ঢাকা, ৪ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার, ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৭ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

শরীর ও মন

আধুনিক হোমিওপ্যাথি ও ক্যান্সার চিকিৎসা

ডা. মাহমুদুল হাসান সরদার
২০ অক্টোবর ২০২৪, রবিবার

‘ক্যান্সার ধরা পড়লে সম্পূর্ণ নির্মূল  হয় না এই ধারণা বর্তমানে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাও ভেঙে দিচ্ছে। সঠিক হোমিও ডোজ যে কতোটুকু কার্যকরী তার একটি জ্বলন্ত প্রমাণ হলো খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিছুদিন আগেও থেরাপি, সার্জারি ইত্যাদি ক্যান্সার নিরাময়ের প্রধান উপায় হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু ওষুধ প্রয়োগে ক্যান্সার রোগীরা আজ ভালো হওয়াতে অনেক ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী এখন থেকে আশার আলো দেখছেন। অনেকদিন ধরেই ক্যান্সারের ওষুধ আবিষ্কারে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে আসছেন।  যুক্তরাষ্ট্রে  একটি গবেষণায় ক্যান্সারে আক্রান্ত কয়েকজন রোগীকে প্রায় ছয় মাস ধরে ডোসটারলিমাব নামের একটি ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়। ওষুধটির জেরে পরীক্ষায় অংশ নেয়া রোগীদের প্রত্যেকেই সুস্থ হয়েছেন। বিশ্বে এবারই প্রথম কোনো ওষুধে ক্যান্সার রোগীদের পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেল। 
ডোসটারলিমাব এমন একটি ওষুধ, যেটিতে গবেষণাগারে তৈরি মলিকিউলস রয়েছে। এই মলিকিউলস মানুষের শরীরে বিকল্প অ্যান্টিবডি হিসেবে কাজ করে। গবেষকরা মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানান, পরীক্ষামূলকভাবে ১৮ জন ক্যান্সার রোগীর ওপর ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়েছিল। সবাই কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। ছয় মাস ধরে প্রতি তিন সপ্তাহ পরপর ওষুধটি প্রয়োগের পর তাদের শারীরিক পরীক্ষায় দেখা যায় সবাই ক্যান্সারমুক্ত হয়েছেন। কারও শরীরে টিউমারের অস্তিত্ব ছিল না ওষুধটি প্রয়োগের পর।
এই গবেষণার নিবন্ধ নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত হয়েছে। সোয়ান ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ও গবেষণাপত্রটির সহ-লেখক চিকিৎসক আন্দ্রেয়া সেরেক বলেন, ট্রায়ালে অংশ নেয়া রোগীরা যখন তাদের ক্যান্সার মুক্তির খবর জানতে পারলেন, সেটার চেয়ে আনন্দের মুহূর্ত আর ছিল না। অনেকে খুশিতে কেঁদে ফেলেছিলেন। ক্যান্সারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি বা রেডিয়েশন ব্যবহার করা হয়। রোগীর বাঁচার সম্ভাবনা যদি তিন বছর থাকে কেমোথেরাপি দিয়ে সেই সময়সীমা বাড়ানো সম্ভব এই ধারণা ঠিক। তবে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় ‘এক্সপেনশন অব লাইফ’ বাড়ানোর পাশাপাশি ক্যান্সার সারিয়ে তুলেছে এমন উদাহরণ অনেক রয়েছে। অনেকেই সুস্থ হয়ে ১০-১২ বছর পর্যন্ত ভালো আছেন। ক্যান্সারের খুব জটিল অবস্থায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শুরু করলেও রোগীকে অনেকটাই সুস্থ করে দেয়া যায়। অন্য পদ্ধতিতে চিকিৎসায় যেখানে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম সেখানে এই হোমিওপ্যাথিতে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
যেসব ক্যান্সারে হোমিওপ্যাথি সবচেয়ে ভালো কাজ দেয়
যেকোনো ক্যান্সার কতোটা নির্মূল হবে তা নির্ভর করে রোগী কোন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত ও কোন স্টেজে চিকিৎসা করছেন তার ওপর। প্রস্টেট ক্যান্সার, ইউরিনারি ব্লাড ক্যান্সার, ব্রেন টিউমার, অস্ট্রিওসারকোমা, স্কিন ক্যান্সার, সার্ভিক্স ক্যান্সারের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিতে চিকিৎসা সবচেয়ে বেশি কাজ দেয়। তবে যে রোগীর ক্যান্সার হচ্ছে তার শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে রোগ কতোটা সারবে। যেমন রোগীর ডায়াবেটিস থাকলে তার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই কমে যায়। সেক্ষেত্রে ক্যান্সার হলে রোগ সারানো জটিল হয়। তবু এসব ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা যথেষ্ট ভালো কাজ দিচ্ছে।
যে পর্যায়ে ক্যান্সার ধরা পড়লে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি
ক্যান্সার থেকে পরিত্রাণ চাইলে সঠিক শনাক্তকরণ হওয়া খুবই দরকার। অনেক ক্ষেত্রেই ক্যান্সার অনুমান করলেও তা ক্যান্সার নাও হতে পারে। আবার কখনো ক্যান্সারের লক্ষণ নেই কিন্তু হতেই পারে ক্যান্সার। কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সার নিজে থেকে ভালো হয়ে যেতে পারে। হোমিওপ্যাথিতে চিকিৎসা ক্যান্সারের প্রথম স্টেজে শুরু করলে উপকার অবশ্যই পাওয়া যায়। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা জটিলতর হলে চিকিৎসা শুরু হয়। এক্ষেত্রেও হোমিওপ্যাথি কাজ দেয়। প্রি-ক্যান্সারাস স্টেজে কেউ যদি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করেন সেক্ষেত্রে ক্যান্সার অনেকটাই রোধ করা সম্ভব।
একটা কথা মনে রাখতে হবে ক্যান্সার আক্রান্ত হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগী নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসবেন তত তাড়াতাড়ি রোগী সুস্থ হবেন। বিভিন্ন চিকিৎসা করার পর হোমিওপ্যাথি শুরু করতে এলে তা সারানো অনেক জটিল। প্রথম অবস্থায় ক্যান্সারের হোমিওপ্যাথিতে চিকিৎসা অনেক সহজ হয়।

লেখক: হোমিও ক্যান্সার চিকিৎসক ও গবেষক,  সরদার হোমিও হল
৬১/সি, আসাদ এভিনিউ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
সেল: ০১৭৩৭-৩৭৯৫৩৪

পাঠকের মতামত

হোমিও দোকান গুলো দালাল লালন পালন করে।এনাদের দোকান কাম চেম্বার গুলো রুগীর বেশে দালাল থাকে বা রাখা হয়।এদের কাজই হলো গল্প বানানো। কতো ডাক্তার এলোপ্যথি করলাম কিছুই হয়নি। আর এনার মাত্র ১৫ দিনের ওষুধে রুগী একেবারে টনটনে। চক্রের খপ্পরে পড়ে ক্যান্সারের হোমিও চিকিৎসায় কেউ যাবেন না।জটিল কোন চিকিৎসায় হোমিও ভন্ডদের নিকট যাবেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
২৪ অক্টোবর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১:২৮ পূর্বাহ্ন

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status