প্রথম পাতা
নাহিদ-আসিফরা পদত্যাগ করলেও সরকারে থাকতে পারেন ছাত্র প্রতিনিধি
স্টাফ রিপোর্টার
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার
ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের পর থেকে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের বিষয়টি সামনে এসেছে। ছাত্র আন্দোলনের নেতারা নতুন দল গঠন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছেন। জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে শিক্ষার্থীরা সংগঠিত হলেও রাজনৈতিক দল হবে ভিন্ন। যেখানে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতারা নেতৃত্বে থাকবেন। এ ছাড়া সরকারে থাকা ছাত্রদের প্রতিনিধিরাও থাকতে পারেন। দলের নেতৃত্বে আসার আগেই সরকার থেকে পদত্যাগ করবেন ছাত্র প্রতিনিধিরা। তাদের একজন ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আসতে পারেন।
বর্তমানে সরকারে রয়েছেন ছাত্রদের তিন উপদেষ্টা । তারা হলেন- তথ্য ও সম্প্রচার এবং আইসিটি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। এ তিনজন ধাপে ধাপে সরকার থেকে পদত্যাগ করে দলে যোগ দিলে সরকারে ছাত্রদের অংশীদারিত্ব কীভাবে থাকবে সে বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। ছাত্ররাও বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন। এক্ষেত্রে তিন উপদেষ্টা পদত্যাগ করলেও সরকারে ছাত্রদের প্রতিনিধি নিশ্চিত করতে চান তারা। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অভ্যন্তরে আলোচনা হচ্ছে বলে সূত্র জানিয়েছে। ছাত্ররা চাইছেন সরকারে তাদের অংশীদারিত্ব একেবারে শেষ না হোক। সে ক্ষেত্রে কীভাবে সরকারের সঙ্গে ছাত্ররা কাজ করতে পারে সে বিষয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হচ্ছে সংগঠন দু’টির অভ্যন্তরে। যেটি নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে সরকারের উচ্চমহলেও।
জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব মানবজমিনকে বলেন, ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক উদ্যোগে যুক্ত হতে সরকারে থাকা ছাত্রদের প্রতিনিধিদের মধ্যে এক-দুই জন উপদেষ্টা পদত্যাগও করতে পারেন। এক সঙ্গে দুই জন না তিন জন পদত্যাগ করবেন- সেটি চূড়ান্ত হয়নি। হলে বলা যাবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। একজন নতুন করে উপদেষ্টা পরিষদে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আশা করি একজন উপদেষ্টা পরিষদে আসবেন। তবে এখনো পর্যন্ত তারা (সরকারে থাকা বর্তমান তিন উপদেষ্টা) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাননি। জানালে বলা যাবে।
সুত্র মতে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল আসছে। নতুন কয়েকটি মুখ যোগ হতে পারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় নাগরিক কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন, তিন উপদেষ্টা ধাপে ধাপে পদত্যাগের করলে সরকারে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব কীভাবে থাকবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আমরা চাচ্ছি আমাদের কোনো প্রতিনিধি সেখানে থাকুক। যিনি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ ছিলেন না বা হবেন না। যাই করা হোক সবার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সেটি নির্ধারণ করা হবে। অভ্যুত্থানের কোনো অংশীজনের সঙ্গে বিরোধ যেন সৃষ্টি না হয় সে বিষয়েও সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।
জানা গেছে, দল ঘোষণার আগ মুহূর্তে পদত্যাগ করতে পারেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। যিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আসবেন। এরপর দ্বিতীয় ধাপে পদত্যাগ করবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। আর উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সবার শেষে পদত্যাগ করতে পারেন।
এদিকে সংস্কার কমিশনসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিভাগে ছাত্রদের প্রতিনিধি রয়েছে। যারা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে সরকারে ভূমিকা রাখছেন। রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে তারা নিজেকে যুক্ত করছেন বিভিন্ন নীতি নির্ধারণী প্রক্রিয়ায়। অন্যদিকে দল গঠনের প্রক্রিয়াও অনেকটা গুছিয়ে এনেছেন ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ঘোষিত হতে পারে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল। শুরুতে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে পরবর্তীতে কাউন্সিলের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবেন তারা। ছাত্র আন্দোলন থেকে গড়ে ওঠা প্ল্যাটফরম জাতীয় নাগরিক কমিটি এ ক্ষেত্রে নেতৃত্বের ভূমিকায় রয়েছে। যদিও নাগরিক কমিটি সরাসরি রাজনৈতিক শক্তি হবে না। তারা প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে।
দল গঠনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সারা দেশে আড়াই শতাধিক কমিটি দিয়েছে নাগরিক কমিটি। দল ঘোষণা আসার আগে সেটিকে চার শতাধিকে উন্নীত করতে চায় সংগঠনটি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনও জেলায় জেলায় কমিটি দিচ্ছে। এ ছাড়া নতুন দলের নাম ও দলীয় প্রতীক নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষেরও মতামত নেবে নাগরিক কমিটি। যে কেউ অনলাইন অফলাইনে তাদের মতামত দিতে পারবেন। এ ছাড়াও ছাত্ররা দল গঠনের আগে বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন। উদ্দেশ্য, তাদের নতুন দলে ভেড়ানো।
পাঠকের মতামত
ছাত্ররা দল গঠন করলে স্বাগত জানাই কিন্তু কোন কারনে বা অজুহাতে তারা কেউ দলে থাকতে পারবে না। এটা একদম পরিষ্কার বক্তব্য। ধন্যবাদ।
ক্ষমতার লোভ।।।।।।।।।
no election
পুরান পাগলের ভাত নাই, নতুন পাগলের আমদানি।
যারা সরকারে থাকবে তারা রাজনীতিতে যুক্ত হতে পারবে না - কথা কিলিয়ার
তাহলে এই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, আবার আন্দোলন করতে হবে
নতুন সকালে একটা নতুন সূর্য উঠবে এটাই স্বাভাবিক। বিপ্লবী ছাত্র সমাজ একটা নতুন দল গঠন করবেন এটা ভালো। তবে তাদের এ যাত্রায় কোন দক্ষ রাজনীতিককে দেখতে পাচ্ছি না। যে কারনে তারা বিভিন্ন যায়গায় বিবাদে জড়াচ্ছে। নেতৃত্বের জন্য দক্ষ ক্লীন ইমেজের কিছু নেতা যারা চব্বিশের চেতনা ধারন করেন, এমন নেতা হায়ার করা দরকার।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সবাই ছাত্র হলে ও পুরো রাজনীতিবিদ। সুতরাং তাদের একজন ও যদি নির্বাচনকালীন সময় সরকারে থাকেন তবে সেটা নিরপেক্ষ সরকার থাকবে না। এটাকে ইস্যু বানিয়ে ভবিষ্যতে পরাজিত দলগুলো আন্দোলন শুরু করবে। তাই জটিলতা ও সংঘাত এড়ানোর জন্য তাদের নির্বাচনকালীন সরকারে থাকা উচিত নয়।
পদত্যাগ ? জনগণ চাচ্ছে, যারা ২৪ এর নেতৃত্বদানকারী, ওরা সবাই যেন থাকে, আর সেখানে ওরা পদত্যাগ করছে! ওদের কে বুঝানোর মত কেউ নেই ?
সফলতা কামনা রইল। আশা করি পরিচ্ছন্ন একটা দল হবে। কোন লোভ লালসা তাদের স্পর্শ করবেনা। জনগণের কল্যান ও দেশের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করবে।
কিংস পার্টি
প্রতীক দেওয়া হোক নৌকা কারন আওয়ামী লীগ তো ব্যান্ড হোয়ে যাবে।
উপদেষ্টা পরিষদে নিয়োগ আর কত দিন চলবে? এক্স পদত্যাগ করে ওয়াই যোগ দিলে জেই লাউ সেই কদুইতো।
ছাত্রদের নতুন দলের সফলতা কামনা করছি। কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা ভাগিয়ে আনার কৌশল হলে সমালোচনার ক্ষেত্র তৈরি হতে পারে! আর স্বেচ্ছায় কেউ আসতে চাইলে ভিন্ন কথা!
দেখুন যেখানে সাহেব বলল, সে ছাত্রদেরকে দল গঠন করার উৎসাহ দিচ্ছে সেখানে।।। ইনুস সাহেবের কি ক্ষমতায় থাকা আর মানায়।।।???
এ এক আজব হাস্যকর অবস্থা। পদত্যাগ হতে হবে একসাথে অবিলম্বে, যেহেতু রাজনৈতিক চিন্তা, চেতনা তারা শুরুতেই সক্রিয়ভাবে ধারন করে আসছেন। শুধু প্রকাশ করেছেন ইচ্ছাকৃত দেরিতে, নানাভাবে নির্বাচন প্রলম্বিত করার চেষ্টা করেছেন। যাই হোক সরকারে ছাত্র প্রতিনিধি রাখতে হলে তা হতে হবে বিএনপি সহ সকল রাজনৈতিক দলের সমঝোতার ভিত্তিতে। মুদ্রার এ পিঠ ও পিঠ যেন না হয়।