শরীর ও মন
শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য
কোষ্ঠকাঠিন্য বলতে আমরা কি বুঝি?
(৬ ঘন্টা আগে) ১৫ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৭:০২ অপরাহ্ন
কোনো শিশু যদি সপ্তাহে তিনবারের কম শক্ত, শুষ্ক মলত্যাগ করে। মলত্যাগের সময় যদি অসুবিধা (স্ট্রেনিং) বা পেটব্যথা করে, মলের সঙ্গে যদি রক্ত দেখা যায়, শিশুর প্যান্টে যদি মলের দাগ লেগে থাকে তবে বুঝবেন তার কোষ্টকাঠিন্য হচ্ছে।
সপ্তাহে দুইবারও যদি কোনো শিশু কষ্ট ছাড়া নরম স্বাভাবিক মলত্যাগ করে তবে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য বলবো না।
শতকরা ১ থেকে ৩০ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।
জন্মের প্রথম ২-৩ বছর বেশি হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ:
৯০ থেকে ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রে কোনো কারণ ছাড়াই ফাংশনাল কারণে হয়ে থাকে, এর মধ্য অন্যতম কারণ হলো:
১. খাদ্য তালিকা: খাদ্য তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার না খাওয়ানো। ফাস্টফুড ও অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়ানো।
২. শিশুদের পর্যাপ্ত খেলাধুলা ও চলফেরা না করা, দিনের বেশির ভাগ সময় মোবাইল বা টিভি দেখা।
৩. সঠিক টয়লেট প্রশিক্ষণ না থাকা, বাথারুমে সময় না দেয়া বা বাথরুম চেপে রাখা, অস্বস্তি ও ব্যথার কারণে ভয়ে মল ধরে রাখা।
৪. কিছু ঔষধ সেবন (আয়রন ও ক্যালসিয়াম সপ্লিমেন্ট, এন্টিডিপ্রেসেন্টস)।
এ ছাড়াও কিছু রোগের কারণে শিশুর কোষ্টকাঠিন্য হতে পারে। যেমন, হাইপোথাইরয়েড, নিউরোলজিক্যাল ডিজিজ, Hirschpng disease, এনাল ফিশার।
কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে জটিলতা:
শক্ত মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত চাপের কারণে হেমরয়েড, এনাল ফিশার, রেকটাল প্রোলাপস, মল আটকে যাওয়া, অস্বস্তি, মূত্রনালীতে ইনফেকশন, প্রস্রাব আটকে যাওয়া, ফিস্টুলা বিভিন্ন ধরনের জটিলতা হতে পারে।
সমাধানের উপায়:
১. শিশুকে মানসিকভাবে সাহায্য করুন। খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনা যেমন:- বেল, কলা, আম ও তরলজাতীয় খাবার যেমন:- স্যুপ, লেবু পানি, লাচ্ছি ইত্যাদি খাওয়াবেন।
২. শিশুকে চলাফেরা ও খেলাধুলায় উৎসাহিত করুন।
৩. নিয়মিত টয়লেট ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলুন ও শিশুদের টয়লেট ব্যবহারের ভয় কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করুন।
৪. ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মল নরম করার ওষুধ ব্যবহার করবেন।
৫. স্কুলে পর্যাপ্ত ব্যবহারযোগ্য টয়লেটের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।
আসুন অভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা আপনার শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্যের আসল কারণ নির্ণয় করি ও সমাধানে সচেষ্ট হই।
লেখক: ডা. শামীমা ইয়াসমীন
সহযোগী অধ্যাপক (শিশু)
শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ, সিরাজগঞ্জ।
চেম্বার: আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর-৬
হট-লাইন: ১০৬৭২