নির্বাচিত কলাম
খোলা চোখে
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় আরও বেশি সহায়তা প্রয়োজন
লুৎফর রহমান
২১ জুলাই ২০২২, বৃহস্পতিবার
সিলেট ও সুনামগঞ্জে এবারের ভয়াবহ বন্যা নতুন এক অভিজ্ঞতা আমাদের সামনে এনে দিয়েছে। কয়েকদিনের বানের পানিতে একসঙ্গে এত মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার নজির হয়তো এর আগে নেই। অল্প সময়ে এত বেশি সংখ্যক মানুষের আশ্রয়হারা হওয়ার ঘটনাও হয়তো হাল সময়ে আর হয়নি। অনেকটা অস্বাভাবিক এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাময়িক কষ্ট-দুর্ভোগ হয়তো কেটে গেছে পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে। কিন্তু তারা এখন এক দীর্ঘমেয়াদি দুর্ভোগে পড়েছেন। দুই জেলায় প্রায় লাখো মানুষের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা ভেসে গেছে বন্যার পানিতে। নিরাপদে আশ্রয় তৈরি এখন তাদের সামনে বড় এক চ্যালেঞ্জ। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সন্তানদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া, সামনে তাদের জীবন-জীবিকার উৎস খুঁজে বের করা এবং আগামী বোরো মওসুমে ফসল আবাদ নিয়েও রয়েছে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। ভয়াল বন্যার সময় দুর্গত মানুষের জন্য ত্রাণ সহায়তা নিয়ে পাশে ছিল সরকারি- বেসরকারি নানা উদ্যোগ। বিশেষ করে বিভিন্ন ব্যক্তি, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের ত্রাণ সহায়তা বলতে গেলে মানবিকতার নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। হৃদয়বান মানুষের এই সহায়তায় বন্যাকবলিত এলাকার মানুষজন প্রথম ধকল কাটাতে পেরেছেন। কষ্ট হলেও তারা পানিবন্দি অধ্যায় কাটিয়ে নিজেদের ভিটায় উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।
বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা সুনামগঞ্জে এবারের ভয়াবহ বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মানুষের ঘরবাড়ির। এর আগে কোনো বন্যায় এত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়নি। এখন বন্যার পানি কমলেও বাড়িঘর বিধ্বস্ত হওয়ায় এখনো অনেক মানুষ নিজের ভিটায় ফিরতে পারছেন না। জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার ১১টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভায় ক্ষতিগ্রস্ত বসতঘরের সংখ্যা ৪৫ হাজার ২৮৮টি। এর মধ্যে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ৪ হাজার ৭৪৭টি। আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৪০ হাজার ৫৪১টি ঘর। এটি ছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হবে বলে স্থানীয়দের ধারণা। তাহিরপুরের স্থানীয় সাংবাদিক এম এ রাজ্জাক বন্যার শুরু থেকেই পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছিলেন। সর্বশেষ শনিবার তার দেয়া বর্ণনা অনুযায়ী বন্যার পানি অনেকটা নেমে গেছে। ওই উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মানুষ বাড়িঘরে ফিরেছেন। যাদের ঘর বন্যায় একেবারেই ভেসে গেছে তারা ভিটায় ফিরলেও আগের মতো ঘরে থাকতে পারছেন না। কেউ কেউ অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করে বাস করছেন। কেউ আবার ভাঙা ঘরেই কোনোমতে ঠাঁই নিয়েছেন। এম এ রাজ্জাক জানিয়েছেন, এলাকায় বেসরকারি উদ্যোগে অনেকে ঘর নির্মাণ ও মেরামতে সহযোগিতা দিচ্ছেন। সেই তুলনায় সরকারি সহায়তা কম। বরাদ্দ হওয়া অর্থ সহায়তা অনেকে পাচ্ছেন।
এই সহায়তা আরও অনেক মানুষের প্রয়োজন। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে পাওয়া ৫ কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত ঘর মেরামতের জন্য বিতরণ করা হচ্ছে। এই তহবিল থেকে ৫ হাজার পরিবারকে ১০ হাজার করে টাকা দেয়া হচ্ছে। ভয়াবহ বন্যার শুরু থেকে ত্রাণ কার্যক্রমে জোরালো ভূমিকা রেখে আসছেন তরুণ আইনজীবী ও সমাজসেবক ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় এখন তিনি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঘর সংস্কার ও মেরামত কাজে হাত দিয়েছেন। তিনি সুনামগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ত শাল্লা উপজেলার একজন বিধবা মায়ের ঘর মেরামতের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু করেছেন। এক ফেসবুক লাইভে তিনি জানিয়েছেন, অন্তত ৬০০টি ঘর তৈরি এবং মেরামত করে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে তিনি কাজ করছেন। যে এলাকাটিতে তিনি এ কার্যক্রম শুরু করেছেন সেখানে সরকারি কোনো সহায়তা এখনো যায়নি। এমন এলাকা হয়তো আরও আছে যেখানে প্রয়োজন থাকলেও সহায়তা পৌঁছেনি। সরকারি হিসাব ধরলেও জেলায় ৪৫ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘর মেরামত বা সংস্কারে তাদের অনেকেরই সহায়তা প্রয়োজন। এবং এটি এই মুহূর্তে খুবই জরুরি। বণিক বার্তায় প্রকাশিত খবরের তথ্য অনুযায়ী বন্যা শুরুর এক মাস পর সিলেটে অর্ধশতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু করা যায়নি।
এসব বিদ্যালয়ের কোনো কোনোটির পানি এখনো নামেনি। কোনোটিতে আবার বন্যায় আশ্রয় নেয়া মানুষজন রয়ে গেছেন এখনো। বন্যার পর বাকি বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হলেও উপস্থিতির হার কম। সুনামগঞ্জের প্রায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ই খুলেছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আবদুর রহমানের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বিদ্যালয়গুলোতে উপস্থিতি অনেক কম। বন্যায় ক্ষতি হয়েছে এমন শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ হাজার বইয়ের চাহিদা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সরকারি হিসাবেই সিলেট এবং সুনামগঞ্জ জেলার এক লাখ শিক্ষার্থীর বই-খাতা বন্যার পানিতে নষ্ট হয়েছে। এই শিক্ষার্থীদের নতুন বই দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন। সরকারের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু এটিও আমাদের মনে রাখতে হবে বন্যার পানিতে শুধু এই শিক্ষার্থীদের বই-খাতাই নষ্ট হয়নি। তাদের জামা-জুতাও নষ্ট হয়েছে। বই বহন করার ব্যাগও নষ্ট হয়েছে। তাদের থাকার ঘরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার পরিবারের সহায়-সম্পদ নষ্ট হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীটির নিজের এবং পরিবারের মনোবলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নতুন বইয়ের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত এই শিক্ষার্থীদের জন্য আরও অনেক ধরনের সহযোগিতা দরকার। বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এই শিক্ষার্থীদের পুরো পাঠ্যধারায় ফিরিয়ে আনতে হলে প্রয়োজনীয় আরও অনেক কিছু করতে হবে আমাদের। এ জন্য বড় উদ্যোগটি নিতে পারে স্থানীয় শিক্ষা বিভাগ।

কোথায় কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের কী ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন তার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ এবং তা শিক্ষা দপ্তরে পাঠানোর কাজটি করতে পারে তারা। প্রয়োজনীয় তথ্য পেলে হয়তো আরও বড় পরিসরে সহায়তা দেয়ার পরিকল্পনা করতে পারবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। শিক্ষামন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী সিলেট জেলার সাড়ে ২৫ হাজার শিক্ষার্থীকে নতুন বই দিতে হবে। সুনামগঞ্জে নতুন বই দিতে হবে ৭৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে। আর এসব শিক্ষার্থীর হাতে এখন বই নেই। তারা পাঠধারার বাইরে রয়েছে। এই শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পুষিয়ে দেয়ার জন্যও আলাদা একটা পরিকল্পনা প্রয়োজন। সুনামগঞ্জের ছাতকের বাসিন্দা, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, ঢাকার কর্মকর্তা অনুজ আলমগীর শাহরিয়ার একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ বিষয়ে অনেকটা চিন্তার খোরাক দিয়েছেন। বন্যায় একজন এসএসসি পরীক্ষার্থীর বই-খাতা ভেসে যাওয়ায় তার পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। আলমগীর শাহরিয়ার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ওই শিক্ষার্থীকে বই পৌঁছে দিয়ে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন।
এমন আরও অনেকে আছে যাদের সামনে এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষা রয়েছে। তারাও নানা সমস্যায় পড়েছেন। এই বিষয়গুলো স্থানীয় শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। একইসঙ্গে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী এবং অগ্রসর মানুষরাও তাদের পাশে দাঁড়াতে পারেন সহযোগিতা নিয়ে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী সিলেট জেলায় বন্যাকবলিত হয়ে সিলেট সিটি করপোরেশন সহ ১৩টি উপজেলার প্রায় ৩০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছিলেন। জেলার ৬৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৫২ হাজার ৭৮৪ জন আশ্রয় নিয়েছিলেন। সিটি করপোরেশনের বাইরে ৪০ হাজার ৯১টি ঘরবাড়ি আংশিক ও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় জমির ফসল ও ঘরে সংরক্ষিত খাদ্যশস্য নষ্ট হওয়াসহ বিভিন্নভাবে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সিলেটে গত ঈদের সময়ও বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অনেক মানুষ ছিলেন। তাদের কারও কারও বাড়ি থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও ফিরতে পারছেন না বাড়ি ভেঙে যাওয়া বা বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে। পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, বন্যায় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হওয়া বিদ্যালয়ে থাকা মানুষকে বাড়ি ফিরতে তাগাদা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আশ্রয় না থাকায় তারা বাড়ি ফিরতে পারছেন না।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মুজিবুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামতের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে ৫ কোটি টাকার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এই টাকা বিতরণের কাজ চলছে। প্রাথমিকভাবে ৫ হাজার পরিবার ১০ হাজার করে টাকা পাবে তাদের ঘর মেরামতের জন্য। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি বেসরকারি অনেক সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসন কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। তারা ঘর তৈরি বা সংস্কারে অর্থ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে ঘর নির্মাণ বা মেরামতের জন্য আরও অনেকের সহায়তা প্রয়োজন। যারা এখনো কোনো সহায়তা পাননি। তাদের কারও ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারও ঘর একেবারেই ভেঙে গেছে। আমরা আশা করবো প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ধাপে ধাপে আরও অর্থ সহায়তা পাবে এইসব পরিবার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বিশেষ বরাদ্দ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াবে। যার ওপর ভর করে তারা বন্যা পরবর্তীতে নিজেদের আশ্রয়টি তৈরি, সংস্কার বা মেরামত করে সামনে উঠে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখতে পারেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সিলেট এবং সুনামগঞ্জের মানুষের জন্য সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের সময়টি আসছে বোরো মওসুমে। শস্য ভাণ্ডার বলে খ্যাত সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার একমাত্র ফসল বোরো ধান।
এক মওসুমে ধান আবাদ করে বছরের বাকি সময় এই ধানের ওপর নির্ভর করেই চলে বেশির ভাগ মানুষের জীবিকা। প্রথম দফার বন্যায় বোরো ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। দ্বিতীয় দফার বন্যায় অনেকের গোলার ধানও নষ্ট হয়েছে। এমন অবস্থায় সামনের মওসুমে বোরো ফসল আবাদে এক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন কৃষকরা। বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া কৃষক সামনের মওসুমে হয়তো নিজ শক্তিতে ফসল আবাদ করতে পারবেন না। তাদের প্রয়োজন হবে কৃষি ঋণ, ভর্তুকি মূল্যে সার এবং বীজ। কৃষি বিভাগকে এই বিষয় মাথায় রেখেই এখন থেকেই পরিকল্পনা নিতে হবে যাতে প্রয়োজনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া যায়। মনে রাখতে হবে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার ক্ষেত্রে সামনের বোরো মওসুমটি গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়ে বোরো ফসল আবাদ এবং ঘরে তুলতে পারলে বন্যার ক্ষতিও অনেকটা পুষিয়ে নিতে পারবেন তারা। আমরা আশা করবো- কৃষি মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বন্যাকবলিত এলাকার কৃষকের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেবে। আর তা নিতে হবে বোরো মওসুম শুরুর আগেই। একইসঙ্গে সামনের বোরো ফসল উঠার আগ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের খাদ্য সহায়তার জন্যও বিশেষ উদ্যোগ নেয়া দরকার।
লেখক: মানবজমিনের নগর সম্পাদক ও প্রধান প্রতিবেদক।