ঢাকা, ১৭ মে ২০২৫, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

‘ডেভিল হান্ট’ নিয়ে যেসব প্রশ্ন জারি আছে

স্টাফ রিপোর্টার
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার
mzamin

সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের দমনে সারা দেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বাহিনীগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে শনিবার এমন অভিযান শুরুর সিদ্ধান্ত নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অতীতে হওয়া এমন অভিযানের মতোই ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আইন বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, অতীতে এমন অভিযান করার সময় যেসব প্রশ্ন উঠতো এবারের এই অভিযান নিয়েও প্রশ্ন জারি আছে।

তারা বলছেন, অভিযানের নাম নিয়ে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ সন্দেহভাজন হিসেবে কাউকে ধরা হলেও সে ‘ডেভিল’ বা শয়তান আখ্যা পাচ্ছে। অপরাধী ধরা হলে আইনেই তার বিচারের ব্যবস্থা আছে। ‘ডেভিল’ বা শয়তানের বিচারের কথাতো কোনো আইনে উল্লেখ নেই। সরকারের পক্ষ থেকে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ঘোষণার পর থেকেই এ নিয়ে নানা আলোচনা। বিশেষ করে অভিযানের নাম নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। অভিযানের প্রথম দুইদিনে দেখা গেছে নিয়মিত এবং সাধারণ আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই গ্রেপ্তারকৃতরা কী ডেভিলের সংজ্ঞায় পড়বেন? 

বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক এ বিষয়ে বলেন, ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নাম দিয়ে অভিযান চালানো মোটেও যৌক্তিক নয়। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কে দোষী আর কে নির্দোষ তা নির্ধারণ করার এখতিয়ার তো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের না। এটি তো আদালতে নির্ধারিত হবে। এভাবে ডেভিল বা শয়তান বলে কারও অভিযান চালানো আইনের শাসনের পরিপন্থি। 
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নাম যাই হোক এই অভিযান নিয়ে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। বিতর্কও তৈরি হয়েছে। এর আগে অপারেশন ক্লিনহার্ট নিয়েও বিতর্ক হয়েছিল। 

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রার শুরু থেকেই বড় রকমের ঝুঁকি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। যে কারণেই সরকারকে হয়তো এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। তবে এর মধ্যদিয়ে কোনো অবস্থাতেই যেন মানবাধিকার লঙ্ঘন না ঘটে সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। যাদের আটক করা হয়েছে, কোন মানদণ্ডে আটক করা হয়েছে তা প্রকাশ এবং তাদের জন্য ন্যায়বিচারও নিশ্চিত করতে হবে। 

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এ বিষয়ে বলেন, ডেভিল তো অনেক বড় বিষয়। ফৌজদারি মামলার যারা আসামি তারা এই ডেভিলের সংজ্ঞায় পড়ে কিনা এই প্রশ্নতো উঠবেই। এ ছাড়া ডেভিলের বিচারের জন্য কোনো আইন আছে কিনা? যাদের ডেভিল বলে তারা মনে করছে তাদের প্রায় সবাই তো দেশ ছেড়ে চলে গেছে। যাদের এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হলো তারা সবাই ডেভিল কিনা এটাও একটা প্রশ্ন। তিনি বলেন, মানুষ প্রশ্ন করতেই পারে যে তারা বুঝে এই ডেভিল শব্দ ব্যবহার করেছে কিনা, নাকি এর পেছনে গোপন কোনো এজেন্ডা আছে। 

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, অভিযানের নামে যে ডেভিল যুক্ত করা হয়েছে এই ডেভিলের সংজ্ঞা কি? তিনি বলেন, এ ধরনের অভিযানের বিষয়ে এমন নানা প্রশ্ন অতীতে যেমনটা ছিল এখনো জারি আছে। বিশেষ করে মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টি। কোনো ব্যক্তির বিনা বিচারে কোনো ধরনের শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, অতীতের সরকারের মতোই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এটা আমরা মনে করি না। তাই তাদের যেকোনো পদক্ষেপ চিন্তা করেই নিতে হবে। এই অভিযানে যাতে কারও মানবাধিকার লঙ্ঘন না হয় তা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।

 

পাঠকের মতামত

পরবর্তী অভিযান দালাল হান্ট

ইমাম হোসেন
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ২:০৫ অপরাহ্ন

পরবর্তী অপারেশনের নাম হবে অপারেশন সুশীল হান্ট !

Shams
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ১২:২৫ অপরাহ্ন

হাসিনার প্রেতাত্মা যারা দেশে অশান্তি শৃষ্টির পায়তারা করছে তাদের জন্য ডেভিল শব্দটা ১০০% সঠিক হয়েছে।

Nasir
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ১২:১৫ অপরাহ্ন

৫ই আগষ্টের পূর্বে ড. শাহদীন মালিক, ইফতেখারুজ্জামান, জোনাইদ সাকি এবং মাহমুদুর রহমান মান্নাদের কথা মধুর মতো মনে হয়েছে। সবসময়, তারা মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলেছেন। এখন কি তারা ফ্যাসিষ্ট হাসিনার সহযোগী হয়ে গেল?

মোঃ শাহ আলম (সবুজ)
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন

এ ধরণের নামগুলো সচরাচর একটা প্রতীকী শব্দ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। যেমন কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন।

মোবারক হোসেন
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ১০:১৭ পূর্বাহ্ন

এই সূশীলরা যখন হাসিনা " অপারেশন ফ্লাশ আউট" নাম দিয়ে হেফাজতের অসংখ্য আলেম ওলামাদের হত্যা করে তখন মুখে তালা দিয়ে বসেছিল। এ ধরনের অপারেশনে নামটা একটা কোড হিসাবে দেয়া হয়। ইউনুস সরকারের প্রতি টি কাজেই ভুল ধরার পেছনে হয়তো কোন মনবেদনা থাকতে পারে।

Zuhuri
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯:০০ পূর্বাহ্ন

হাসিনার প্রেতাত্মা যারা দেশে অশান্তি শৃষ্টির পায়তারা করছে তাদের জন্য ডেভিল শব্দটা ১০০% সঠিক হয়েছে।

মায়াফুজ
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ৮:১৯ পূর্বাহ্ন

ইহা একটি নাম মাত্র - তাহা লইয়া এত মাথা ব্যাথা কেন? ধরুন ইহার নাম যদি হইত 'সাধক - দরবেশের খোঁজে' Operation Saint Hunt মানাইত?

জনতার আদালত
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ৭:৫৯ পূর্বাহ্ন

ডেভিল বা শয়তান তো সবচেয়ে মহা অপরাধী। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনাতে সমস্যা হবে কেন। কথা হচ্ছে সঠিক ডেভিলই যেন ধরা হয়। কুমিল্লার তৌহীদের মত ঘটনা যাতে যৌথবাহিনী না ঘটায়। যৌথবাহিনী মানে দায়মুক্ত কোন বাহিনী নয়।

মোঃ হেদায়েত উল্লাহ
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ৭:৫৬ পূর্বাহ্ন

যারা আকারে ইংগিতে প্রশ্ন তুলছে তারাই এতোদিন দাবি করে আসছে এধরনের একটা অভিযাননচালানোর জন্য -- এরা কোনটাকে ভালো বলে তা বুজাও মুশকিল

এমএস আলম
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ৭:৫০ পূর্বাহ্ন

অভিজান না করলেও প্রশ্ন করলেও প্রশ্ন তাহলে সরকার যাবে কই

jahangir Alom
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ১:০১ পূর্বাহ্ন

নাম পরিবর্তন করে corrupted hunt দেওয়া হোক।

Md. Azijur Rahaman
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ১২:১৫ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status