শরীর ও মন
শীতের আগাম প্রস্তুতি চুল ও ত্বকের পরিচর্যা
অধ্যাপক ডা. এসএম বখতিয়ার কামাল
৯ নভেম্বর ২০২৪, শনিবারশীতকালে ত্বক ও চুলের মধ্যে চলে এক ধরনের বৈরী সম্পর্ক। এ সময়ে কারও পা ফেটে যায়, কারও ঠোঁট ফেটে যায়। যাদের ত্বক খুবই শুষ্ক তাদের হাতে, পায়ে এক ধরনের মাছের চামড়ার মতো ত্বকে দেখা যায়, যা খুবই বিব্রতকর। শীত এলে চুলে খুশকির প্রকোপ ব্যাপক রূপ ধারণ করে। মনে রাখতে হবে খুশকির সমস্যা চুলের জন্যও সমস্যা। তাই এসব রোগীদের শীত আসার সঙ্গে সঙ্গেই আগাম যত্নবান হওয়া দরকার। সাধারণত শীত মৌসুমে বাতাসে জলীয়বাষ্প কমে যায়, বেড়ে যায় ধুলাবালির প্রভাব। মূলত এই কারণেই চুল ও ত্বক রুক্ষ ও নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। যদি এ সময়ে চুল ও ত্বকের বাড়তি যত্ন নেয়া যায় তাহলে খসখসে ও রুক্ষ ত্বক ও চুল থাকবে লাবণ্যময় ও ঝরঝরে, সুন্দর আর সতেজ। সাধারণত এ সময় চুলে যে সমস্যাগুলো হয় তা লক্ষ্য করেই ব্যবস্থা নিতে হয়। এ সময় দেখা যায়, শুষ্ক ত্বকে খুশকির সমস্যা বেশি দেখা দেয় আর মাথার ত্বক তৈলাক্ত হলেও চুল শুষ্ক হয়ে যায়।
সাধারণত মাথার তৈলাক্ত ত্বকে লুকিয়ে থাকা খুশকির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় বা খুশকি ত্বকের সঙ্গে লেগে থাকে। মেডিকেটেড শ্যাম্পু বা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শ্যাম্পু ব্যবহার করলে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এ ছাড়া চুল ধুতে হবে নিয়মিত। শীতে অনেকেই প্রতিদিন গোসল করেন না। গোসলের জন্য শরীরে গরম পানি ব্যবহার করা হলেও মাথায় গরম পানি ব্যবহার করা যায় না। এজন্য অনেকে গোসলের সময় চুল ভেজান না। ফলে শ্যাম্পুও করা হয় না নিয়মিত। যা একেবারেই করা উচিত নয়; বরং এ সময় বাইরে অনেক বেশি ধুলাবালি উড়ে বলে রোজ চুল পরিষ্কার করা উচিত। ঠাণ্ডা পানি দিয়েই চুল ধোয়ার কাজ সেরে ফেলতে হবে। মনে রাখতে হবে শীতের তিন মাস নিয়মিত চুল ও ত্বকের পরিচর্যা আপনাকে করবে কর্মঠ ও প্রাণবন্ত।
চুলের যত্নে: এ সময় সময় রুক্ষ আবহাওয়ার কারণে মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করা ভালো। এক কাপ গরম পানিতে পাঁচ থেকে ছয়টা রিঠা সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন তা দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে পারেন। রুক্ষ চুল হলে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। যদি রোজই শ্যাম্পু করেন, তাই শ্যাম্পুর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নেয়া যেতে পারে। এরপর চুল ধুয়ে নিবিড় কন্ডিশনিং করুন।
চুলের রুক্ষতা রোধে করণীয়: চুলের রুক্ষভাব দূর করতে নিয়মিত তেল মাখতে হবে। অনেক সময় কী তেল মাখবেন বা ব্যবহার করবেন তা ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন। চুলে তেল দিয়ে বাইরে বের হওয়া ঠিক না, এতে আরও বেশি ময়লা জমবে চুলে। বাইরে বের হলে চুল ভালোমতো বেঁধে, ঢেকে রাখতে হবে।
খুশকির সমস্যা বেশি বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বিশেষ করে খুশকি এক ধরনের একজিমা। এর সংক্রমণে মাথার চামড়া উঠে যেতে পারে, অনেক সময় লালচে গুঁড়ি গুঁড়ি গোটা দেখা দেয়। চুলকালে এটি থেকে ঘা হয়ে যেতে পারে। এমন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া অল্প খুশকি দেখা দিলেই ভালোমানের খুশকিনাশক শ্যাম্পু নিয়মিত ব্যবহারেও ভালো ফল পাওয়া যায়।
লেখক: হেয়ার ট্রান্স প্লান্ট সার্জন ও চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ। চেম্বার-কামাল হেয়ার অ্যান্ড স্কিন সেন্টার, ফার্মগেট, গ্রিন রোড, ঢাকা। সেল-০১৭১১৪৪০৫৫৮।