অনলাইন
চার প্রভাবশালীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
স্টাফ রিপোর্টার
(৮ মাস আগে) ৩১ অক্টোবর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৬:২৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:১১ অপরাহ্ন

চার প্রভাবশালীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক এমপি মোহাম্মদ হাবিব হাসান, বগুড়া-৩ আসনের সাবেক এমপি মো. নুরুল ইসলাম, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবিএম মোকাম্মেল হক ও সাবেক কর কমিশনার রঞ্জিত কুমার তালুকদার। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়া দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন। এই তথ্য মানবজমিনকে নিশ্চিত করেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।
এদিন সাবেক এমপি মো. নুরুল ইসলাম তালুকদারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক মো. মাসুদুর রহমান। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সরকারি অর্থ আত্মসাতপূর্বক নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তার বর্ণিত পদের অপব্যবহার করে ও রাজনৈতিক পরিচয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে ও বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন মর্মে তথ্য পেয়েছে দুদক।
অন্যদিকে সাবেক স্বপরিবারে এমপি মোহাম্মদ হাবিব হাসানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন দুদকের উপ-পরিচালক সিরাজুল হক। নিষেধাজ্ঞা পাওয়া অন্যরা হলেন- তার স্ত্রী শামিমা হাবিব, দুই সন্তান আবুল হাসান তানিম ও সনিয়া হাসান তন্নি। আবেদনে বলা হয়, হাবিব হাসানের বিরুদ্ধে ভূমি দস্যুতা, পরিবহণ চাঁদাবাজি, পদ বাণিজ্য, ডোনেশনের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তিনি বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতপূর্বক বিদেশে অর্থ পাচার করে ছেলের নামে কানাডায় বাড়ি ক্রয়সহ নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ দুদকে অনুসন্ধানাধীন রয়েছে।
ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবিএম মোকাম্মেল হক চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি’র এমডি থাকাকালে মোকাম্মেল হক ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে এসআলম গ্রুপের পরিবারের সদস্যদের সাহায্য করেছেন। তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বারসেলস ব্যাংকে ৫ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে। তার পদের অপব্যবহার করে ও রাজনৈতিক পরিচয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে ও বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের তথ্য পেয়েছে দুদক।
এদিকে সাবেক কর কমিশনার রঞ্জিত কুমার তালুকদার ও তার স্ত্রী ঝুমুর মজুমদারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন দুদকের সহকারী খোরশেদ আলম। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, রঞ্জিত কুমার তার অবৈধ আয়ে নিজ এলাকায় কৃষি জমি, ফ্ল্যাট, প্লট ক্রয় করেছেন। এছাড়া তার স্ত্রী ঝুমুর মজুমদারের নামে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের সাভার ব্রাঞ্চ ও প্রিন্সিপাল ব্রাঞ্চ, রাজউক এভিনিউ শাখায় এবং গ্রীন রোড ব্রাঞ্চ, হোসাইন টাওয়ার, ফার্মগেট শাখা এবং ঢাকায় ২২টি এফডিআর হিসাবের অনুকূলে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা রয়েছে। তাদের অন্যান্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা জমা করা রয়েছে বলে দুদক জানতে পেরেছে। গোপন অনুসন্ধানে দুদক আরো জানতে পারে, রঞ্জিত কুমারের ভারতেও সম্পদ রয়েছে। অবৈধভাবে অর্জিত এসব সম্পত্তি হস্তান্তর করে তারা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এই কারণে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া প্রয়োজন।
পাঠকের মতামত
অপরাধী যেই হোক তাদেরকে কোন ছাড় নয়। শক্ত হাতে এদেরকে আইনের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
এগুলো ৫-ই আগষ্টের পরপরই করা দরকার ছিলো। অনেকেই পালিয়ে গেছে বিদেশে।দুদক-এর অসাধু এক শ্রেনীর কর্মকর্তাদের আনুকুল্যে এসব হয়।এছাড়া দুদকের অসাধূ কর্মকর্তাদের বিপুল অংকের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াফত করার আশু পদক্ষেপ নিতে হবে।
অপরাধীরা দেশ থেকে পালিয়ে গেলে তার পরে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় এটা জাতির সাথে তামাশা। আমার মনে হয় প্রশাসনের লোকজনের ভিতর এখনও আওয়ামী ভূত রয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি এসব ভূত তাড়ানোর ব্যবস্থা করেন।
এতদিন পরে ! ওরা কি আর এখন দেশে আছে?