শরীর ও মন
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে কাজ করছে দিগন্ত মেমোরিয়াল ক্যান্সার ফাউন্ডেশন
স্টাফ রিপোর্টার
(২ সপ্তাহ আগে) ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ৬:৫৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৬:৫৯ অপরাহ্ন

আজ বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানানভাবে দিবসটি উদ্যাপিত হচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে সোমবার দিগন্ত মেমোরিয়াল ক্যান্সার ফাউন্ডেশন রাজধারীর সেগুনবাগিচাস্থ বাগিচা রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সহ-সভাপতি বিশিষ্ট ইউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. এম. ফখরুল ইসলাম। আরওউপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশিষ্ট গাইনিকোলজিষ্ট অধ্যাপক সায়েবা আক্তার, জাতীয় ক্যান্সার হাসপাতালের প্রাক্তন পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা, দি বারাকাহ ফাউন্ডেশন এর ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. রুহুল আমিন, বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের হেড বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) প্রফেসর ডা. জয়নুল ইসলাম, বিশিষ্ট গাইনী ক্যান্সার রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বেগম রোকেয়া আনোয়ার, ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. জি এম আবদুস সালাম, ইনসাফ বারাকাহ কিডনি এন্ড জেনারেল হাসপাতালের এডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আলতাফ হোসেন, জেনারেল ম্যানেজার মো. মোজাফর হাসান খান মজলিস প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে ক্যান্সার দিবস উপলক্ষ্যে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন দিগন্ত মেমোরিয়াল ক্যান্সার ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মো. নওফেল ইসলাম। তিনি দিগন্ত মেমোরিয়াল ক্যান্সার ফাউন্ডেশনের পরিচিতি তুলে ধরেন। প্রতিষ্ঠানটির জন্ম হয়েছে ২১শে মার্চ ২০০৩ সালে। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে ক্যান্সার রোগীদের পাশে দাঁড়ানোর কর্মসূচি নিয়েই এ প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানটি একটি ক্যান্সার হোম পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠানটি হাসপাতালে থাকার মতো করে ক্যান্সার রোগীদের থাকা, চিকিৎসার জন্য প্রতিদিন নিজস্ব এ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে নিয়মিত যাতায়াত, কাউন্সেলিং, নিয়মিত নার্স ও চিকিৎসকের মাধ্যমে ফলো-আপ, দুই বেলা পুষ্টিকর নাশতা, তিন বেলা নিয়ম মাফিক খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকে। চিকিৎসক দম্পত্তির ক্যান্সার আক্রান্ত পুত্রের চিকিৎসা তহবিলের অব্যবহৃত অর্থ (ব্যাংকে রাখা এফডিআরকৃত অর্থের লভ্যাংশ), সদস্যদের চাঁদা ও অনুদান এবং যাকাত থেকে পাওয়া অর্থ এ প্রতিষ্ঠানটির আয়ের উৎস। ২০২৪ এ প্রতিষ্ঠানটি ১,৪২০ জন রোগীকে দীর্ঘ মেয়াদে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছে। প্রতিষ্ঠানটি রেজিস্ট্রিকৃত, এনবিআর থেকে রিবেট পাওয়া ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদিত।
সংবাদ সম্মেলনে দেশের ক্যান্সারের ভয়াবহতা ও ক্যান্সার চিকিৎসার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরা হয়। বক্তারা মতামত দেন যে, ক্যান্সার চিকিৎসায় সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ জরুরি। সকল পর্যায় থেকে ক্যান্সার সচেতনতা বৃদ্ধি, ক্যান্সারের লক্ষণসমূহের ব্যাপকভাবে পরিচিতি, ক্যান্সার স্ক্রিনিং, রোগ নির্ণয় সহজলভ্যকরণ, উপযুক্ত রোগ নির্ণয়কারী জনশক্তি (প্যাথলজিস্ট) তৈরি, অত্যন্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্যান্সার পরিসংখ্যান, ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক, নার্স, রেডিও ফিজিসিষ্ট ও অন্যান্য জনবলের প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন-
১. ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নেয়া।
২. ক্যান্সার রোগীদের মানবিক মূল্যবোধ থেকে মূল্যায়ন করা।
৩. ক্যান্সার চিকিৎসাকে সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করা।
৪. ক্যান্সার রোগীদের জন্য প্রতিষ্ঠান সমূহে বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা করা।
৫. যাতায়াত যেমন, বাসভাড়া, ট্রেন ভাড়া, বিমান ভাড়া ইত্যাদিতে ৭৫% ছাড় দিয়ে ২৫% ভাড়া নির্ধারণ করা।
৬. দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিভাগীয় ক্যান্সার হাসপাতালসমূহ বাস্তবায়ন করা।
৭. জাতীয় ক্যান্সার হাসপাতালসহ সমুদয় ক্যান্সার চিকিৎসা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের জনবল, যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য উপকরণ সরবরাহের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।
৮. ক্যান্সার নির্ণায়ক কেমিক্যাল রি-এজেন্টস্ ও রেডিওথেরাপী মেশিন, ঔষধ ইত্যাদির উপর সরকারি শুল্ক প্রত্যাহার করা।
৯. ক্যান্সার চিকিৎসাকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় নিয়ে আসা।
১০. ক্যান্সার রোগী নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া।