দেশ বিদেশ
ইউক্রেন ইস্যুতে কী সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প!
মানবজমিন ডেস্ক
১২ মে ২০২৫, সোমবার
ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। যেটি এ সপ্তাহের বৃহস্পতিবার তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক শহর ইস্তাম্বুলে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আর এতে বেশ সতর্ক ও কূটনৈতিক সাড়া দিয়েছেন কিয়েভের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শনিবার কিয়েভ এবং তাদের পশ্চিমা মিত্রদের ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পর কোনো ধরনের উত্তর না আসায় মস্কোর বিরুদ্ধে জেলেনস্কি সমালোচনা করতে পারেন বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। তবে বাস্তবে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। এক্সের এক পোস্টে জেলেনস্কি লেখেন, এটি একটি ইতিবাচক লক্ষণ যে, অবশেষে রাশিয়া যুদ্ধ শেষ করার কথা বিবেচনা করতে শুরু করেছে। জেলেনস্কি যোগ করেছেন, প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব বাস্তবায়নে রাজি হবে রাশিয়া। যেটি সোমবার থেকে শুরু হওয়ার কথা বলা হয়েছে। পুতিনের সরাসরি আলোচনার প্রস্তাবকে জেলেনস্কি সত্যিই ‘ইতিবাচক লক্ষণ’ হিসেবে দেখেন কিনা তা এখনই বলা কঠিন। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছেÑ পুতিন বা জেলেনস্কি কেউই চান না যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তাদের কাউকে এই শান্তিচুক্তির বাধা হিসেবে চিহ্নিত করুক। এক্ষেত্রে ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া ছিল উৎসাহমূলক। এ বিষয়ে নিজের ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্ট করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেখানে তিনি ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন। দীর্ঘস্থায়ী এই যুদ্ধের অবসান হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। ট্রাম্প লিখেছেন, এটি রাশিয়া ও ইউক্রেনের জন্য সম্ভাব্য দুর্দান্ত দিন। পুতিন বলেছেন, এই সংঘাতের মূল কারণ নিয়ে কথা বলতে চান তিনি। এর মাধ্যমে মস্কোর বলয় থেকে ইউক্রেনের সরে যাওয়া এবং বেলারুশের মতো একটি সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক ভূখণ্ড ইউরোপের অংশ হওয়ার বিরোধিতা প্রকাশ করে। এ ছাড়া তিনি চান না যে, ইউক্রেন কখনো ন্যাটোতে যোগ দিক। মস্কোর প্রধান চাওয়া হচ্ছেÑ যেকোনো যুদ্ধবিরতির আগে ইউক্রেনকে অনতিবিলম্বে পশ্চিমাদের অস্ত্র সহায়তা বন্ধ করতে হবে। অবশ্য এর ফলে ফ্রন্টলাইনে রাশিয়াকে প্রতিহত করার সক্ষমতা হারাবে ইউক্রেন। অথবা তাদের ভূমি দখলের জন্য আরও বেশি আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নেবে রাশিয়া। বিবিসি বলছে, মিত্রদের কাছ থেকে ইউক্রেনের এখন সবচেয়ে বেশি জরুরি হচ্ছে রাশিয়ার ড্রোন হামলা ঠেকাতে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুরক্ষিত করার সরঞ্জাম পাওয়া। যাতে তারা তাদের প্রধান শহরগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে। ৯ই মে, কিয়েভে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস তাদের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে একটি সতর্কতা জারি করে। যেখানে বলা হয়, আগামী দিনগুলোতে বিমান হামলার একটি উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি রয়েছে। সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, ক্রেমলিন হয়তো আরও একটি ওরেশনিক হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করতে পারে। যেমনটি গত নভেম্বরে ডিনিপ্রোর একটি কারখানায় ছোড়া হয়েছিল। শব্দের চেয়ে ১০ গুণ বেগে ছুটে চলতে পারে ক্ষিপ্রগতির ওই ক্ষেপণাস্ত্র। যা নিয়ে গর্ব করে রাশিয়া। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, ইউক্রেন ইস্যুতে সামনে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন ট্রাম্প। এক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্টের গতি যেকোনো দিকেই যেতে পারে বলে মনে করেন বিবিসি’র নিরাপত্তা বিষয়ক সংবাদদাতা ফ্রাঙ্ক গার্ডনার। তিনি বলেছেন, ট্রাম্প মনে করতে পারেন যে, কিয়েভ তাকে মস্কোতে আটকে রেখেছে। আর যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে রাজি না হতে একের পর এক অজুহাত খুঁজে বেড়াচ্ছে। অথবা পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের উষ্ণ সম্পর্ক থাকার ফলে ইস্তাম্বুলে মস্কোর দাবি মানতে কিয়েভের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারেন ট্রাম্প।