ঢাকা, ৪ মে ২০২৫, রবিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৫ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রনীতির তীব্র সমালোচনা

আনোয়ার চীনের দিকে ঝুঁকছে, আবার যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি রাখতে চাইছে: মাহাথির মোহাম্মদ

স্টাফ রিপোর্টার, মালয়েশিয়া

(৬ ঘন্টা আগে) ৪ মে ২০২৫, রবিবার, ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন

সাবেক প্রধানমন্ত্রী তুন ড. মাহাথির মোহাম্মদ সম্প্রতি সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিমের পররাষ্ট্রনীতির সমালোচনা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, আনোয়ার চীনের প্রতি অতিরিক্ত ঝুঁকছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে অসন্তুষ্ট করতে ভয় পাচ্ছেন, যা মালয়েশিয়ার দীর্ঘদিনের নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতির পরিপন্থী।

প্রায় শতবর্ষী এশিয়ার এ লিজেন্ড আরো বলেছেন, “মালয়েশিয়া একটি নিরপেক্ষ দেশ। আমরা বিশ্বজুড়ে বন্ধুত্ব চাই। আমরা সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করতে চাই। আমাদের কারো পক্ষ নেয়া উচিত নয়—না আমেরিকা, না চীনের। কিন্তু এই সরকার চীনের দিকে ঝুঁকছে। একই সঙ্গে, তারা আমেরিকাকে অসন্তুষ্ট করতে ভয় পাচ্ছে।”

গত মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মালয়েশিয়া সফর করেন—যা গত ১২ বছরের মধ্যে এটি ছিল তার দ্বিতীয় সরকারিভাবে মালয়েশিয়া সফর। সে সফরের সময়, আনোয়ার বলেন যে, চীন কেবল ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রতিবেশী নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার, যার সঙ্গে গভীর আস্থা ও দীর্ঘস্থায়ী সহযোগিতা রয়েছে মালয়েশিয়ার।

ড. মাহাথির সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে আরো বলেছেন, মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রনীতি বরাবরই নিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী, যা ১৯৭৪ সালে তুন আব্দুল রাজাকের চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। সেই সময় থেকেই বিশ্বশক্তিগুলোর সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা মালয়েশিয়ার নীতি। আনোয়ার এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তার সমালোচনামূলক অবস্থান নরম করে ফেলেছেন, বিশেষ করে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে, ডনাল্ড ট্রাম্পের ফিরে আসার পর থেকে। এটি এক ধরনের ভয়-ভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতি, যা নৈতিক দায়িত্বকে দুর্বল করে। সরকার আমেরিকার অন্যায় সহ্য করতে প্রস্তুত, কারণ তারা আমেরিকাকে ভয় পায়। আমরা সবাই আমেরিকাকে ভয় পাই কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান নিতে হবে।

তবে দেশটির মালয় মেইল এ সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে, ২০২৩ সালে, আনোয়ার অভিযোগ করেছিলেন যে যুক্তরাষ্ট্র মালয়েশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল, এমনকি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওয়াশিংটনে মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছিল।

মালয় মেইল আরো জানিয়েছে যে, প্রেসকে আনোয়ারের দপ্তরও নিশ্চিত করেছিল যে, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত ইস্যুতে ১৩ অক্টোবর মালয়েশিয়া একটি আনুষ্ঠানিক ডেমার্চে নোটিশ পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি চিফ অব মিশন, চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মানু ভল্লা, মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ভাষ্যমতে, এই 'ডেমার্চে নোটিশ' হচ্ছে, একটি “সরকারের অফিসিয়াল অবস্থান, মতামত বা ইচ্ছার আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক উপস্থাপন,” যার লক্ষ্য হলো “প্ররোচিত করা, তথ্য দেওয়া বা সংগ্রহ করা,” অথবা “কোনো বিদেশি সরকারের কর্মকাণ্ডে প্রতিবাদ বা আপত্তি জানানো।”

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে পৃথক আরেকটি সংবাদে মালায় মেইল লিখেছে, ড. মাহাথির সেই সময়ের কথা স্মরণ করছেন যখন পুতিন তার বেড়াবিহীন বাড়িতে গিয়েছিলেন, ইউক্রেন আগ্রাসনের জন্য পশ্চিমা 'উস্কানি'কে দায়ী করেছিলেন। ২০০৫ সালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে তার সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন, যা ছিল তার প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাওয়ার দুই বছর পর।

টাইম ম্যাগাজিনের সাথে কথা বলার সময়, ড. মাহাথির স্মরণ করেন কিভাবে পুতিনের সফরসঙ্গীদের কাছে এটি অকল্পনীয় ছিল যে তার বাড়িটি সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় ছিল – এমনকি একটি সীমানা প্রাচীরও চোখে পড়েনি। তিনি হাসতে হাসতে বলেন, ‘পুতিনের নিরাপত্তার জন্য, আমার মতো একজনের কোনো বেড়া না থাকাটা অকল্পনীয় ছিল কিন্তু আমাদের চার ঘণ্টার বৈঠক হয়েছিল। মালয়েশিয়া কিভাবে একটি কৃষিভিত্তিক দেশ থেকে শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হয়েছে তা দেখতে তিনি আগ্রহী ছিলেন।’

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status