ঢাকা, ১৫ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৬ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

গাজার শিশুর ভয়াবহ চিত্র

মানবজমিন ডেস্ক
১৫ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার
mzamin

গাজার যুদ্ধে ভয়াবহতা বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। যেখানে সেখানে মৃতদেহ। খণ্ড খণ্ড মৃতদেহ। মানুষ মারা যাচ্ছে। অনাহারে শিশুসহ অসংখ্য মানুষ। চিকিৎসা নেই। আহতরা আর্তনাদ করছেন। একটু খাবারের জন্য শিশুরা পথ চেয়ে আছে। চারদিকে এক মড়া আর্তনাদ। গাজার বর্তমান ভয়াবহ চিত্র এভাবেই তুলে ধরেছে অনলাইন বিবিসি। খান ইউনুসের ইউরোপিয়ান হাসপাতালে ভয়াবহ এক চিত্র তুলে ধরেন বিবিসি’র এক সাহসী ক্যামেরাম্যান। ইসরাইলি বিমান হামলায় বহু হতাহতের সঙ্গে তিনিও আহত হয়েছেন। শিশুর কান্না, মায়ের আর্তনাদ, ক্ষুধায় কাঁপতে থাকা শিশু- এইসব হৃদয়বিদারক দৃশ্য ক্যামেরায় তুলে ধরার কিছুক্ষণ পরেই বিস্ফোরণ ঘটে তার চারপাশে। এ হামলায় তিনি ভাগ্যক্রমে সামান্য আহত হয়েছেন। কিন্তু অসুস্থ শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া একজন পিতা ছিলেন ক্যামেরাম্যানের পাশে। তিনি আহত হন। শিশুদের সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন  সে মুহূর্তে ওই ক্যামেরাম্যান। সেই ভিডিও নেট জুড়ে আবেগের ঢেউ তুলেছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, হামাসের এক কমান্ডার ওই হাসপাতালে অবস্থান করছিলেন। তারা একে ‘সুনির্দিষ্ট হামলা’ বলে উল্লেখ করেছে। অভিযোগ করেছে, হামাস নিষ্ঠুরভাবে বেসামরিক জনগণকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। যদিও হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

 হামলার সময় সেখানে ছিল দুই ধরনের পরিবার: যারা তাদের অসুস্থ সন্তানদের গাজা থেকে বাইরে নেয়ার অপেক্ষায় ছিলেন এবং যারা চিকিৎসা শেষে ফিরিয়ে আনা শিশুদের নিতে এসেছিলেন। শিশুকন্যা সিওয়ার: এক ক্ষুধার্ত জীবনের প্রতিচ্ছবি- এই ঘটনার কিছুক্ষণ আগেই বিবিসি ক্যামেরাম্যান একজন শিশুর গল্প ধারণ করছিলেন- তার নাম সিওয়ার আশুর। পাঁচ মাস বয়সী এই শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে। তার মা নাজওয়া জানিয়েছেন, সিওয়ার আমার প্রথম সন্তান। আমি চাই সে আবার আগের মতো হয়ে উঠুক, খেলুক, বাড়ুক, ওজন বাড়ুক। আমি হৃদয়ভাঙা। সিওয়ারের জন্য সাধারণ দুধও বিপজ্জনক- সে কেবল বিশেষ দুধের ফর্মুলা সহ্য করতে পারে। সম্প্রতি সে ত্বকের সংক্রমণে ভুগছে এবং তার অন্ত্রের জটিল সমস্যাও রয়েছে। তার দুর্বল কান্না যেন একটা অসহায় জীবনের আকুতি। জর্ডানিয়ান ফিল্ড হাসপাতাল থেকে কিছু বিশেষ দুধ পাওয়া গেছে- যদিও অল্প, তবে আরও পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। 

যারা গাজায় রয়ে গেছেন: গাজার ভেতরে আটকে থাকা অনেক শিশু ও পরিবার অপেক্ষা করছে সাহায্যের। অনেককে ইতিমধ্যে জর্ডান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু যারা রয়ে গেছে, তাদের অবস্থা আরও করুণ। বিবিসি’র দল দেখা করে এসেছে এক মা আসমা আল-নাশাশের সঙ্গে। তিনি বর্তমানে আম্মানে বসবাস করছেন, আর তার বাকি সন্তানরা গাজায় রয়েছেন দাদীর তত্ত্বাবধানে। ভিডিও কলে সেই শিশুরা মায়ের দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ে, চুমু দেয়। দাদী নাজওয়া জানান, চারপাশে শুধু বোমা। আকাশে রকেট। খাবার নেই। ময়দা নেই। দাম আকাশচুম্বী। আসমা আবেগে বাকরুদ্ধ হয়ে বলেন, আমি কেবল চাই ওরা ভালো থাকুক। আমি যেন ফিরে গিয়ে ওদের সুস্থ দেখতে পাই। তারপর চুপ করে যান, চোখ থেকে অশ্রু ঝরে।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status