খেলা
চাকরি ছাড়ার ইস্যুতে বিসিবি’র লুকোচুরি নিয়েও ক্ষুব্ধ সৈকত
সৌরভ কুমার দাস
২৫ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার
মঙ্গলবার রাতেই জানা যায়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চাকরি ছাড়ছেন আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। পরদিন আবার তাকে নিয়ে জরুরি সভা করেন আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু। এরপর তিনি সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন সৈকত পদত্যাগপত্র জমা দেননি, মৌখিকভাবে বলেছেন করতে চান না। তবে তাকে বুঝিয়েছেন আর সৈকত নাকি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করছেন! কিন্তু গতকাল জানা গেল সৈকত নিজের অবস্থানেই অনড় থাকছেন। বরং চাকরি ছাড়া নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোতেও বিসিবি’র ওপর ক্ষুব্ধ আইসিসি’র এলিট প্যানেলে জায়গা পাওয়া বাংলাদেশের প্রথম আম্পায়ার।
ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে মাঠেই সৈকতের সঙ্গে কয়েক দফায় অসদাচরণ করেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়। এমনকি আবাহনীর বিপক্ষে ওই ম্যাচের পর আম্পায়ার সৈকতকে নিয়ে সংবাদমাধ্যমে অপমানজনক মন্তব্যও করেন তিনি। এরপর তাকে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ ও ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু এরপর ডিপিএলের টেকনিক্যাল কমিটির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বাইলজ পরিবর্তন করে হৃদয়ের শাস্তি কমানো হয়! এরপর বিসিবি’র চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন সৈকত। এর আগে একই কাণ্ডে ডিপিএলের টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান এনামুল হক মনিও পদত্যাগ করেন। তবে সৈকতের চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েই বিতর্কের ঝড় ওঠে, প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে বিসিবি। এ নিয়ে ওই দিন বিসিবি’র কয়েকজন শীর্ষ কর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে দৈনিক মানবজমিন। বেশিরভাগই এটা গুজব বলে এড়িয়ে যেতে চান।
এতে চূড়ান্ত সমালোচনার মুখে পড়ে বুধবার আম্পায়ারদের সঙ্গে জরুরি মিটিংয়ে বসেন আম্পায়ারস কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু। যেখানে সৈকতও উপস্থিত ছিলেন। এরপর সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের ভুল স্বীকার করেন মিঠু। এমনকি তিনি দাবি করেন, মান-অভিমানের পালা শেষে সিদ্ধান্তে বদলে বিসিবি’র চাকরি চালিয়ে যাবেন সৈকত। দৈনিক মানবজমিন যোগাযোগ করলে মিঠু দাবি করেন, সৈকত কোনো পদত্যাগপত্রই নাকি জমা দেননি! শুধু মুখে বলেছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিং করতে চান না। সৈকত নাকি সিদ্ধান্ত বদল করেছেন!
কিন্তু বাস্তবতা পুরোপুরি ভিন্ন। সৈকতের একটি ঘনিষ্ট সূত্র মানবজমিনকে জানায়, বিসিবি’র কোনো অনুরোধেই আর সাড়া দেবেন না সৈকত। শুধু অনৈতিক প্রক্রিয়ায় হৃদয়ের শাস্তি কমানোই নয়, পদত্যাগ নিয়ে লুকোচুরি করাতে বিসিবি’র ওপর বেশি ক্ষুব্ধ হয়েছেন তিনি।
সৈকতের একটি ঘনিষ্ট সূত্র দৈনিক মানবজমিনকে বলেন, ‘সে তো পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে। এটা কেনো স্বীকার করছে না তারা!। সৈকত তার চাকরি ছাড়া নিয়ে মিডিয়ায় বিসিবি থেকে ছড়ানো ভিন্ন ভিন্ন তথ্য নিয়ে খুবই বিরক্ত। বিসিবিকে তো আগে পদত্যাগপত্র গ্রহন করতে হবে, তারপর তার সঙ্গে আলোচনা করতেই পারতো!’
এদিকে গতকাল ডিপিএলের টেকনিক্যাল কমিটির নতুন প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেছেন, আগের আইন বহাল থাকবে এবং পরের ম্যাচই নিষিদ্ধ থাকবেন হৃদয়। তবে এতে সৈকতের কিছু যায় আসে না! ঐ সূত্র জানায়, সৈকতকে অসম্মান-অপদস্ত করে শাস্তি পাওয়া একজনের শাস্তি যেভাবে কমে গেলো তাতে তিনি বিব্রত! সৈকত মনে করছেন আম্পায়ারদের ইগনোর করে, তাদের রোল ড্যামেজ করে এখন প্রলেপ দেওয়ার মানে হয় না।