খেলা
মুশফিক-রিয়াদদের শূন্যতা রাতারাতি পূরণ ‘অসম্ভব’
ইশতিয়াক পারভেজ
১৯ মার্চ ২০২৫, বুধবার
সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বিকল্প হবেন কারা! কোন ক্রিকেটাররা তাদের শূন্যতা পূরণ করবেন? বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভক্তদের মনে ক্রমেই বাড়ছে প্রশ্ন আর চিন্তাও। দুটি টেস্ট খেলতে আগামী মাসে বাংলাদেশ সফরে আসছে জিম্বাবুয়ে। দল গঠনে সিনিয়র ক্রিকেটার মধ্যে পাওয়া যাবে শুধু মুশফিককে। তাও তিনি যদি ফিট থাকেন। অন্যদিকে তাদের বিকল্প হিসেবে এতদিন যাদের ওপর ভরসা করা হচ্ছিলো সেই লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজরা এখনো নিজেদের প্রমাণ করতে পারেননি। তারাও কম বেশি জাতীয় দলে কাটিয়ে দিয়েছেন ৮ থেকে ১০ বছর। তাহলে দল গঠন করতে গেলে নির্বাচকদের কপালে তো ভাঁজ পড়বেই। কঠিন চ্যালেঞ্জ না হলেও রাতারাতি যে তাদের বিকল্প খুঁজে শূন্যতা পূরণ করা অসম্ভবই মনে করছেন জাতীয় দলের নির্বাচক আবদুর রাজ্জাক। দৈনিক মানবজমিনকে তিনি বলেন, ‘দেখেন চ্যালেঞ্জ বলবো না। কিন্তু আপনি মুশফিক বা মাহমুদউল্লাহর বিকল্প হিসেবে যাকে নামাবেন তিনি একদিনেই সব কিছু করে ফেলবে এমন নয়। ওরা ১৮, ১৯ বছর ধরে ক্রিকেট খেলছে। এটা কোনো ভাবে সম্ভব না কেউ এসেই ওদের জায়গা নিয়ে নিবে। রাতারাতি এই সিনিয়র শূন্যতা পূরণ আমি বলবো অসম্ভব।’ দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আসন্ন ঈদুল ফিতরের পর বাংলাদেশ সফরে আসবে জিম্বাবুয়ে। ২০২৪ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ এবং দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের। তবে সে বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে থাকায় শুধুমাত্র পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়। স্থগিত থাকা দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ এবার মাঠে গড়াবে। ১৫ই এপ্রিল বাংলাদেশে পা রাখবে জিম্বাবুয়ে দল। এরপর ২০শে এপ্রিল সিলেটে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট মাঠে গড়াবে চট্টগ্রামে, ২৮শে এপ্রিল থেকে। এই সিরিজের জন্য বাংলাদেশের স্কোয়াড ঘোষণা করা হবে ঈদের পর, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষে মে মাসে পাকিস্তান সফরে যাবে বাংলাদেশ দল, যেখানে দুটি সাদা বলের সিরিজ খেলবে টাইগাররা। দুটি সিরিজকে সামনে রেখে এখন নির্বাচকদের সামনে চ্যালেঞ্জ স্কোয়াড গঠন করা। বাস্তবতা মেনে নিয়েছেন নির্বাচক রাজ্জাকও। তিনি বলেন, ‘এটা হওয়ার কথা ছিল অনেক আগেই। আমরাও মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। এখন যারা আছেন তাদের নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যর্থতার অন্যতম অজুহাত ছিল প্রস্তুতি ঘাটতি। বিপিএলে টানা টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খেলে ওয়ানডের সেই আসরে মানিয়ে নেয়া ছিল চ্যালেঞ্জের। দলের সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনও প্রস্তুতি ঘাটতিকে বড় করে দেখেছেন। এবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের আগে একই অবস্থা। জাতীয় দলের প্রায় সব ক্রিকেটারই খেলেছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে ওয়ানডে ফরম্যাটে। ঈদের পরও লীগ চলবে। তার মনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে খেলেই নামতে হবে টেস্ট ফরম্যাট খেলতে। এবারো কি তাহলে ফলাফল ভালো না হলে অজুহাত হবে প্রস্তুতি ঘাটতি! আবদুর রাজ্জাক মনে করেন বর্তমান আধুনিক ক্রিকেট আর ব্যস্ত সূচিতে প্রস্তুতি ঘাটতি ও ফরম্যাটের সঙ্গে মানিয়ে নেয়া অজুহাত মাত্র। তিনি বলেন, ‘আসলে বর্তমান ক্রিকেটে এমন ব্যস্ত সূচি এখানে এই সব কথার কোনো মানে নেই। প্রস্তুতি ঘাটতি কেন হবে? কেন ক্রিকেটাররা মানিয়ে নিতে পারবে না! তারাতো ম্যাচের মধ্যেই থাকে। আর এটি তো এখন সাধারণ বিষয় হয়ে গেছে। জিম্বাবুয়ে আসছে তার আগে নিশ্চয় একটা ক্যাম্প হবে। সেখানে কোচরা একটা পরিকল্পনা করে এগিয়ে যাবে। তাতেই তো যথেষ্ট হওয়া উচিত। আমার মনে হয় না ওয়ানডে খেলে টেস্টে মানিয়ে নেয়া কঠিন কিছু হবে। তাও আবার দেশের মাটিতে। এমন হলে তো খেলাই উচিত না।’