শেষের পাতা
আলোচনায় অসন্তুষ্ট পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা
কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
স্টাফ রিপোর্টার
১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার
৬ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। সড়ক অবরোধের পর দেয়া হয়েছিল রেলপথ অবরোধের ঘোষণা। তবে রেলপথ অবরোধ শিথিল করে গতকাল আলোচনায় বসেছিলেন শিক্ষার্থীরা। আলোচনা শেষে তারা জানিয়েছেন, সন্তুষ্ট নন তারা। ফলে ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন’ শিগগিরই কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়।
গতকাল সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি অনুবিভাগ) রেহানা ইয়াছমিনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। বৈঠক শেষে ছাত্র প্রতিনিধিরা বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টা আলোচনা করার কথা থাকলেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিবও ছিলেন না। যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের পক্ষ থেকেও কোনো প্রমাণযোগ্য কাগজপত্র উপস্থাপন করা হয়নি। তারা বলছেন- এটা করেছি, ওটা করেছি, কিন্তু আমরা কোনো দৃশ্যমান ফলাফল দেখছি না। শুধু মুখে বলা হচ্ছে, অথচ বাস্তবে কিছুই নেই।
কারিগরি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি মাশফিক ইসলাম বলেছেন, আমরা আজ অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে বসেছিলাম, কিন্তু মন্ত্রণালয়ের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। এ বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট নই। ফলে আমরা কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবো। আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।
জোবায়ের পাটোয়ারী নামে আরেক ছাত্র প্রতিনিধি বলেন, আমাদের আন্দোলন ৮ মাস ধরে চলছে। আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে জনদুর্ভোগ তৈরি করছি না। আমাদের বাধ্য করা হয়েছে। আমরা সচিবালয়ে যাওয়ার পরেও এর সমাধান করা হয়নি। আমাদের সঙ্গে সরাসরি প্রতারণা করা হয়েছে। আজকের যে অতিরিক্ত সচিব আমাদের সঙ্গে বসেছেন, তিনি নিজেও জানতেন না যে, শিক্ষা উপদেষ্টা থাকার কথা ছিল। তারা অযৌক্তিক আলোচনার মাধ্যমে সময় নষ্ট করেছেন। আমরা দীর্ঘমেয়াদে যেতে চাই না। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান হোক। ফলে জনদুর্ভোগ যতটা সম্ভব কমিয়ে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম- জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক) পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক ডিপ্লোমা প্রকৌশল ডিগ্রি থাকতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরসহ দেশের কারিগরি সব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে।
বুধবার পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সাতরাস্তা মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। ঢাকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সারা দেশে জেলায় জেলায় সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে সাতরাস্তা মোড়ে যান কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) শোয়াইব আহমাদ খান। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে পদোন্নতিতে ‘ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের’ কোনো কোটা রাখা হবে না বলেও জানান। ডিজি ও অধ্যক্ষের আশ্বাসের পরও সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান অব্যাহত রাখেন শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি করেন, প্রত্যেকটি দাবি পূরণে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তা লিখিতভাবে জানাতে হবে। সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়নের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। ৬ দফা দাবি আদায়ে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ সারা দেশে রেলপথ ব্লকেডের ঘোষণা দেন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের আশ্বাসে কর্মসূচি শিথিল করে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেন শিক্ষার্থীরা।
পাঠকের মতামত
ছাত্রদের এত সঠিক একটা দাবি এটা মেনে নিতে এত কষ্ট কেন আমার বুঝে আসেনা। যারা উচ্চ পর্যায়ে আছেন তারা কি কিছুই বোঝেন না।যারা ডিপ্লোমাধারীনা তারা শিক্ষা দিচ্ছে যারা ডিপ্লোমাধারী।।যাদেরকে চান্স দেয়া হচ্ছে তারা ডিপ্লোমা ধারী না তাহলে তারা যদি ডিপ্লোমাধারী না হয়ে থাকেন তাহলে কিভাবে একজন ডিপ্লোমার ডিগ্রিধারী প্রকৌশলী তৈরি করবেন এটা কি আমাদের উচ্চমহল বোঝেন না?তাদেরকে আমরা ঐ পর্যায়ে বসিয়ে রেখেছি শুধু এই দেশটাকে ধ্বংস করার জন্য।