনকেই গ্রেফতার করে মেঘালয় পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে। পুলিশ সুপার বিবেক সিয়েম জানিয়েছেন, সোনম ও রাজের বিরুদ্ধে আমাদের হাতে শক্ত প্রমাণ রয়েছে। আমরা সমস্ত আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি। এই ঘটনা শুধু একটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, বরং প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা, এবং অপরিকল্পিত অপরাধের এক চাঞ্চল্যকর উদাহরণ হয়ে উঠেছে- যেখানে মধুচন্দ্রিমার গল্প রূপ নিয়েছে খুনে।

 

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

ইরানের আকাশসীমা দখলের দাবি ইসরাইলের/ ‘আকাশে যুদ্ধবিমান দেখা যাবে, তেহরান জ্বলবে’

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status