ঢাকা, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০ শাবান ১৪৪৬ হিঃ

শরীর ও মন

ত্বকে তিল হলে বা দেখা গেলে

ডা. জেসমীন আক্তার লীনা
১৫ জানুয়ারি ২০২৫, বুধবার

তিল হচ্ছে  ত্বকে কালো বা বাদামি  ক্ষুদ্র চিহ্ন। এটি আকারে ২-৪ মিমির মতো গোলাকার, ত্বকের সমান স্তরে অবস্থান করে এবং মূলত ত্বকের কোনো ক্ষতিসাধন করে না। তবুও  অনেকেই  এর থেকে পরিত্রাণ চেয়ে থাকেন। যদিও এটা কোনো রোগ বা শারীরিক সমস্যা নয়, এটি অনেকের কাছেই বিব্রতকর। ফর্সা ত্বকে এ দাগ বেশি পরিলক্ষিত হয়। এটা অনেকটাই বংশগত, পরিবারের কারও এ সমস্যা থেকে থাকলে আপনার হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ফ্রিকেলস সূর্য রশ্মিতে আরও বেশি প্রকট আকার ধারণ করে তাই সান এক্সপোজড জায়গাগুলোতে বেশি হতে দেখা যায়।
প্রকারভেদ: ফ্রিকেলস সাধারত দুই ধরনের হয়।
এফিলাইডস: সমতল এবং লালচে বাদামি রঙের হয়ে থাকে। মূলত গ্রীষ্মকালে দেখা দেয় এবং শীত আসলেই চলে যায়। এই রকমের  ফ্রিকেলস বংশগত হতে পারে।
লেনটিজাইন্স: লেনটিজাইন্স সম্ভবত ছোট ছোট ট্যানের দাগের মতো বাদামি বা কালো রঙের হতে দেখা যায়। এ ধরনের তিল এফিলাইডস থেকেও গাঢ় রঙের হয়। আর শীতকালে চলেও যায় না। বছরব্যাপী এটি আপনার সুন্দর ত্বকে রাজত্ব করে বেড়ায়। এটিও অনেকটা বংশগত সমস্যা ।
ফ্রিকেলস বা তিলের লক্ষণ: ফ্রিকেলস প্রধানত কালো বা বাদামি দাগ যা মুখের ত্বকেই বেশি হয়ে থাকে; বিশেষ করে নাকের দুই পাশের জায়গাগুলোতে। ফর্সা বা ফ্যাকাসে ত্বক এতে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। রোদের আলোতে ফ্রিকেলস আরও স্পষ্ট ও তীব্রভাবে পরিলক্ষিত হয়।
কারণসমূহ:
* তিলের আসল কারণ জেনিটিক্যাল। কারও পরিবারে বাবা-মা দু’জনের তিল থাকলে তার হবার সম্ভাবনা ৮০%। আর যে কোন এক জনের থাকলেও এ মাত্রা ৬০  থেকে ৭০ পারসেন্ট।
* রোদ ফ্রিকেলসের প্রধান শত্রু। অতিরিক্ত সূর্য রশ্মিতে ঘোরাঘুরির ফলেও হতে পারে। 
* হরমোনাল ইমব্যালেন্সের জন্যও  ফ্রিকেলস হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে বেশি পরিমাণ ইস্ট্রোজেন ক্ষরিত হয় ও ত্বকের উপরিভাগে মেলানিন সহ অন্যান্য পিগমেন্ট বাড়িয়ে দিয়ে  ফ্রিকেলস সৃষ্টি করে।
অনেকের মতে  ফ্রিকেলস কখনো পুরোপুরিভাবে সেরে উঠে না। আসলে এ কথা সঠিক নয়। পরিমিত চর্চায় এ সমস্যার সমাধান অবশ্যই সম্ভব। আগেই বলেছি ফ্রিকেলস প্রচলিত চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় ব্লিচিং উপাদান। এটি ত্বকের কালো দাগগুলোকে সাময়িক হালকা করে দেয় বা কারও কারও ক্ষেত্রে সমস্ত মুখকেই কালো করে দেয় ফলে  ফ্রিকেলস উপস্থিতি কম লক্ষণীয় হয়। তবে এটি যেহেতু ত্বকের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর এর ব্যবহার আস্তে আস্তে কমে আসছে। এখনকার প্রসাধনীগুলোতে ব্লীচের পরিবর্তে তরল নাইট্রোজেন, শক্তিশালী রাসায়নিক পিল, লেজার ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব  অনেক  ক্ষেত্রেই নিরাপদ। ফ্রিকেলসের জন্য কিছু  খাদ্য
যদিও এমন বিশেষ কোনো খাবার নেই যা ফ্রিকেলস সারিয়ে তোলে, তবু এমন কিছু খাবারের নাম এখানে দেয়া হলো যা আপনার ফ্রিকেলস সারানোর চিকিৎসায় সাহায্য করবে। টাটকা সবুজ শাক-সবজি, দুধ, ডিম, বীজ, ভিটামিন এ, বি, সি, ফ্যাটি এসিড ইত্যাদি নিয়মিত গ্রহণ করুন। দেখবেন ত্বকে আসবে প্রাকৃতিক জেল্লা।
করণীয়: যতটা সম্ভব রোদ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
যদি বের হতেই হয় তবে ভালোমানের এবং ব্র্যান্ডের সানব্লক ব্যবহার করুন। যখনই রোদে বের হবেন প্রতিবারই লাগিয়ে নিতে ভুলবেন না।
রোদে গেলে ছাতা, স্কার্ফ, বড় হ্যাট ব্যবহার করুন।
সুষম খাদ্যগ্রহণ করুন এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
অতিরিক্ত তিল দেখা গেলে আমাদের চেম্বারে আধুনিক চিকিৎসা নিতে পারেন।


লেখক: সহকারী অধ্যাপক (চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি), স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল
কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।
চেম্বার: আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিরপুর রোড, ধানমণ্ডি, ঢাকা, প্রয়োজনে-০১৭২০১২১৯৮২

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status