ঢাকা, ৪ মে ২০২৫, রবিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৫ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

আট মাসে বিদেশি ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৫ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
৪ মে ২০২৫, রবিবার
mzamin

চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম আট মাসে দাতাদের কাছে পুঞ্জীভূত পাওনা পরিশোধ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে বাংলাদেশ দাতাদের পুঞ্জীভূত পাওনা পরিশোধ করেছে ৩২১ কোটি ২০ লাখ ডলার।
এই পরিশোধ গত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দাতাসংস্থাগুলোর পাওনা পরিশোধ করা হয়েছিল ২৫৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত দাতাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও বাজেট সহায়তাসহ সবমিলে ৪৭৭ কোটি ৩৮ লাখ ডলার ছাড় করেছে। এ সময় পর্যন্ত বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও জাইকাসহ বিভিন্ন দাতাসংস্থার কাছে ৭ হাজার কোটি বা ৭০ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি ঋণ রয়েছে।
গত দশকে দাতাদের কাছ থেকে বেশি অর্থ নেয়ায় এখন সেসব পরিশোধ করতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার চাপে পড়ছে বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে ইআরডি’র সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, বিগত এক দশকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পদ্মা রেল সংযোগ, মেট্রোরেল, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ, গভীর সমুদ্রবন্দর এবং কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পসহ অনেকগুলো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সেই বিদেশি ঋণগুলো এখন রেয়াতকাল পেরিয়ে পুরোদমে পরিশোধকাল শুরু হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই এখন পরিশোধের চাপ বাড়বে। তিনি জানান, ইআরডি’র একটি বিশ্লেষণে ২০৩০ সালের পর পাওনা পরিশোধের চাপ কিছুটা কমবে বলে ধারণা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ আরও ৫ থেকে ৬ বছর বেশি পরিশোধের চাপ থাকবে। এরপর ক্রমান্বয়ে চাপ কিছুটা কমে আসতে পারে।

এই চাপের কারণেই মূলত গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে বলে জানান ইআরডির ওই কর্মকর্তা। ইআরডির সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে দাতাসংস্থাগুলোর কাছ থেকে নতুন ঋণ প্রতিশ্রুতি কমেছে প্রায় ৫৯ শতাংশ। এই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে মাত্র ৩০৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছিল ৭২৪ কোটি ডলারের।

ইআরডি’র ওই কর্মকর্তা জানান, অর্থবছরের বাকি সময়ে নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি ইতিবাচক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “মার্চ মাসে বিশেষ করে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের বিপরীতে বড় ধরনের ঋণ চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এপ্রিল মাসে আরও বেশ কয়েকটি চুক্তি হতে পারে। তখন নতুন ঋণ পাওয়ার পাইপলাইন বড় হবে।”
এদিকে অর্থবছরের নয় মাস পেরিয়ে গেলেও বিদেশি ঋণের অর্থছাড়ের পরিমাণ বাড়ছে না। সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বিদেশি ঋণ ও অনুদান কমেছে ১৪.৬১ শতাংশ।

সবশেষ হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে বিদেশি অর্থায়ন মিলেছে ৪৮০ কোটি ৮৮ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৫৬৩ কোটি ১৬ লাখ ডলার। পাশাপাশি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতিতে ভাটা দেখা গেছে। এ সময়ে প্রতিশ্রুতি মিলেছে ৩০০ কোটি ৫২ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭২৪ কোটি ২১ লাখ ডলার। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের তুলনায় কমেছে সাড়ে ৫৮ শতাংশ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের সবশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status