ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থায় ৬৫ শিক্ষার্থী, যুক্ত হচ্ছে আরও ৬শ’

সুদীপ অধিকারী
১০ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার

যানজটের হাত থেকে রাজধানীবাসীকে স্বস্তি দিতে এবার স্থায়ীভাবে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছেন ৬৫ জন শিক্ষার্থী। দিন প্রতি ৫শ’ টাকা ভাতায় সকাল ৮টা থেকে চার ঘণ্টা করে দুই শিফ্‌টে কাজ করছেন এসব শিক্ষার্থীরা। পট পরিবর্তনের পরে নিজেদের উদ্যোগে ঢাকার রাস্তার যানবাহনের চাপ নিয়ন্ত্রণ করলেও এবার এসব পেশাদার ট্রাফিক সহযোগীদের জন্য সুনির্দিষ্ট ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। ডিএমপি জানায়, গত ২১শে অক্টোবর থেকে ৪ঠা নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানীতে ‘ট্রাফিক পক্ষ’- কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এই সময় রাজধানীর  ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে   প্রায় হাজার খানেক শিক্ষার্থী দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও গত ৫ই আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর যখন পুলিশ সদস্যরা কাজে যোগ দেয়নি তখন ঢাকার যানজট নিরসনে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী কাজ করেন। সেসব শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ৬০০ থেকে ৭০০ শিক্ষার্থীর নাম চূড়ান্ত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। চূড়ান্ত তালিকায় নাম আসা শিক্ষার্থীদের আগামী বছরের জুন মাস পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে ‘ট্রাফিক সহযোগী’- হিসাবে ডিএমপি’র তত্ত্বাবধানে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া ২১৪ জনের মধ্যে ৬৫ জন শিক্ষার্থী এরই মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। সকাল ৮টা থেকে ১২টা ও বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দুই শিফটে চার ঘণ্টা করে কাজ করা এসব শিক্ষার্থীর প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে সম্মানী পাবেন। ট্রাফিক পুলিশদের সহায়তাকারী এসব শিক্ষার্থীদেরকে যেন আলাদা করে চেনা যায় এজন্য তাদের জন্য বিশেষ জ্যাকেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। 
সরজমিন রাজধানী শাহবাগ, মৎস্য ভবন, বাংলামোটর মোড়, বিজয় সরণি, কাওরান বাজার, ফার্মগেট এলাকায় শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। এদের মধ্যে একজন সজীব হোসেন। 

শাহবাগ এলাকায় ট্রাফিকের দায়িত্বে পালন করা এই শিক্ষার্থীর গায়ে দেখা যায় ঢাকা মেপেট্রাপলিটন পুলিশের লোগো লাগানো বিশেষ জ্যাকেট। অফ হোয়াইট কালারের ওই জ্যাকেটে লেখা রয়েছে, ‘ট্রাফিক সহায়তাকারী ডিএমপি’। শাহবাগের চার পাশের রাস্তায় তার মতো আরও চারজন নিজেদের দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের সকলের গায়েই এই বিশেষ জ্যাকেট পরা। গাড়ির দিক পরিবর্তনের পাশাপাশি হেলমেট না পরা ও অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা মোটরসাইকেল চালকদের দাঁড় করিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। একই সঙ্গে এলাকাটির দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশের কাছে হস্থান্তর করছেন তারা। এসব শিক্ষার্থী বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর যখন রাস্তায় কোনো পুলিশ ছিল না তখনও তারা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেছেন। সে সময়ে রাস্তার ট্রাফিক ব্যবস্থা সম্পর্কে বেশকিছু জ্ঞান অর্জন করেছেন তারা। আর এখন প্রশিক্ষনের মাধ্যমে আরও ধারণা পেয়েছেন। সবমিলে দেশের জন্য কাজ করে গর্ব অনুভব করছেন তারা। বলেন, আমাদের জন্য মাত্র চার ঘণ্টা সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে করে আমাদের পড়া-লেখাতেও তেমন প্রভাব পড়বে না। 
এ বিষয়ে ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান বলেন, মূলত শিক্ষার্থীরা নগরবাসীকে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতন করার কাজ করেছেন। এ বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় যাদের নাম চূড়ান্ত করা হচ্ছে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়ার পরই ট্রাফিকের দায়িত্বে নিয়জিত করা হচ্ছে। গত ৪ঠা নভেম্বর ট্রাফিক পক্ষের শেষদিন থেকে প্রথম ধাপে রমনা ও তেজগাঁও এলাকায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত  ৬৫ জন শিক্ষার্থী দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। পর্যায়ক্রমে অন্য প্রশিক্ষিতরাও দায়িত্ব পালন শুরু করবেন।  তিনি বলেন, ঢাকার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া এসব শিক্ষার্থী যেন পড়া-লেখায় ক্ষতি না হয় এজন্য প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। 

ডিএমপি’র উপ-কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্‌স) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ৪ঠা নভেম্বর থেকে ট্রাফিক পরিচালনার জন্য প্রাথমিকভাবে ৬৫ জন প্রশিক্ষিত শিক্ষার্থীকে নিয়োজিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০জন শিক্ষার্থী সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এবং ৩৫ জন শিক্ষার্থী বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চার ঘণ্টার দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিদিন তারা প্রতি শিফটে ৫০০ টাকা করে পাবেন। ট্রাফিক আইন বিষয়ে প্রাথমিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থীকে পদায়নের পরিকল্পনা আছে আমাদের। অন্যরা পর্যায়ক্রমে যোগদান করবেন। তারা ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে যানজট নিরসনের প্রচেষ্টায় ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি পেশাদারভাবে কাজ করবেন বলে আশা করছি।

পাঠকের মতামত

তিন মাস পার হয়ে গেল এখন পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশ মেইন রোড গুলিতে অটো রিক্সা চলাচল বন্ধ করতে পারলো না। উনাদের অভিমান কি এখনো কাটেনি?

তৈমুর
১১ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার, ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন

সাবধান, সাবধান, সাবধান। আওয়ামী ড্রাইভারেরা ওদেরকে আঘাত করে ওদের জীবন ধ্বংস করতে পারে। সাবধান, সাবধান, সাবধান।

Niaz Mohammed Khan
১০ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ১:২৬ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status