বিনোদন
অভিমান নিয়েই চলে গেলেন প্রবীর মিত্র
স্টাফ রিপোর্টার
৭ জানুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবারঅনেকটা অভিমান নিয়েই চলে গেলেন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেতা প্রবীর মিত্র। মৃত্যুর আগে মানবজমিনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি অভিমান ও আক্ষেপ প্রকাশ করেছিলেন। অসুস্থতা নিয়েই তিনি বলেছিলেন, কেউ আমার খোঁজ-খবর নেয় না। আমিও অসুস্থতার কারণে নিতে পারি না। তবে চলচ্চিত্রে এত বছর কাজের পরও যদি এমন অবস্থা হয়, তবে অভিমান তো হওয়ারই কথা! অবশেষে সেই অভিমান নিয়েই চলে গেলেন তিনি। রোববার রাত ১০টার পর রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। ৮১ বছর বয়সী প্রবীর মিত্র বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা নিয়ে ১৩ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শরীরে অক্সিজেন স্বল্পতাসহ নানা অসুস্থতায় গত ২২শে ডিসেম্বর তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। প্রবীর মিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তাই ইসলামী রীতিতেই তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল জোহরের নামাজের পর এফডিসিতে হয় তার প্রথম জানাজা। এরপর চ্যানেল আইতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয় প্রবীর মিত্রকে। প্রবীর মিত্রের তিন ছেলে ও এক মেয়ে। এর মধ্যে সামিউল নামে তার এক পুত্র মারা গেছেন। প্রবীর মিত্রের স্ত্রী অজন্তা মিত্র প্রয়াত হয়েছেন ২০০০ সালে। ১৯৪১ সালের ১৮ই আগস্ট চাঁদপুরের নতুনবাজার গুয়াখোলায় মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। তার পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন। স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। ১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথম প্রবীর মিত্র ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। যদিও চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৭১ সালের ১লা জানুয়ারি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে প্রবীর মিত্র নায়ক হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। পরে চরিত্রাভিনেতা হিসেবে কাজ করেও দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয় পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ্’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’ প্রভৃতি। তিনি চার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। এ ছাড়াও বাচসাসসহ নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন এ অভিনেতা।