বাংলারজমিন
‘এক দলের পেছন থেকে টেনে ধরা ও ট্যাগিং করার মানসিকতা যায়নি’
স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে
২৩ এপ্রিল ২০২৫, বুধবারজুলাই অভ্যুত্থানের পরও এক দলের পেছন থেকে টেনে ধরা ও ট্যাগিং করার মানসিকতা যায়নি উল্লেখ করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, ক্ষমতায় আসার আগেই তারা ক্ষমতার চেয়ারে বসে মানুষের সঙ্গে যেমন আচরণ করে, এখন তারা সেই আচরণ করছে। আমরা শিক্ষার্থীদের ওপর এসব আচরণ বন্ধে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। গতকাল রংপুর নগরীর একটি হোটেল মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ৫ই আগস্টের আগে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে যে ভীতি তৈরি হয়েছিল, তা দূর করতে কাজ করছে শিবির। গঠন ও সেবামূলক ছাত্র রাজনীতিকে এগিয়ে নিতে কাজ করা হচ্ছে। এতে থাকবে শিক্ষা ও সেবা কাজে প্রতিযোগিতা। শিবিরের এ কার্যক্রমকে দেশের সকল ক্যাম্পাস স্বাগত জানিয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে দেশে বড় বড় পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৬৯ থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ, কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও সর্বশেষ গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে ছাত্র সংগঠন ও ছাত্র রাজনীতির কারণে। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী ছাত্র রাজনীতি করার অধিকার দেয়া হয়েছে। ছাত্র রাজনীতি নিয়ে যে জনগণ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্ট রয়েছে, তা আস্তে আস্তে কেটে যাবে।
তিনি বলেন, ৫ই আগস্টের পর সারা দেশে আমরা ক্যাম্পাসে সার্ভে করেছি। সেখানে শতকরা ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী ছাত্র রাজনীতি চায় না। দীর্ঘ ১৫ বছর ছাত্র রাজনীতির কারণে যে ট্রমা তৈরি হয়েছে, সে কারণে ছাত্র রাজনীতি চায় না তারা। শিবির এ সংকটকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্তিক অবস্থা অনুধাবন ও সময় বিবেচনায় নিয়ে ক্যাম্পাসে সুন্দর পরিবেশ তৈরিতে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, ৫ই আগস্টের পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করেছে প্রশাসন। বুয়েটে আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের কারণে এ দাবি জোরালো হয়েছিল। ছাত্র শিবির প্রশাসনিক সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানিয়ে কাজ করছে। ক্যাম্পাসে ধীরে ধীরে ছাত্র রাজনীতি চালু হবে।
রাজধানীতে শিক্ষার্থী হত্যা নিয়ে শিবির সভাপতি বলেন, ছাত্র শিবির কোনো ধরনের হত্যাকাণ্ডকে সাপোর্ট করে না। যদি কোনো অপরাধী চিহ্নিত হয়, তাহলেও মব সৃষ্টি করে তাকে হত্যার পক্ষে আমরা নই। দেশে আইন ও বিচারের মাধ্যমে তার বিচার হবে। দেশের এ কালচার খুব দুঃখজনক। ৫ই আগস্টের পরও এটি চলমান রয়েছে। একটি পক্ষ আরেকটি পক্ষকে ঘায়েল করার জন্য হত্যাকাণ্ডকে টুলস হিসেবে ব্যবহার করছে। কোনো হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে এটিকে নিয়ে রাজনীতি নয় বরং ন্যায় বিচার ও কীভাবে সুষ্ঠু সমাধান করা যায় এমন রাজনীতির সংস্কৃতি থাকা উচিত। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির দাওয়াহ সম্পাদক মিজবাহুল করিম, জেলা সভাপতি ফিরোজ মাহমুদ, মহানগর সভাপতি নুরুল হুদা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি জুয়েল রানা প্রমুখ।