প্রথম পাতা
আন্দোলনের সঙ্গীদের নিয়ে নির্বাচনী ছক বিএনপি’র
কিরণ শেখ
৩ নভেম্বর ২০২৪, রবিবারআগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ভোটের কৌশল ও প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এরইমধ্যে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল ও জোটের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে লড়ার বার্তা দিচ্ছে দলটি। তাদের সংবিধান, রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার এবং অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নে তৃণমূলে যাওয়ারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল এবং জোটের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে বৈঠকে এসব বার্তা দেয়া হয়। নির্বাচনে তারা ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবে নাকি দলীয় প্রতীকে ভোটে অংশগ্রহণ করবেন তা এখনো ঠিক হয়নি। নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হলেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ ছাড়া নির্বাচনের পর জাতীয় সরকার গঠনের বিষয়েও বিএনপি’র হাই-কমান্ড থেকে সমমনা দলগুলোকে বার্তা দেয়া হচ্ছে।
যুগপৎ আন্দোলনের দল ও জোটের শীর্ষ ৫ জন নেতার সঙ্গে কথা হয় মানবজমিনের। তারা জানান, বিএনপি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল ও জোট নির্বাচনে একসঙ্গে অংশগ্রহণ করবে। এক্ষেত্রে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন, তারা চাইলে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করতে পারবেন। আর যেসব দলের নিবন্ধন রয়েছে, তারা চাইলে নিজেদের প্রতীকে নির্বাচন করবেন। এক্ষেত্রে বিএনপি তাদের সর্বোচ্চ সমর্থন দেবে। আর এবার তরুণ প্রার্থীদের সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেবে বিএনপি। বিএনপি’র একসময়ের জোটসঙ্গী জামায়াত সরকারবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
নির্বাচনে জামায়াত কি অবস্থানে থাকবে এ নিয়ে এখনো চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি। দলীয় সূত্র জানায়, পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর তা নির্ভর করবে।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন মানবজমিনকে বলেন, এখনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় হয়নি। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চাপ দিচ্ছি। এজন্য অতিদ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপেরও দাবি জানাচ্ছি।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, যুগপৎভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায় বিএনপি। কিন্তু নির্বাচন কবে হবে, কাঠামো কী হবে- তা এখনো ঠিক হয়নি। আর আমাদের দল ও গণতন্ত্র মঞ্চেরও আলাপ-আলোচনার বিষয় রয়েছে, সময় আসলে আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো। তবে ঐক্য বিভক্ত হোক, তা আমরা চাই না।
ওদিকে ২২শে অক্টোবর সমমনা শরিক জোটের ৬ নেতাকে নিজ নিজ এলাকায় জনসংযোগে সহযোগিতা করার জন্য দলের জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের অতীব জরুরি নির্দেশনা সংবলিত চিঠি দিয়েছে বিএনপি। এই ৬ নেতা হলেন- জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব (লক্ষ্মীপুর-৪), নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না (বগুড়া-৪), গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি (ঢাকা-১২ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬), গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর (পটুয়াখালী-৩) ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান (ঝিনাইদহ-২) এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২-দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা (কিশোরগঞ্জ-৫)। এই চিঠি দেয়ার পরেই বিএনপি এবং শরিক দল ও জোটের মধ্যে বিভ্রান্ত শুরু হয়। এটা কী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন বণ্টন, নাকি নির্বাচনী কৌশল? যদিও পরবর্তীতে বিভ্রান্ত দূর করতে নতুন করে ৬৪ জেলায় বিএনপি চিঠি দিয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, এই চিঠি দেয়ার পরে শরিক দলের নেতারা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান। জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের দল ও জোট নেতারা তাদের এলাকায় প্রচারণা করতে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তারা আমাদের কাছে আবেদন করেছেন। এজন্য তাদের চিঠি দেয়া হয়েছে। এর সঙ্গে নির্বাচনী আসনের কোনো বিষয় নেই। যেসব দল ও জোট নিজ শক্তিতে প্রচারণা করছেন তারা চিঠি দেয়নি। এজন্য তাদের নামে চিঠি দেয়া হয়নি।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ মানবজমিনকে বলেন, আমরা চাই জোটগতভাবে নির্বাচনে যেতে। এজন্য আলাপ-আলোচনা চলছে। নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা মানবজমিনকে বলেন, জোটগতভাবে আমরা নির্বাচনে যাবো কিনা, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমি মাঠ গোছাচ্ছি। আর আমরা চাচ্ছি বিএনপি জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।
ওদিকে রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফার ছোট পুস্তিকা, দফাভিত্তিক প্রচার কার্ড এবং ছাত্রদলের গৌরবোজ্জ্বল অতীত, সংগ্রামী বর্তমান ও আগামী প্রতিশ্রুতির বুকলেট আকারে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। নেয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মতামত। যাওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছেও। এরই অংশ হিসেবে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা সম্পর্কে ছাত্রদলের নেতাদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা করেছে বিএনপি। ৩১ দফা নিয়ে প্রচারাভিযানে নামার চিন্তা থেকেই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। মাঠপর্যায়ে সাধারণ মানুষের কাছে ৩১ দফা পৌঁছাতে এবং নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ হিসেবেই এ প্রচার কর্মসূচি হচ্ছে। এরআগে ২৮শে সেপ্টেম্বর থেকে ‘আমরা যদি থাকি সৎ, দেশ সংস্কার সম্ভব’ এই স্লোগানে দেশ সংস্কারের বার্তা নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল ও ছাত্রদলের সমন্বয়ে দেশব্যাপী যৌথ কর্মিসভা করেছে বিএনপি। কর্মসূচিতে বিএনপি’র এই তিন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ধানের শীষ সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেন।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব মানবজমিনকে বলেন, ছাত্রদলের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস এবং সাম্য শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে। সংগঠনের আদর্শিক দিকও তুলে ধরা হচ্ছে। দেয়া হবে বুকলেট। পাশাপাশি বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে কী কী করবে, সে বিষয়েও শিক্ষার্থীদের কাছে প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে।
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির মানবজমিনকে বলেন, সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই কর্মসূচি চলছে। এরমধ্যে মাদ্রাসা, মেডিকেল এবং নারী শিক্ষার্থীদের বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
জাতি দীর্ঘদিন গণতান্ত্রিক চর্চা থেকে দূরে থাকায় কাজটা কঠিন হয়ে গেছে! তবে এখনো যদি রাজনৈতিক দলগুলো স্বচ্ছ ও সঠিক পদক্ষেপ না নেয় তাহলে বাফার জোন হতে বেশি সময় নিবে না!!
ছাত্রদের সৎ চরিত্রবান হতে হবে।আদর্শ রাজনীতি তাদের শিক্ষা দিতে হবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দর্শন তাদের শিক্ষা দিতে হবে। যাতে করে ভবিষ্যতে তারা জাতীয়তাবাদী দলের হাল ধরতে পারে।
লক্ষীপুর ৪ রামগতি, কমলনগর আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এবিএম আশ্রাফ উদ্দিন নিজান সাহেবের বিকল্প কাউকে আমরা মানবো না।
ছাত্রদলের প্রত্যেকটা কর্মীকে জিয়াউর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশের সংস্কারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। ছাত্রলীগের মতো টেগ যেন না লেগে যায়, ধর্ষক, চাঁদাবাজ ও নেশা খোররা যেন ছাত্রদলের পতাকা তলে স্থান না পায়।
ছাত্রদলকে সময়োপযোগী করে তৈরী করতে হবে। বিএনপির উচিত ছিল ছাত্রদলকে আরো আগে শক্তিশালী করা।
আশা করছি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল দেশ ও জাতির স্বার্থে যে কোন দায়িত্ব পালনে পিছপা হবে না।
সঠিক সিদ্ধান্ত
ঢাকা ১২ আসন একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন এখানে লোকাল কাউকে দায়িত্ব দিলে ভালো হবে। যেমন আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার ভাই অত্রএলাকার প্রতিটা পারা মহল্লার মুরব্বিরা তার সাথে জানাসুনা আছে
ভালো সিদ্ধান্ত
আমারা চাই বাংলাদেশের সব দলের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে এমন একটা সরকার দেশ পরিচালনা করুক যারা শুধুই মানুষের কল্যাণে কাজ করবে।