অনলাইন
কলকাতায় চাঞ্চল্যকর নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় এক সিভিক ভলান্টিয়ার দোষী সাব্যস্ত
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা
(২ সপ্তাহ আগে) ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, শনিবার, ৩:৪৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:১৬ অপরাহ্ন
গত বছরের ৯ আগস্ট কলকাতার আরজি কর হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সেমিনার হল থেকে এক নারী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
সেই ঘটনার ৫ মাস ৯ দিন পরে শনিবার নারী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের চাঞ্চল্যকর মামলায় এককভাবে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস। আগামী সোমবার দোষীর সাজা ঘোষণা করা হবে বলে বিচারক জানিয়েছেন। সাজা সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড বা সর্বনিম্ন যাবজ্জীবন কারাবাস হতে পারে
ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের পর মৃত্যু) এবং ১০৩ (১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে।
গত ৪ নভেম্বর চার্জ গঠনের পরে ১১ নভেম্বর থেকে আরজি কর মামলার শুনানি চলেছে। ৬৬ দিনের বিচারপ্রক্রিয়ায় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের আইনজীবী, নির্যাতিতা চিকিৎসকের আইনজীবী, মূল অভিযুক্ত সঞ্জয়ের আইনজীবী, সাক্ষ্যদের বক্তব্য শুনেছেন। আর সেইসব সওয়াল, পালটা সওয়াল, প্রমাণ এবং সাক্ষ্যের ভিত্তিতে শনিবার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক।
তবে এই রায় নিয়ে খুশি নন মৃতা চিকিৎসকের পরিবার। তেমনি অসন্তুষ্ট চিকিৎসক মহল ও নাগরিক সমাজ। হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে ন্যায় বিচার চেয়ে নজিরবিহীন স্বতস্ফূর্ত ‘নাগরিক আন্দোলন’দেখেছে কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গ। ঘটনাস্থল থেকে প্রমাণ লোপাটেরও অভিযোগে সোচ্চার হয়েছিলেন সকলে।
প্রথমে ঘটনার তদন্তে নেমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একাধিক ‘বায়োলজিক্যাল’ এবং ‘ডিজিটাল’ তথ্যপ্রমাণও সংগ্রহ করেছিল তারা। পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তের ভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। সিবিআইও তদন্ত চালিয়ে আটক সিভিক ভলান্টিয়ারকেই ‘একমাত্র অভিযুক্ত’ হিসাবে বর্ণনা করে আদালতে চার্জশিট পেশ করে। সেই চার্জশিটের ভিত্তিতে মামলার চার্জ গঠন করে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল গত ১১ নভেম্বর। তার দু’মাস পর রায় ঘোষণা হয়েছে। তবে ধর্ষণ-খুনের মামলায় তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকেও গ্রেপ্তার করেছিল সিবিআই। যদিও তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ফলে ওই মামলায় সন্দীপ এবং অভিজিৎ দু’জনেই জামিন পেয়েছেন।
তবে আরজি করের নারী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনাকে বিরল থেকে বিরলতম হিসেবে চিহ্নিত করে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের সর্বোচ্চ শাস্তিই চেয়েছে সিবিআইয়ের আইনজীবী। অভিযুক্ত সঞ্জয় এদিন আদালতে ফের দাবি করেছেন যে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তদন্তের একাধিক জায়গায় ফাঁক আছে। ঘটনার পরে পুরো বিষয়টি সাজানো হতে পারে বলেও দাবি করেন আটক সিভিক ভলান্টিয়ারের আইনজীবী।
এদিকে বিচার চলাকালীনই অসন্তোষ প্রকাশ করেন নির্যাতিতার পিতা-মাতা। তারা দাবি করেছেন, মেয়ের ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় সঞ্জয় দোষী। কিন্তু সঞ্জয় একা দোষী নয়। ওই ঘটনায় আরও অনেকে যুক্ত বলে তারা মনে করেন।
কত তাড়াতাড়ি নির্ভুল বিচার কাজ হতে পারে ভারতের বিচার বিভাগ দেখালো।আমরা কেন দেখাতে পারবোনা জুলাই গনহত্যার বিচার দ্রুত করতে ?জুলাই গনহত্যার বিচার দ্রুত করা হোক।