শেষের পাতা
রিমান্ডের আসামি ভিআইপি কেবিনে
মরিয়ম চম্পা
১৪ আগস্ট ২০২২, রবিবার
ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় হওয়া মামলার অন্যতম আসামি হাসপাতালের মালিক চিকিৎসক উসমানীর রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর হলেও বর্তমানে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) ভিআইপি কেবিনে ভর্তি রাখার অভিযোগ উঠেছে। ঢামেক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কামরাঙ্গীর চরে এসপিএ রিভারসাইড মেডিকেল সেন্টারে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক হাসান মিসবাহ ও ভিডিও জার্নালিস্ট সাজু মিয়াকে স্থানীয় পুলিশের উপ-পরিদর্শকসহ হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা মারধর করে। এ ঘটনায় হওয়া হত্যাচেষ্টা মামলায় হাসপাতালের মালিক এম এইচ উসমানীসহ ৪ জনকে ৩ দিনের রিমাণ্ডে পাঠানো হয়। গত শুক্রবার রিমাণ্ডের দ্বিতীয় দিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চিকিৎসক ও হাসপাতাল মালিক উসমানী রিমাণ্ডে না থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভাবনের মেডিসিন ওয়ার্ডের ১০ম তলার ১০৬ নম্বর ভিআইপি ক্যাবিনে ভর্তি ছিলেন। এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের রোগী ভর্তি শাখায় খোঁজ নিলে বলা হয় তিনি ঢাকা মেডিকেলের নতুন ভবনের ৬০১ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন। সেখানে গিয়ে খোঁজ করলে কর্তব্যরত নার্স তার সন্ধান দিতে পারেননি।
পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি রিমাণ্ডের আসামি হয়েও শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত ১০ তলার ভিআইপি ১০৬ নম্বর কেবিনে ছিলেন। সূত্র জানায়, শুক্রবার আসামি উসমানীর বুকে ব্যথার কারণে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে দাবি পুলিশের। রিমাণ্ডের আসামি হয়ে কীভাবে ভিআইপি কেবিনে? জানতে চাইলে ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, পরিস্থিতিটা এমন ছিল যে তখন আর অন্য কোনো ক্যাবিন খালি ছিল না। তখন উসমানীকে সেখানে থাকতে দেয়া হয়। যখন দেখা গেছে সেটা ভিআইপি ক্যাবিন তখন এক ঘণ্টার মধ্যে তাকে অন্য একটি সাধারণ ক্যাবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (৯ই আগস্ট) বিকালে কামরাঙ্গীরচরের এসপিএ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হাসান মিসবাহ ও ক্যামেরাপার্সন সাজু মিয়ার ওপর হামলা ও মারধর করা হয়। পরবর্তীতে কামরাঙ্গীরচর থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা হলে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চিকিৎসক উসমানীসহ মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানায় কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক মানবজমিনকে বলেন, সাধারণ ওয়ার্ডের রোগী উসমানী কীভাবে ভিআইপি কেবিনে ভর্তি হয়েছেন বিষয়টি জানতেন না তিনি। গত শুক্রবার ঘটনাটি জানার পরপরই অতিদ্রুত তাকে সেখান থেকে সরিয়ে সাধারণ ক্যাবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় একটি মেডিকেল টিম গঠন করেছে ঢামেক কর্তৃপক্ষ। আজ রোববার সকালে তারা এটা নিয়ে বসবেন। ইতিমধ্যে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার অনেকগুলো প্রতিবেদন চলে এসেছে। এগুলো নিয়ে আজ বোর্ড মেম্বারদের মতামত নিয়ে তার শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে দ্রুত হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।