খেলা
পদত্যাগ করলেন কেন সুজন
ইশতিয়াক পারভেজ
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবারকয়েকদিন ধরেই গুঞ্জন ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) থেকে পদত্যাগ করছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। গতকাল সকালে তা সত্যি হলো। তিনি বিসিবিতে তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে এখন থেকে ফের আলোচনা শুরু। কেন হঠাৎ করেই সরে গেলেন তিনি? কী কারণ হতে পারে এর পেছনে! এর পেছনে দুটি বিষয় শোনা যাচ্ছে। একটি হলো সরকার ও বিসিবি সভাপতি পরিবর্তনের পর এই বোর্ডে আর কাজ করা সম্ভব হচ্ছিল না নানা বিতর্কের কারণে। আরেকটি কারণ বেশ জোড়ালো ভাবে শোনা যাচ্ছে আর বিসিবি পরিচালক হিসেবে নয় তিনি মাঠে থাকতে চান কোচ হিসেবে। কেউ কেউ বলছেন তিনি হয়তো জতীয় দলের প্রধান কোচ হয়ে ফিরবেন। তবে এমন কথার কোনো সত্যতা মেলেনি। এমনকি তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি মুঠোফোনে। তার পদত্যাগের বিষয়টি দৈনিক মানবজমিনকে নিশ্চিত করেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন।
তিনি বলেন, ‘হ্যা, আমরা আজ (বুধবার) সকালেই তার পদত্যাগ পত্র পেয়েছি। কারণ হিসেবে সেখানে ব্যক্তিগত লিখা আছে।’ তার মানে সুজন বিসিবিকেও জানিয়েছেন ব্যক্তিগত কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন! ২০১৩ তে নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গী হয়ে বিসিবিতে পরিচালক হয়ে এসেছিলেন খালেদ মাহমুদ। তার সঙ্গে ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক দুই ক্রিকেটার আকরাম খান ও নাঈমুর রহমান দুর্জয়। সেবারই জাতীয় দলের সাবেক তিন অধিনায়ককে বিসিবি’র পরিচালক হতে দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছিল তাদের হাত ধরেই বদলে যাবে বাংলাদেশের ক্রিকেট। তবে যত দিন গড়িয়েছে ততোই তাদের নিয়ে বেড়েছে বিতর্ক। আগষ্টে গনআন্দোলনে সরকারের পতনের পর বিসিবিতেও বড় বদলের দাবি উঠে। এরই মধ্যে পাপন সহ বিবিবির অনেক পরিচালক চলে যান আত্মগোপনে। ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগ করেন পাপন। শেষ হয় তার ১২ বছরের অধ্যায়। তবে এমন সময়েও দেশে ছিলেন খালেদ মাহমুদ ও আকরাম খান। অন্যদিকে বিসিবিতে আর না এসেই নিজের পদত্যাগপত্র পাঠান দুর্জয়। আর গতকাল সেই তালিকাতে যুক্ত হলো সুজনের নাম। তবে এখনো এই বোর্ডে বহালতবিয়তে আছেন আকরাম। সুজনের বিদায়ের পর এখন বিসিবিতে ১১ জন পরিচালককে পাওয়া যাবে সশরীরে। বাকিদের ভাগ্য নির্ধারণ হবে পদত্যাগ কিংবা তিন কার্যনির্বাহী সভাতে অংশ না নেয়ার মধ্য দিয়ে। সুজনের পদত্যাগের দুটি কারণের একটি হলো তাকে নিয়ে আর বিসিবি কাজ করতে চাইছে না। তাকে নিয়ে আপত্তি আছে ক্রীড়া উপদেষ্টারও। তার বিপক্ষে সরাসরি কোনো দুর্নীতির অভিযোগ না থাকলেও নাজমুল হাসান পানের বোর্ডে নানা রকম মেকানিজমের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও জানা গেছে তাকে গেম ডেভালপমেন্টের পদ থেকে সরিয়ে সেখানে নয়া পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিমকে দায়িত্ব দেয়ার কথাও আলোচনা হয়েছে। বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের দায়িত্বে সুজন ছিলেন লম্বা সময়। তার মেয়াদকালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ২০২০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতে।
বোর্ড পরিচালক থাকাকালীন আরও কিছু দায়িত্বে দেখা গেছে সুজনকে। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ ও ম্যানেজারের ভূমিকায় কাজ করেছেন। এ নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। হয়তো সে কারণেই তিনি স্বসম্মানে বিসিবি থেকে বিদায় নিলেন। তবে গুঞ্জন রয়েছে তিনি হতে পারেন বিসিবির প্রধান কোচ। কিন্তু সেটির সম্ভাবনাও কম। যদি সব দিক বিবেচনা করা হয় তাহলে নয়া সভাপতি সুজনকে প্রধান কোচ করে নিজে বিতর্কিত হতে চাইবেন না। বিসিবির একটি সূত্রের দাবি সুজন বিসিবি ছাড়লেও ক্রিকেট ছাড়তে পারবেন না। সূত্রটি জানায়, ‘খালেদ মাহমুদ সুজন একজন ক্রিকেট পাগল মানুষ। তিনি আর যাই হোক ক্রিকেট ছেড়ে দূরে থাকতে পারবেন না। তিনি বিসিবি পরিচালক না থাকলেও হয়তো কোনো না কোনো জায়গাতে ক্রিকেট নিয়েই থাকবেন সেটি বিসিবিতে হলেও অবাক হবো না। তবে প্রধান কোচ, এটির খুব বেশি সম্ভাবনা দেখি না। সেটি হলে বিতর্কের মুখে পড়বেন নয়া সভাপতি ফারুক।’
গদির আরাম একবার পাইলে কেউ উঠতে চায় না
good news