দেশ বিদেশ
সন্তানদের সাফল্যে গর্বিত পিতা তিনি
লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি
১২ মে ২০২৫, সোমবার
ভোলার লালমোহন পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঐতিহ্যবাহী পাটোয়ারী বাড়ির বাসিন্দা আব্দুস সাত্তার আলমগীর। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। দুই ছেলে ও চার মেয়ের একজন আদর্শবান বাবা তিনি। সন্তানদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে তাদের পড়ালেখার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। এতে সফলও হয়েছেন আলমগীর পাটোয়ারী। তার ছোট ছেলে সৈয়দ মাহাতাব হোসেন বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়াশুনা করছেন। ছোট মেয়ে সৈয়দা মেহেনাজ আক্তার জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ল’ অ্যান্ড জাস্টিজ বিভাগে এ বছর ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া আব্দুস সাত্তার আলমগীর পাটোয়ারীর বড় ছেলে সৈয়দ মেহেরাব হোসেন জুম্মান গ্র্যাজুয়েট সম্পন্ন করে এখন সফল ব্যবসায়ী। বড় মেয়ে সৈয়দা শামীমা আকতার গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। মাহমুদা লাকী ও আইনুন নাহার ইফা নামে তার আরও দুই মেয়ে মাস্টার্স শেষ করেছেন। সন্তানদের এমন সাফল্যে একজন বাবা হিসেবে গর্বিত আব্দুস সাত্তার আলমগীর।
জানা গেছে, তার ছোট ছেলে মাহাতাব ও মেয়ে মেহেনাজ লালমোহন উপজেলার স্বনামধন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিল। এই প্রতিষ্ঠান থেকে সৈয়দ মাহাতাব হোসেন ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে থেকে এসএসসি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষাজীবনের মাধ্যমিক স্তর শেষ করেন। সৈয়দা মেহেনাজ আক্তারও ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। তারা ২ জনই পঞ্চম, অষ্টম, এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ সহ স্কালারশিপ অর্জন করেন। বিভিন্ন সময় নিজেদের কৃতিত্বের জন্য ভূষিত হয়েছেন নানান পুরস্কারে। মাহাতাব হোসেন বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করলেও ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলন আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ ছাড়া মেহেনাজ আক্তার বর্তমানে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছেন। তবে তিনিও এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ছাড়াও আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন।
দুই সন্তানের এমন সাফল্যে বাবা আব্দুস সাত্তার আলমগীর পাটোয়ারীসহ পুরো পরিবারেই বাঁধ ভাঙা আনন্দ বিরাজ করছে। আলমগীর পাটোয়ারী জানান, এই দুই সন্তানকে নিয়ে আমার স্বপ্ন; কেবল তারা পড়ালেখা করে প্রকৃত মানুষ হবে। তাদের এ পর্যন্ত আসতে সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে তাদের মায়ের। আমি শুধু আর্থিক এবং মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছি। একইসঙ্গে এই সফলতার জন্য ওদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিনসহ অন্যান্য শিক্ষকদের অবদান অনেক।
তিনি আরও জানান, লালমোহনে হা-মীম একটি অসাধারণ প্রতিষ্ঠান। পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও এগিয়ে থাকে হা-মীমের শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের লক্ষ্য নির্ধারণ করে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় নিয়মিত তদারকি করে এ প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। আমি লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন অভিভাবক হিসেবে সবসময় এই প্রতিষ্ঠানটির মঙ্গল কামনা করবো। কারণ তারা আমার দুই সন্তানকে একটি সুন্দর ভবিষ্যতের পথ দেখিয়েছেন।
এ বিষয়ে লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন বলেন, আলমগীর পাটোয়ারীর দুই সন্তানের একজন আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি ও আরেকজন এইচএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। তারা সত্যিই অনেক মেধাবী। আমরা কেবল তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছি। তা মেনে চলে এখন সুন্দর একটি ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। এ ছাড়া আমরা প্রতিটি শিক্ষার্থীকেই পড়ালেখার পাশাপাশি প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ক্লান্তিহীনভাবে শ্রম দিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য; এখানের শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে একজন সুশিক্ষিত মানুষ হয়ে উঠবে। ভবিষ্যতে তারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করবে ইনশাআল্লাহ্।