দেশ বিদেশ
মূল্যস্ফীতির চাপে শ্রমজীবী মানুষ এখনো কষ্টে জীবন-যাপন করছে: তারেক রহমান
স্টাফ রিপোর্টার
১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবারদ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতির চাপে শ্রমজীবী মানুষ এখনো দুঃখ এবং কষ্টে জীবন-যাপন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল এক বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, দুঃশাসনের প্রকোপে শ্রমিক শ্রেণি ছিল সবচেয়ে নিপীড়িত। গতবছর গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদের সঙ্গে শ্রমিকদের আত্মদানের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন হয়। এখন শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়নের জন্য কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকার কথা না। তথাপিও শ্রমিকরা অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত। দেশে উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের সমাজভূমি নির্মিত হলেই শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতির চাপে শ্রমজীবী মানুষ এখনো দুঃখ-কষ্টে জীবন-যাপন করছে। তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশেই নয়, দুনিয়া জুড়ে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শোষণ মুক্তির সংগ্রাম বেগবান করার লক্ষ্যে মহান মে দিবসে শপথ নিতে হবে। আমি মহান মে দিবসের সকল কর্মসূচির সার্বিক সফলতা এবং তাদের উত্তরোত্তর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করি।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস, যা মহান ‘মে দিবস’ হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত, আজকের এই দিনে আমি দেশে-বিদেশে কর্মরত সকল শ্রমজীবী মানুষ, যারা নিজের জীবন বাজি রেখে জীবিকার জন্য, পরিবারের জন্য, সমাজের সর্বোপরি দেশের উন্নয়নের জন্য কর্মে নিয়োজিত আছেন তাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সংগ্রামী সালাম। ১৮৮৬ সালের মে মাসে ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস সহ শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায় করতে গিয়ে আমেরিকার শিকাগো শহরে ‘হে মার্কেটে’ জীবনদানকারী এবং এই আন্দোলনের জন্য ফাঁসিকাষ্ঠে আত্মদানকারী প্রতিবাদী শ্রমিকদের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। তিনি বলেন, এই দিবস আন্তার্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনের উদ্যাপন দিবস। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী মানুষ এবং শ্রমিক সংগঠনসমূহ রাজপথে সংগঠিতভাবে মিছিল ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসটি পালন করে। সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম ছিলেন একজন যথার্থ শ্রমিক। তিনি নিজেকে সব সময় একজন শ্রমিক হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করতেন। শ্রমিকদের দুটো হাতকে তিনি উন্নয়নের চাবিকাঠি বলতেন। এদেশের শ্রমিকের কল্যাণে তিনি যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।
তারেক রহমান বলেন, এদেশে শ্রম আইন সংস্কার ও আধুনিকীকরণ, বেতন ও মজুরি কমিশন গঠন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, বাস্তবায়ন ও তাদের বোনাস প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের সন্তানদের চিকিৎসা ও তাদের লেখাপড়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের শ্রমিক সমাজের ভাগ্যোন্নয়নে যথাযথ কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন। আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক রয়েছে পোশাক শিল্পে। এই শিল্পে শহীদ জিয়ার রহমানের অবদান অবিস্মরণীয়। পোশাক শ্রমিকদের কল্যাণে দেশ আজ ক্রমবর্ধমান অগ্রগতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। আগামীতেও বিএনপি ক্ষমতাসীন হলে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও অগ্রগতি অব্যাহত থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করছি।
অপর এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিশ্ব ইতিহাসে মে দিবস একটি অবিস্মরণীয় ঐতিহাসিক দিন। আজ যে বিশ্ব জুড়ে শ্রমজীবী মানুষ ৮ ঘণ্টা শ্রম সময় ভোগ করছে তার জন্য ১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরে মজলুম শ্রমিকরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে ৮ ঘণ্টা শ্রম ও ন্যায্য মজুরি অধিকার আদায় সম্ভব হয়। জীবন দিয়ে রচিত হয় এক ঐতিহাসিক লড়াই সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়- ‘মে দিবস’।
তিনি বলেন, এই দিবসের তাৎপর্য ও প্রভাব সুদূরপ্রসারী। ১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরে হে মার্কেটে শ্রমিকদের তাজা রক্ত ও জীবন দিয়ে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও শোষণ মুক্তির সংগ্রাম এক নতুন প্রেরণা লাভ করে। তাই সারা দুনিয়ার শ্রমজীবী মানুষ মে দিবস পালনের মাধ্যমে ‘মে শহীদের’ স্মৃতিকে চিরঞ্জীব করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় সব সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। শহীদ জিয়া, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকার শ্রম আইন সংস্কার ও আধুনিকীকরণ সহ শ্রমিক-কর্মজীবী মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। আগামীতেও বিএনপি নির্বাচিত হলে একইভাবে শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে আরও সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।