ঢাকা, ১ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

'বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের প্রশংসা'

ঝাং ইউনবি 

(২ দিন আগে) ৩০ মার্চ ২০২৫, রবিবার, ৯:৫২ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১১:৫০ অপরাহ্ন

mzamin

শুক্রবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে আলোচনার মূল বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল পারস্পরিক রাজনৈতিক সমর্থন, বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সামুদ্রিক অর্থনীতি।

‘বাংলাদেশের প্রতি চীনের সদ্ভাবনা ও বন্ধুত্বপূর্ণ নীতির উচ্চমাত্রার স্থায়িত্ব ও ধারাবাহিকতা রয়েছে’ এবং এটি ‘বাংলাদেশের সমস্ত জনগণের জন্যই কার্যকর’, শি জিনপিং শুক্রবার সকালে বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে ইউনূসকে বলেন।

গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে চীনা কোম্পানিগুলো দেশটিতে তাদের বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত রেখেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন চীনে সফল সফর করেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শুক্রবারের আলোচনায় চীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীর প্রতি আন্তরিকতা অটুট রয়েছে।

শি জিনপিং বলেন, চীন বাংলাদেশের সাথে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের উচ্চমানের উন্নয়ন এবং ডিজিটাল অর্থনীতি, সবুজ অর্থনীতি, সামুদ্রিক অর্থনীতি, অবকাঠামো নির্মাণ এবং  পানি সংরক্ষণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে প্রস্তুত।

এছাড়া, বেইজিং দুই দেশের জনগণের মধ্যে বিনিময় এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি করতে চায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ইউনূস বলেন, দুই দেশের উচিত যৌথভাবে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহযোগিতা জোরদার করা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক রূপান্তরের জন্য আরও চীনা বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো।

তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব বিদ্যমান, যেখানে পারস্পরিক বোঝাপড়া, পারস্পরিক সম্মান ও বিশ্বাস রয়েছে। বাংলাদেশ চীনের নির্ভরযোগ্য অংশীদার ও বন্ধু।

বাংলাদেশ এক-চীন নীতিকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে এবং ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা’র বিরোধিতা করে বলে  ড. ইউনূস উল্লেখ করেন।

শুক্রবার দুই দেশের যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভবিষ্যৎ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, মুক্ত বাণিজ্য এবং সামুদ্রিক সহযোগিতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘উভয়পক্ষ চীন-বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শিগগিরই শুরু করার এবং চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ চুক্তির অপ্টিমাইজেশন নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর গুরুত্ব তুলে ধরেছে’। উভয় দেশ উচ্চমানের বাংলাদেশি পণ্য, যেমন তাজা আম, চীনে দ্রুত রপ্তানি বাস্তবায়নে একমত হয়েছে।

উভয় দেশ সামুদ্রিক বিষয়ে বিনিময় জোরদার করতে এবং ‘উপযুক্ত সময়ে সামুদ্রিক সহযোগিতার বিষয়ে নতুন দফার সংলাপ আয়োজন করতে’ সম্মত হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

ইউনূস বুধবার চীনে বার্ষিক বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার সম্মেলনে অংশ নিতে পৌঁছান।

চীনের ভাইস-প্রিমিয়ার ডিং শুয়েশিয়াং বৃহস্পতিবার হাইনান প্রদেশের বোয়াওতে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ভাইস-প্রেসিডেন্ট হান ঝেং শুক্রবার বেইজিংয়ে তার সঙ্গে বৈঠক করেন।

গত ১৫ বছর ধরে চীন বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে চীন।

‘এই সময়কালে কমপক্ষে ১৪টি চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে ২৩ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে, যা টেক্সটাইল ও পোশাক, ব্যাগেজ, জুতা, পরচুলা ইত্যাদি উৎপাদন খাতে বিস্তৃত’ সম্প্রতি এক নিবন্ধে চীনের বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন উল্লেখ করেন।

গত মাসে বেইজিংয়ে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত নাজমুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাতে চীনের ভাইস-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান ওয়েইডং বলেন, চীন সর্বদা বাংলাদেশকে তার পার্শ্ববর্তী কূটনীতির অগ্রাধিকারে রেখেছে এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে।

শুক্রবার শি জিনপিং ইউনূসকে বলেন, উভয় দেশের উচিত ‘রাজনৈতিক পারস্পরিক বিশ্বাস গভীর করা এবং একে অপরকে মূল স্বার্থ ও প্রধান উদ্বেগের বিষয়ে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করা’।

চীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় এবং দেশের পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নিজস্ব উন্নয়ন পথ অনুসন্ধানে সহায়তা করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এই বছর দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী এবং চীন-বাংলাদেশ জনগণের মধ্যে বিনিময়ের বছর হিসেবে পালিত হচ্ছে।

ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ এই ৫০তম বার্ষিকীকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়ে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে আগ্রহী, যা দুই দেশের ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্বের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

সূত্র- চায়না ডেইলি

পাঠকের মতামত

সব ঠিক আছে কিন্ত একটু কলংক আছে, ৭১এ স্বাধীনতা যুদ্ধে চীন বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিলো।

মিলন আজাদ
৩০ মার্চ ২০২৫, রবিবার, ১০:৫৯ পূর্বাহ্ন

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status