প্রথম পাতা
এমসি কলেজের শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ শিবিরের বিরুদ্ধে
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, শুক্রবার
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে এমসি কলেজের হোস্টেলে এক শিক্ষার্থীকে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত মিজানুর রহমান রিয়াদ ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সে ছাত্রাবাসের প্রথম ব্লকের ১০১ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে ওই শিক্ষার্থী জড়িত ছিল বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ভুক্তভোগীর দাবি, ছাত্রশিবিরের কর্মীরা তার ওপর হামলা চালিয়ে রগ কাটার চেষ্টা করে। তার রুমমেট বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী জুনেদ আহমদ জানান, রাতের খাবার শেষে তারা ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এমন সময় দরজায় প্রচণ্ড আঘাতের শব্দ পান। দরজা খুলে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে এমসি কলেজ ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জওহর লুকমান মুন্নার নেতৃত্বে ১০-১২ জন রুমে ঢুকে রিয়াদকে লাথি দিয়ে বিছানা থেকে নিচে ফেলেন। তাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘কুয়েটের ঘটনায় তুই শিবিরকে নিয়ে কী লিখেছিস’। কোনো উত্তরের তোয়াক্কা না করেই তাকে চড়-থাপ্পড়, লাথি-ঘুষি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে পাশের রুম থেকে রড নিয়ে রুমে প্রবেশ করে নাজমুল ও সালমান। রিয়াদের রুমমেট জুনেদ এগিয়ে এলে তাকেও মারধর করে রুমের বাইরে বের করে দেয়া হয়। দরজা বন্ধ করে ঘরের ভেতরে রড দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে।
ভুক্তভোগী জানান, হামলার সময় এক শিবির কর্মী অন্য এক শিবির কর্মীকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘তুই পরে যে অপবাদ দিবি, আগেই সেটি করে নেই’। এই বলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পায়ের রগ কাটার চেষ্টা করে। রুমের বাইরে থাকা জুনেদের আর্তচিৎকারে ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা জড়ো হন। শিবিরের নেতাকর্মীরা রক্তাক্ত অবস্থায় রিয়াদকে রুমের বাইরে টেনে বের করে ফেলে চলে যায়। ছাত্রাবাস ত্যাগের সময় ১০১ নম্বর রুমে তালা দিয়ে রিয়াদ ও জুনেদের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ কেড়ে নিয়ে যায় তারা। এদিকে, রিয়াদের অবস্থা গুরুতর। মাথা, পিঠ ও ডান পায়ে কয়েক স্থানে জখম হয়েছে। তার সহকর্মীরা জানান, রিয়াদ জুলাই বিপ্লবের সক্রিয় কর্মী। কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনায় একটি নিউজের কমেন্টে লিখেন, ‘কীসের জন্য এত ত্যাগ করলাম। দিনের বেলা পুলিশের টিয়ারশেল আর লাঠিচার্জ। রাতে পালিয়ে থাকলাম। সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাসের স্বপ্নে এত ছাত্র প্রাণ দিলো। এখন যদি গুপ্ত সংগঠনের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বসেন তাহলে এই ত্যাগের মূল্য কী।’ রিয়াদের এই কমেন্ট এমসি কলেজ শিবিরের নজরে আসে। যার প্রতিক্রিয়ায় তাকে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে ব্যাপক মারধর করে জখম করে তারা।
এ ব্যাপারে ছাত্রশিবিরের সিলেট মহানগর সেক্রেটারি শাহীন আহমদ সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হচ্ছে। শাহপরান থানার ওসি মনির হোসেন মানবজমিনকে জানান, ফেসবুকে স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে আহত শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দেয়া হলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাঠকের মতামত
এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য। আমরা হাওয়া দেখে পাল তুলি। ঠিক বেঠিক বিবেচনা করি না। সত্য প্রকাশে কেউ রাজি নয়। শুধুই ট্যাগ।
ছাত্র শিবিরের উচিত পূর্বের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসা। মানুষের সমলোচনার জবাব সমলোচনার মাধ্যমে দেওয়া। মানুষ সমলোচনা করবে এটাই সস্বাভিক কিন্তু তাকে আঘাত করে জবাব দিতে হবে এটা সঠিক নয়।
এক এক জায়গায় একেক রকম নিউজ,কেউ লিখেছে নারী কেলেংকারী আবার কেউ বলছে ফে বুর ষ্টেটাস! আসল নিউজ প্রকাশ করা হোক। এখানে শিবিরের সভাপতি র নাম উল্লেখ করা হয়েছে, এটা কি শুনে না কি দেখে? শিবিরের সভাপতি যদি জড়িত থাকে তাকে সংগঠন ঘেকে বহিষ্কার করা হোক। আর যদি মিথ্যে রিপোর্ট হয় তবে তাকেও আইনের আওতায় আনা হোক।
নিউজ সম্পূর্ণ তৈরি করা, শিবিরের নামে অপবাদ দিতে নিউজ করা হয়েছে।
পরমত সহিষ্ণুতার যখন এতই আকাল তখন সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্র রাজনীতি টোটালি উঠিয়ে দেয়া হোক।
গুপ্ত সংগঠনের এরা যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে এটা তাঁর একটা নমুনা মাত্র। সৎ সাহস থাকলে এরা প্রকাশ্যে রাজনীতি করতো।
ভালো করে খবর নিলে দেখা যাবে ছাত্রলীগের ওরাএখন নানান ভাবে ডুকে মানুষ মারছে।
গুপ্তচর
পুলিশ কী এখন ছাত্রলীগ থেকে ছাত্রশিবির হয়ে গেল নাকি? গা-ছাড়া ভাব!