শেষের পাতা
রাজনৈতিক অস্থিরতায় গত ২ মাসে এলসি কমেছে ১৩ শতাংশ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শনিবার২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং স্থবির বিনিয়োগসহ বিভিন্ন কারণে আমদানি সংক্রান্ত লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলা এবং নিষ্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১৩ শতাংশ কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে ১০.০৩ বিলিয়ন ডলারের আমদানি এলসি খোলা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার কম।
একজন ব্যাংকার বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অস্থিরতার কারণে ব্যাংকগুলোতে এলসির জন্য চাহিদা কমেছে। এর মধ্যে জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শত শত মানুষের মৃত্যু এবং এর জেরে মাসের একটা বড় অংশ জুড়ে দেশে অস্থিরতা থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ওই মাসে ৫ দিন ইন্টারনেট ব্লকেড এবং ব্যাংক বন্ধ থাকায় আমদানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি আমদানি ও রপ্তানি পণ্য পরিবহনেও ব্যাঘাত ঘটেছে। ফলে জুলাই মাসে আমদানি এলসি খোলা ও নিষ্পত্তি দুটোই কমেছে।
খাতভিত্তিক আমদানি এলসি খোলার চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দুই মাসে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পতন ছিল মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে, যা গত দুই মাসে ৪৪ শতাংশ কমেছে। তারপর পেট্রোলিয়াম আমদানিতে কমেছে ৩৬ শতাংশ। জুলাই-আগস্ট মাসে মাত্র ২৮৬ মিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। শিল্পের কাঁচামাল বাদে অন্য সব খাতে আমদানি আগের অর্থবছরের তুলনায় কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, আমদানিনির্ভর দেশ হিসেবে প্রতি মাসে আমাদের আমদানি কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলার হওয়া উচিত। অর্থনীতির আকার অনুযায়ী, আমাদের আরও বেশি আমদানির প্রয়োজন। এভাবে আমদানি কমে যাওয়া অবশ্যই আমাদের জন্য ভালো খবর নয়। মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি কমে যাওয়া দেশে বিনিয়োগ কমে যাওয়াকেই নির্দেশ করে। মেশিনারিজ আমদানি কম হওয়ায় বোঝা যাচ্ছে, ইন্ডাস্ট্রিগুলো তাদের ক্যাপাসিটি এক্সপানশন করছে না। অনেক আমদানিনির্ভর ফ্যাক্টরি বন্ধ আছে। ফলে এলসি খোলাও কমে এসেছে বলে মনে হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে আমদানি এলসি পেমেন্ট করা হয়েছে ১০.৩৪ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময় শেষে এলসি পেমেন্ট করা হয়েছিল ১১.৯০ বিলিয়ন ডলার।
খাতভিত্তিক আমদানি এলসি পেমেন্টের চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি ৩৩ শতাংশ এলসি পেমেন্ট কমেছে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে। ভোগ্যপণ্য আমদানি কমেছে ৩২ শতাংশ। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্টে পেট্রোলিয়াম ও মধ্যবর্তী পণ্যসহ সব ধরনের পণ্য আমদানি পেমেন্ট কমেছে।