প্রথম পাতা
এনবিআর ভাগের অধ্যাদেশ, কলম বিরতির ডাক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
স্টাফ রিপোর্টার
১৪ মে ২০২৫, বুধবার
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব খাতকে দুটি পৃথক বিভাগে ভাগ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সোমবার রাতে ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদনের পর এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামী তিনদিন কলম বিরতির ঘোষণা দিয়েছেন এনবিআরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। গতকাল বিকালে আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবন প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। সেখানে অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি তুলে যুগ্ম কর কমিশনার সাধন কুমার কুণ্ডু বলেন, বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা এবং বৃহস্পতি ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত এনবিআরের অধীনস্থ সব দপ্তরের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করবে। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, বাজেট ও রপ্তানি- এই তিনটি কার্যক্রম চালু থাকবে। পরবর্তী কর্মসূচি আগামী ১৭ই মে বিকাল ৩টায় আমরা ঘোষণা করবো। তিনি আরও বলেন, পরামর্শক কমিটির যে প্রতিবেদন ছিল সেটি সামনে এনে, সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে অধ্যাদেশ জারি করা হোক, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না।
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, এ অধ্যাদেশটি হয়েছে বর্তমান সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে। এনবিআর সংস্কারের জন্য সরকার একটি পরামর্শক কমিটি করেছিল। সেই কমিটিতে দেশের যোগ্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু কমিটি যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটি কোনো গণমাধ্যমে আসেনি। আপনারা কিংবা আমরা কেউই জানতে পারিনি। অংশীজনদের সঙ্গে ভালো-মন্দ কোনো আলোচনা হয়নি। আমাদের মতামত উপেক্ষা করে অনেকটা গোপনীয়ভাবে এ অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। এরই প্রতিবাদে আমরা এখানে জড়ো হয়েছি। এ সময় কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার মোনালিসা শারমীন সুস্মিতা বলেন, যে অধ্যাদেশ জারি হয়েছে তাতে সর্বময় সার্ভিসের মতামতের প্রতিফলন ঘটেনি। গত সোমবার রাতে অধ্যাদেশ জারি হয়েছে। আমরা দেখতে পেরেছি, যে ফরম্যাটে অধ্যাদেশটি জারি হয়েছে, সেখানে কাস্টমস ও ট্যাক্স সার্ভিসের কর্মকর্তাদের চাওয়া বা ইচ্ছার প্রতিফলন হয়নি।
ওদিকে বিকাল সোয়া ৪টার দিকে এনবিআর ভবন প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তখন অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। এনবিআর চেয়ারম্যানকে দেখেই ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন কয়েকজন। পরে কালো জিপে করে কার্যালয় ছাড়েন চেয়ারম্যান।
অন্যদিকে নতুন এই অধ্যাদেশ জারির ফলে দীর্ঘদিনের রাজস্ব সংস্থা এনবিআরের অস্তিত্ব এখন আর নেই। রাজস্ব খাত এখন থেকে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’-এ দুই ভাগে পরিচালিত হবে। এতে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করছেন এনবিআরের আওতায় থাকা কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তারা। তাদের অভিযোগ, এ অধ্যাদেশের মাধ্যমে রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনার স্বাধীনতা নিশ্চিত না করে বরং এনবিআরের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব প্রশাসন ক্যাডারের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। অধ্যাদেশের খসড়া পর্যায় থেকেই কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তারা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু সরকার তাদের মতামত উপেক্ষা করেই প্রায় অপরিবর্তিত খসড়ার ভিত্তিতে চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারি করেছে। যেখানে শুধু রাজস্ব নীতি বিভাগের কার্যপরিধিতে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে।
পাঠকের মতামত
Ara meximumi Dakat.