শরীর ও মন
সুস্থ ত্বকের জন্য করণীয়
ডা. জেসমিন আক্তার লীনা
১২ মে ২০২৫, সোমবারপ্রতিটি মানুষই চায় লাবণ্যময়, সুস্থ ও মসৃণ ত্বক। আর ত্বককে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে হলে প্রয়োজন পরিপূর্ণ ও সঠিক যত্ন। ত্বক লাবণ্যময় ও সুস্থ রাখার কিছু পরামর্শ-
সূর্যালোক থেকে আগত অতি বেগুনি রশ্মি ‘এ’ এবং ‘বি’ ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। অতি বেগুনি রশ্মি ‘এ’ ত্বকে বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জি তৈরি করে এবং ‘বি’ ত্বক-ক্যান্সারের জন্য দায়ী। উভয় রশ্মিই ত্বকের মসৃণতা দানকারী ইলাস্টিক তন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে অল্প বয়সেই ত্বকে কুঁচকানো ভাব ও বলিরেখা তৈরি করে এবং মেছতা, তিল, কালো বা বাদামি ছোপ ছোপ দাগ ফেলে। সুতরাং সব বয়সের নারী-পুরুষকে নিম্নলিখিত পরামর্শগুলো মেনে চলা উচিত-
-সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সরাসরি সূর্যালোকের সংস্পর্শ পরিহার করে চলা।
-উন্নতমানের সানস্ক্রিন ব্যবহার করা।
-যেকোনো মানের সানস্ক্রিন সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা পর্যন্ত আপনার ত্বককে রক্ষা করতে পারবে।
-প্রখর রোদে চলার সময় অবশ্যই ছাতা, মাথায় বড় আকারের টুপি ব্যবহার করা উচিত।
-রোদে বের হলে ফুলহাতা মোটা সুতির জামা পরিধান করা।
-ধূমপান, জর্দা, তামাক, সাদাপাতা ত্বকের অন্যতম প্রধান শত্রু। মুখ গহ্বরের ক্যান্সার ছাড়াও এগুলো অল্প বয়সে বুড়িয়ে যেতে, বলিরেখা, ভাঁজ ও দাগ সৃষ্টি করতে ভূমিকা রাখে। তাই সব বয়সে সবার উচিত ধূমপান, তামাক, জর্দা পরিহার করা।
-ত্বককে লাবণ্যময়, সুস্থ, সুন্দর, মসৃণ রাখতে পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস খুবই জরুরি। বিভিন্ন ঋতুতে উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের দেশি ফলমূল ও শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সাধ্যমতো সবারই উচিত স্বল্পমূল্যে প্রাপ্ত দেশি ফলমূল ও শাকসবজি প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে আহার করা।
-মাছ এবং মাছের তেলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ত্বকবান্ধব ফ্যাটি এসিড, যা ত্বককে নানা ধরনের ক্ষতিকর প্রভাবমুক্ত রাখে এবং ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষায় সহায়তা করে। তাই মাংস অপেক্ষা দেশি প্রজাতির মাছ ত্বকের জন্য উপকারী। স্নিগ্ধতা ও লাবণ্যের জন্য ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করা অত্যাবশ্যকীয়। বিভিন্ন মানুষের ত্বকের আর্দ্রতা বিভিন্ন রকম হলেও হেমন্ত, শীত ও বসন্তকালে বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকে বিধায় আনুপাতিক হারে শরীরের আর্দ্রতাও হ্রাস পায়।
মসৃণ ও উজ্জ্বল ত্বকের জন্য
গোসলের পর শরীরে সামান্য পানির স্তর থাকতে থাকতেই লোশন বা তেলজাতীয় ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করা।
-হাত, পা, বগল, কুচকি ব্যতীত শরীরের অন্য সব স্থানে প্রতিদিন সাবান ব্যবহার না করাই শ্রেয়। সপ্তাহে দুইদিন পুরো শরীরে সাবান ব্যবহার করা যেতে পারে।
-যাদের শরীরের ত্বক অতি শুষ্ক তাদের উচিত তেল বা গ্লিসারিনযুক্ত সাবান ব্যবহার করা।
-২৪ ঘণ্টায় অন্তত দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করা।
-যাদের কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করতে হয়, বারবার হাত ধুতে হয়, তাদের হাতের চামড়ার আর্দ্রতা রক্ষার্থে ভিনাইল, হাতমোজা বা গ্লাভস ব্যবহার করা উচিত।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক চর্ম, যৌন ও এলার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ
চেম্বার: অরোরা স্কিন অ্যান্ড
এয়েসথেটিকস, পান্থপথ, ঢাকা
০১৭২০১২১৯৮২