বিশ্বজমিন
ইসরাইলের উন্মত্ততা চলছেই
মানবজমিন ডেস্ক
(১ সপ্তাহ আগে) ৯ জুন ২০২৫, সোমবার, ১০:৪৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:২৭ অপরাহ্ন

গাজা উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইসরাইলি বাহিনীর হাতে ‘ম্যাডলিন’ নামের ত্রাণবাহী জাহাজ দখলে নেয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে গভীর উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। জলদস্যুদের মতো আচরণ করে ইসরাইলি কমান্ডোরা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের এই জাহাজটি দখল করে। এতে থাকা ১২ জন কর্মীকে আটক করে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে সুইডেনের জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থানবার্গও রয়েছেন।
জাহাজটি গত ১লা জুন সিসিলি থেকে রওনা হয় এবং গাজা থেকে মাত্র ১০০ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল। এতে থাকা ত্রাণসামগ্রী যুদ্ধবিধ্বস্ত এবং অভুক্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু সেখানে ২০০৭ সাল থেকে ইসরাইল স্থল, নৌ ও আকাশপথে অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। যদিও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুটা অবরোধ শিথিল করা হয়, তবে বাস্তব চিত্র এখনও শোচনীয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় ৫৪,৯২৭ জন মানুষ নিহত হয়েছেন বলে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোকেও নিরাপদ রাখা যাচ্ছে না।
দেইর আল-বালাহ থেকে সাংবাদিক হিন্দ খুদারি জানিয়েছেন, খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়ানো মানুষদের ওপর ইসরাইলি সেনারা গুলি চালাচ্ছে। আজকেও রাফাহ ও মধ্য গাজায় গুলিতে ১৪ জন নিহত হয়েছেন। এর অনেকেই শিশু ও নারী। অধিকাংশের শরীরে বুকে, গলায় ও মাথায় গুলি লেগেছে। খান ইউনিসে বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন আরও ১৩ জন, যার মধ্যে শিশুরাও রয়েছে। এক নারীকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো হয়, আরেক শিশুকে গুলি করে হত্যা করা হয় শিল্প এলাকার কাছে। এরই মধ্যে পশ্চিম তীরের তুলকারেম শরণার্থী শিবির এবং আশপাশের গ্রামগুলোতেও ইসরাইলি অভিযান চলছে। বাড়িঘর ধ্বংস, স্থানীয়দের আটকের মাধ্যমে সেখানে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়েছে। আলার, সাইদা এবং রামিন শহরে কয়েকজন যুবককে আটকের খবর দিয়েছে ওয়াফা সংবাদ সংস্থা। অনেক দোকানেও তল্লাশি চালানো হয়েছে।
লেবাননে দক্ষিণাঞ্চলের আল-নুমাইরিয়া শহরের কাছে ইসরাইলি ড্রোন হামলায় একটি গাড়ি বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে যায়। যদিও নভেম্বর মাসে হেজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি হয়েছিল, বাস্তবে ইসরাইল নিয়মিত বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়া স্টেনারগার্ড বলেন, গত ১০ বছর ধরে সুইডেন সরকার গাজায় ভ্রমণে বিরত থাকতে নাগরিকদের পরামর্শ দিয়ে আসছে। তাই যারা সেখানে যায় তারা কিছুটা দায়িত্ব নিজের কাঁধেও নেয়।
এদিকে, বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো ‘ম্যাডলিন’ জাহাজ দখলের ঘটনাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করছে। ফ্লোটিলা কোয়ালিশন দাবি করেছে, তাদের জাহাজ ছিল স্পষ্টভাবে মানবিক সহায়তা। আন্তর্জাতিক জলসীমায় কোনোভাবেই এমন দখল বৈধ হতে পারে না। ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশা ও ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জনমত আরও প্রবল হচ্ছে। তবে এখন দেখার বিষয়, আন্তর্জাতিক সমাজ কেবল বিবৃতি দিয়েই সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি কার্যকর কূটনৈতিক পদক্ষেপে এগিয়ে আসবে।
পাঠকের মতামত
আন্তর্জাতিক আইন এশিয়া আফ্রিকার গরীব দেশের জন্য। ইসরাইল ও পশ্চিমাদের জন্য না।
আন্তর্জাতিক সমাজ কেবল বিবৃতি দিয়েই সীমাবদ্ধ থাকবে
“ইসরাইলের উন্মত্ততা চলছেই” সেই সাথে চলছে মুসলিম বিশ্বের অমানবিক নির্লিপ্ততা। মুসলিম-বিশ্ব যেন পণ করেছে যে প্রভুদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ওরা কিছুই বলবে না , কিছুই করবেনা। shame on you Muslim world.
আন্তর্জাতিক বিশ্ব বসে বসে আগুল চোষছে ।
ইসরাইল কেবল মুসলিমদের শত্রু নয় বরং মানবতার শত্রু। এদের বিরুদ্ধে সারাবিশ্বের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম প্রয়োজন। প্রতিটি মানুষের ইসরাইলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা একান্ত জরুরি।