খেলা
স্বপ্নের অভিষেক: উচ্ছ্বসিত এমবাপ্পে প্রশংসায় কোচ-সতীর্থ
স্পোর্টস ডেস্ক
১৬ আগস্ট ২০২৪, শুক্রবারবহু মাইল পথ পাড়ি দিয়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। বার্নাব্যুর ক্লাবটির হয়ে খেলার তীব্র তাড়নার কথা অনেকবারই শোনা গেছে তার মুখে। এবার দলটির হয়ে স্মরণীয় অভিষেক হলো এই বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি তারকার। গোল করলেন, রিয়াল জিতলো সুপার কাপের শিরোপা। এমবাপ্পের ক্যারিয়ারে এটাই প্রথম ইউরোপিয়ান শিরোপা।
বুধবার আতালান্তাকে ২-০ গোলে হারিয়ে রেকর্ড ষষ্ঠবারের মতো সুপার কাপ জেতে রিয়াল। দলের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন এমবাপ্পে। নতুন পথচলার শুরুতে এমন সাফল্যে এমবাপ্পে দারুণ উচ্ছ্বসিত।
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে এমবাপ্পের খেলার স্বপ্ন যে একদম ছেলেবেলা থেকেই, সেটি জানে গোটা ফুটবলবিশ্ব। বুধবার ম্যাচে চেয়ে প্রবল প্রত্যাশা ও কৌতূহলের কেন্দ্রে ছিলেন তিনি। শুরুতেই আভাস দিয়ে রাখলেন, এই ভার বইতে তিনি প্রস্তুত। ম্যাচ শেষে তার কণ্ঠেও দেখা গেল আবেগের ছোঁয়া।
এমবাপ্পে বলেন, ‘দারুণ এক রাত এটি।
এ দিন দু’টি গোলে অ্যাসিস্ট করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও জুড বেলিংহ্যাম। গত মৌসুমেও রিয়ালের সাফল্যে এই দু’জনের দারুণ অবদান ছিল। তাদের প্রশংসাও করলেন এমবাপ্পে, ‘তারা দু’জন দুর্দান্ত ফুটবলার। তবে সব পজিশনেই দারুণ সব ফুটবলার আছে আমাদের। এই দলের সঙ্গে খেলতে পেরে আমি খুশি। আমরা অবশ্যই আরও উন্নতি করবো। সবে তো শুরু। আজকে প্রথম পদক্ষেপটা দারুণ ইতিবাচক হলো।’
অভিষেক মৌসুমে ৫০ গোল করার ইচ্ছা থাকলেও দলীয় সাফল্যের তাড়নাও দেখা গেল এমবাপ্পের কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘যদি ৫০ গোল করতে পারি, তাহলে ৫০ তো হবেই, তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো দলের জয় ও দল হিসেবে উন্নতি করা। কারণ জিততে হবে দল হিসেবেই।’ এমন অভিষেকের পর সতীর্থ ও কার্লো আনচেলত্তির প্রশংসা পেয়েছেন এমবাপ্পে। বেলিংহ্যাম। এদিন জুড বেলিংহ্যামের পাস থেকে গোলটি করেন এমবাপ্পে। ম্যাচ শেষে এই ইংলিশ মিডফিল্ডার বললেন, রিয়ালের নতুন তারকার কাছেই এমন কিছুই প্রত্যাশিত তাদের।
বেলিংহ্যাম বলেন, ‘খেলার আগে আমরা এটা নিয়ে (এমবাপ্পে গোল করবেন কি না) কোনো কথাই বলিনি। আমাদের স্রেফ প্রত্যাশা ছিল এটি হবেই। সে এমন একজন ফুটবলার, যে নিজের ইতিহাস নিজেই লিখতে জানে। সবসময়ই সে দলের জন্য নিজেকে মেলে ধরে এবং আজকেও তা করেছে।’
রিয়ালে আসার আগেই এমবাপ্পে বিশ্বকাপ জিতেছেন, বিশ্বকাপে রানার্স আপ হয়েছেন, বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেছেন, ব্যক্তিগত পুরস্কার জিতেছেন অসংখ্য। কাছ থেকে তাকে দেখে তবু আরও বেশি মুগ্ধ হয়ে চলেছেন বেলিংহ্যাম। তিনি বলেন, ‘এমবাপ্পে তো এখানে আসার আগে থেকেই দুর্দান্ত। এখন যখন তার সঙ্গে খেলার ও তাকে কাছ থেকে বিস্তারিত দেখার সুযোগ পাচ্ছি তার গতি, মান, বল ছাড়া তার যে বিচরণ, যেরকম এক নেতা সে, যেভাবে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রচনা করেন সবকিছুই দারুণ।’
রিয়ালের ড্রেসিংরুমে দ্রুত মানিয়েও নিয়েছেন এমবাপ্পে। বেলিংহ্যাম বলেন, ‘তাকে নিয়ে যত প্রশংসাই করি, কম হবে। তার এখানে আসার সম্ভাবনা নিয়ে লোকে কথা বলছে অনেকদিন ধরেই। তাই মনে হচ্ছে যেন, সে এখানে অনেকদিন ধরেই আছে। চমৎকারভাবে দলে মানিয়ে নিয়েছে সে।’
দলে মানিয়ে নেয়ার ব্যাপারটি বললেন আনচেলত্তিও। এদিন আতালান্তার বিপক্ষে দুই পাশে ভিনিসিউস ও রদ্রিগোর সঙ্গে মাঝখানে এমবাপ্পেকে রেখে আক্রমণাত্মক একাদশ সাজান আনচেলত্তি। এতে এমবাপ্পে যেভাবে মানিয়ে নিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট আনচেলত্তি।
রিয়ালের কোচ বলেন, ‘এমবাপ্পে সত্যিই ভালো করেছে। দলে দারুণভাবে মানিয়ে নিয়েছে সে। ভিনিসিউস ও বেলিংহ্যামের সঙ্গে তার সমন্বয় ছিল চমৎকার। আমাদের দলের মান তো এমনিতেই দুর্দান্ত। তবে মান যতই ভালো হোক, মাঠে নেমে খেলতে হয় দল হিসেবে এবং আমরা তা পেরেছি।’