প্রথম পাতা
সংবিধানে যেনতেনভাবে হাত দেয়া যাবে না
স্টাফ রিপোর্টার
৫ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবারসংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, সংবিধান জনগণের জন্য, জনগণই এর হেফাজত করবে। তবে সংবিধান সংশোধন করলে সাধারণ মানুষের মতামত যেন তাতে প্রতিফলিত হয়। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বার অডিটোরিয়ামে সংবিধান দিবসের এক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ড. কামাল হোসেন বলেন, জনগণকেও সতর্ক থাকতে হবে সংবিধান সম্পর্কে। যখনই মনে হবে ভুল হচ্ছে, তখনই সোচ্চার হতে হবে।
ড. কামাল হোসেন বলেন, সংবিধানের হেফাজতকারী জনগণ। তাই সংবিধান নিয়ে জনগণকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে। গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘সংবিধান জনগণের জন্য এবং জনগণই এটার হেফাজতকারী। প্রতিটি মানুষই কিন্তু ক্ষমতার মালিক হিসেবে ভূমিকা রাখি। আমরা যদি মনে করি যে, এভাবে সংবিধানের ব্যাখ্যা করা হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্ট ব্যাখ্যা করছে। কোনো ভুল হলে আমরা ধারণা রাখতে পারি। আমরা বিষয়টা তুলে ধরবো এবং একটা ঐক্যমত গড়ে তুলবো এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে যেটা করণীয় সেটা করা হবে। তিনি বলেন, জনগণের ভূমিকা হলো সতর্ক থাকা। যেভাবে সংবিধানের ব্যাখ্যা করা হবে, যেভাবে কোর্টের কাছে তুলে ধরা হবে, সব ব্যাপারে জনগণকে সতর্ক থাকতে হবে। সরকার যদি মনে করে যে, ভুল হয়েছে তাহলে ভুলকে যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিতে হবে যে ভুল হয়েছে।
সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানে হাত দেয়া যেতে পারে উল্লেখ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, কোনো ব্যক্তির কলমের খোঁচা দিয়ে সংবিধান বদলানো যাবে না। একজন ব্যক্তি যদি মনে করেন, প্রেসিডেন্টও যদি মনে করেন যে এটা ভুল, এটা তারও উচিত হবে না যে, কলমের খোঁচা দিয়ে এটাকে পরিবর্তন করা। জনগণের মতামতও জানতে হবে। যখন দেখা যাবে যে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার মত গড়ে উঠেছে, তখন সংবিধানে হাত দেয়া যেতে পারে। তিনি বলেন, সংবিধানের যে পবিত্রতার কথা আমরা বলি, মৌলিক আইনের যে কথা আমরা বলি, সব আইনের ঊর্ধ্বে সংবিধান। তাই যেনতেনভাবে এটাতে হাত দেয়া যায় না।
আলোচনায় অংশ নিয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সংবিধান বিশ্লেষক ড. শাহদীন মালিক বলেন, দেশ ও রাষ্ট্র চালাতে গেলে সব সরকারেরই সমস্যা হয়। কিন্তু সমস্যায় পড়ে এই যে এত বার, গত ৫২ বছরে বিভিন্ন নামে ১২ বার সরকার পদ্ধতির পরিবর্তন আমরা করেছি। এটা আমরা কেন জানি করেই চলেছি। এগুলো রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনা সম্পর্কে আমাদের অপরিপক্বতার বহিঃপ্রকাশ। সমস্যায় পড়লেই আমরা সমাধান খুঁজি সরকার পদ্ধতি পরিবর্তনের। এটা পৃথিবীর আর কোথাও হয় না।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এম. মাহবুব উদ্দিন খোকন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ। ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, আগে যে কয় বার সংবিধান সংশোধন হয়েছিল, তার বেশির ভাগই হয়েছে শাসকের ইচ্ছায়, জনগণের ইচ্ছে অনুযায়ী নয়। সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সংবিধান রাষ্ট্রীয় দলিল। দলীয় বা ব্যক্তি স্বার্থে যদি সংবিধান পরিবর্তন করতে চায়, তাতে লাভ হবে না। যারা সংবিধান সংশোধন করতে চান, তাদের উচিত সকল রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনা করা।
জাতীয় অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, সংবিধান ৫৩ বছর আগে প্রণয়ন হয়েছে। কামাল হোসেন তখন ছিলেন তরুণ আইনজীবী। ৫৩ বছর পর সংবিধানের বানান এখনো ভুল। যা তৈরি করা হয়েছিল তার আর অবিকল নেই। সরকার বা শাসকরা তাদের স্বার্থে এটি করেছে। সংবিধানের নাম ভুল আছে। এদেশে রাজা নেই রানী নেই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধান হবে না। একশ’ বছর আগে গণতন্ত্র ছিল। এখন সেটি নেই।
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সংবিধান নিয়ে যে বিতর্ক আসছে, তা আমাদের সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমি নির্বাচনের জন্য কালো মেঘ দেখছি। এখন সংবিধান কিছু করলে অ্যাপ্রুভ করবে কে? এসব আলোচনা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে। তিনি বলেন, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা চাই, কথায় নয় কাজে। ব্যক্তি স্বার্থে কিংবা দলীয় স্বার্থে সংবিধান সংশোধন করলে তা টেকে না।
constitution is not holy quran. mind it .
সংবিধান যদি মানুষের জন্যই হয় তাহলে সবার আগে তাদের মতামত নিতে হবে তারা কি কি চায় তারপর তাদের চাহিদার প্রতিফলন করতে হবে সহজ হিসাব।
ভাই সব আইনই ভাল শুধু আমরাই ভাল না কি হবে আইন পরিবর্তন করে যদি আমরা আইন না মানি আমরা পরিবর্তন না হই
মনে হচ্ছে মাথা ব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলতে হবে তা হলে মাথা ব্যথা আর হবে না
কিন্তু ৭২এর সংবিধানতো বাংলাদেশের জনগণের ধারা অনুমোদিত নয়, এটা অনুমোদন করেছিল পাকিস্তান জামানায় ৬৯এর নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের দ্বারা। এটাকে কিভাবে বাংলাদেশের বৈধ সংবিধান বলে বিবেচনা করি?...এটাও চাপিয়ে দেওয়া সংবিধান।
বাংলাদেশের সংবিধান এখন স্কুল এর পাঠ্যপুস্তক এর মত হয়ে গেছে, যার অসুবিধা হয় সেই চেঞ্জ করে ! আরে ভাই এইটা অনেক জীবন, অনেক ত্যাগ আর অনেক রক্তের বিনিময়ে পাওয়া সংবিধান ! এইটা অনেক অনেক বছর ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে পাওয়া একটি সংবিধান, কেউ আসলো সরকার গঠন করলো মন চাইলো পরিবর্তন করে দিলাম ! এমন হয়না ভাই, সংবিধান পরিবর্তন করতে হলে একটা দেশের সব দলের মতামত লাগে, জনগণের মতামত লাগে তার পর সংবিধান পরিবর্তন করা যায় ! আপনি যেইটা করতে চাচ্ছেন সেটার প্রতি মানুষের সমর্থন থাকলে সেই পরিবর্তন টিক সই হবে, না হয় আজ আপনারা করলেন কাল নির্বাচিত সরকার এসে সব বাতিল করে দেবে !
সংবিধান রচিত হয় মানুষের জন্য। তাই এমন সংবিধান ভুল থেকে সংশোধন করতে হবে যেন সংবিধান হতে মানুষ সুফল পাই। না হয় সংশোধন করার কোন যুক্তি আসবে না।
সংবিধান মানুষের জন্য। সংবিধানের জন্য মানুষ নয়। মানুষের চাহিদার আলোকে মানুষের কল্যানের জন্য যদি হয় অবশ্যিই সংশোধন করতে হবে ।
ওরে বাবা!