ঢাকা, ২২ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ সরাসরি সমপ্রচারে লাগবে আদালতের অনুমতি

স্টাফ রিপোর্টার
২১ মে ২০২৫, বুধবার

 জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষ ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করা হয়েছে। এখন থেকে আদালতের অনুমতি নিয়ে বিচারের যে কোনো পর্ব গণমাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রচার করা যাবে।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানান।
তাজুল ইসলাম লিখেছেন, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য কোর্টরুম ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করা হয়েছে। ট্রায়ালের যে কোনো পর্ব আদালতের অনুমতিক্রমে সরাসরি কিংবা রেকর্ডকৃত পদ্ধতিতে গণমাধ্যমে কিংবা সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত হতে পারবে।
এদিকে তাজুল ইসলামের পোস্ট শেয়ার করে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল লিখেছেন, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য কোর্টরুমে ডিজিটাল প্রযুক্তি সমৃদ্ধ করা হয়েছে বলে চিফ প্রসিকিউটর জনাব তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন। ট্রায়ালের যেকোনো পর্ব আদালতের অনুমতিক্রমে সরাসরি কিংবা রেকর্ডকৃত পদ্ধতিতে গণমাধ্যমে কিংবা সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত হতে পারবে।
তিনি এ ব্যাপারে অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, পুরো বিচার প্রক্রিয়াটি সরাসরি সমপ্রচার করা উচিত। এতে বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে। বিচার নিয়ে অপপ্রচার বন্ধ হবে। বিচারকের অনুমতিক্রমে সমপ্রচার করার বিধান করা হলে, বিচারকরা বিতর্কিত হতে পারেন। কোন অংশটুকু সমপ্রচারযোগ্য তা নির্ধারণ নিয়ে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া এত বড় একটা বিচার তো স্বচক্ষে দেখার অধিকার সাধারণ মানুষের আছে।
একই সঙ্গে বাংলাদেশের সব আদালতের বিচারকাজ সরাসরি সমপ্রচার করা উচিত। এতে বিচার বিভাগের দুর্নীতি কমে যাবে। টাউট উচ্ছেদ হবে। আইনজীবীদের দক্ষতাও বৃদ্ধি পাবে। আইন পেশার প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা বাড়বে।
এদিকে, সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা জনগুরুত্বপূর্ণ ও সাংবিধানিক মামলাগুলোর শুনানি সরাসরি সমপ্রচার করার নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আদালত আগামী ২৬শে জুন পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
গতকাল এ সংক্রান্ত রিটের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তাজরুল হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন, আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন।
রিটে সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলো শুনানি কেন সরাসরি সমপ্রচার করা হবে না এই মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে একটি নীতিমালা প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আইসিটি মন্ত্রণালয়ের কাছে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে যেন আপিল বিভাগে চলমান গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি করার ক্ষেত্রে লজিস্টিক সহযোগিতা দেয়া হয়।
শুনানি শেষে আইনজীবী শিশির মনির সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তথ্য জানার অধিকার আইন দ্বারা স্বীকৃত। স্বচ্ছ বিচার পাওয়া সংবিধান স্বীকৃত অধিকার। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ মামলাসমূহ লাইভ স্ট্রিমিং করা হয়। আমাদের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৫ অনুযায়ী স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক বিচার একটি মৌলিক অধিকার। তাই সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ মামলার লাইভ স্ট্রিমিং চেয়ে রিটটি করা হয়।
উল্লেখ্য, আইনজীবী ও আইনের ছাত্রসহ ১০ জন এই রিটটি দায়ের করেন। রিটকারীরা হলেন- সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন, আব্দুল্লাহ সাদিক, মিজানুল হক, ঢাকা কোর্টের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ, শিক্ষানবিশ আইনজীবী মাহমুদুল হাসান, সাব্বির আহমদ এবং ৪ জন আইনের ছাত্র।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status