শেষের পাতা
বাংলাদেশকে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২৫ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবারবাংলাদেশে কর্মসংস্থান বাড়ানো, বাণিজ্যিক অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সামাজিক সুরক্ষা খাতকে আধুনিকায়নে সহায়তা করার জন্য মোট ৮৫ কোটি ডলারের দুটি অর্থায়ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার সমান। এই অর্থ দুটি পৃথক প্রকল্পে ব্যয় করা হবে বলে নিশ্চিত করেছে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশের পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল এইচ. মার্টিন চুক্তিপত্রে সই করেন।
চুক্তি স্বাক্ষরের সময় বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার উপস্থিত ছিলেন বলে বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়ন হতে যাওয়া দুটি বড় প্রকল্পের একটি হলো ‘বে-টার্মিনাল মেরিন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প’, যাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬৫ কোটি ডলার। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গভীর সমুদ্র বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হবে, যার ফলে বড় জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের সুবিধা বাড়বে এবং পণ্য পরিবহনে সময় ও খরচ কমবে।
সংস্থাটি আশা করছে, বন্দরের আধুনিকায়নের ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে গতি আসবে এবং প্রতিদিন গড়ে এক মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে। একই সঙ্গে নারীদের জন্য কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক।
অন্য প্রকল্পটির নাম ‘স্ট্রেন্থেনিং সোশ্যাল প্রোটেকশন ফর ইমপ্রুভড রেজিলিয়েন্স, ইনক্লুশন অ্যান্ড টার্গেটিং’, যার আওতায় ২০ কোটি ডলার ব্যয়ে সামাজিক সুরক্ষা খাতকে উন্নত করা হবে। এতে দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্যোক্তা গড়ে তোলা, ক্ষুদ্রঋণ সহায়তা এবং পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ও দৃঢ় অংশীদারিত্ব রয়েছে যা দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে। এই প্রকল্পগুলো দেশের জলবায়ু সহনশীলতা এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।
বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে টিকে থাকার জন্য বাংলাদেশকে প্রতি বছর শ্রমবাজারে প্রবেশকারী প্রায় ২০ লাখ তরুণের জন্য মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। তিনি আরও বলেন, এই অর্থায়ন প্যাকেজটি বাণিজ্য ও রপ্তানিযোগ্যতার প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং দরিদ্র জনগণকে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে এসে শ্রমবাজারে প্রবেশের জন্য একটি গেম চেঞ্জার হবে।