বিশ্বজমিন
নিউটন দাসের নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্ক
মানবজমিন ডেস্ক
(১ সপ্তাহ আগে) ৯ জুন ২০২৫, সোমবার, ৮:০৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ২:৪৮ অপরাহ্ন

পশ্চিমবঙ্গে এক তরুণের পরিচয় ঘিরে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তার নাম নিউটন দাস (৩২)। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের একজন পরিচিত কর্মী। কিন্তু তাকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় গত বছর জুলাই বিক্ষোভে অংশ নিতে দেখা গেছে বলে খবর দিয়েছে অনলাইন টেলিগ্রাফ। একইসঙ্গে তিনি ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের একজন নথিভুক্ত ভোটারও। ফলে তার নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় বিজেপি নেতারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া তার ছবির মাধ্যমে নিউটনকে শনাক্ত করেন। এরপর নিউটনের বড় ভাই তপন দাস স্বীকার করেন, নিউটন প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের নাগরিক এবং সেখানে ভোটার হিসেবেও তালিকাভুক্ত। তপন জানান, নিউটন কৈশোরে বাংলাদেশ থেকে কাকদ্বীপে চলে আসেন এবং নামখানা এলাকায় বিদ্যালয় জীবন সম্পন্ন করেন। ওই সময় থেকেই তার তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ। তপনের মতে, তাদের পিতা-মাতা কেউই ভারতের ভোটার নন। তবে এ নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। নিউটনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত দলটির যুব শাখার নেতা দেবাশীষ দাস বলেন, নিউটন আমার সহপাঠী ছিল। বহু বছর যোগাযোগ ছিল না। ২০২১ সালে আবার দেখা হয়। পরিচিত বলেই জন্মদিনে আমন্ত্রণ পেয়ে গিয়েছিলাম। নিউটনের পরিচিতি মূলত তৈরি হয় বাংলাদেশে কোটা বিরোধী আন্দোলনে তার অংশগ্রহণের কারণে। তবে সম্প্রতি একটি ভিডিওতে নিউটন দাবি করেন, বাংলাদেশে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার যে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, তা ভুয়া। তিনি বলেন, আমি ২০১৪ সাল থেকে কাকদ্বীপের ভোটার। আধার কার্ড আছে। ২০১৬ সালে তৃণমূল প্রার্থী মন্টুরাম পাখিরাকে ভোট দিয়েছিলাম। ২০১৭ সালে ভোটার কার্ড হারাই, ২০১৮ সালে স্থানীয় বিধায়কের সহায়তায় নতুন কার্ড পাই। নিউটনের আরও দাবি, ২০২৪ সালে পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হিসেবে আমি বাংলাদেশে যাই। সেখানেই অনিচ্ছাকৃতভাবে জুলাই বিপ্লবে জড়িয়ে পড়ি। এদিকে বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, নিউটন শুধু একমাত্র ব্যক্তি নন— বহু বাংলাদেশি ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ভারতের ভোটার তালিকায় ঢুকে পড়েছেন। শুভেন্দু অধিকারী নির্বাচন কমিশনের কাছে এমন অনিয়মের ব্যাপারে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নির্বাচন দপ্তরের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। এক কর্মকর্তা জানান, এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ দাখিল হয়নি। তবে গোটা ঘটনা ঘিরে এলাকায় এবং রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে। ভোটার তালিকায় অনুপ্রবেশকারীদের নাম অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা এবং দলীয় স্বার্থে ত্যাগকৃত নৈতিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।