শেষের পাতা
ফেনীতে ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী লীগের গুলি, নিহত ৮
ফেনী প্রতিনিধি
৫ আগস্ট ২০২৪, সোমবারফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের একদফা কর্মসূচিতে হামলা ও গুলির অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। গতকাল দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সংঘর্ষে ৮ জন নিহত হয়েছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, পথচারী ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আসিফ ইকবাল নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- ফেনী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সদর উপজেলার বারাহীপুর এলাকার ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণ (১৯), সদর উপজেলার ফাজিলপুর কলাতলী গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে ছাইদুল ইসলাম (২০) পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কাশিমপুর এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে শিহাব উদ্দিন (২১), সোনাগাজীর চর মজলিশপুর মান্দারি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাকিব (২২), দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর জয়লস্কর এলাকার মো. শাহজাহানে ছেলে ফার্নিচার ব্যবসায়ী সরোয়ার জাহান মাসুদ (২১), লক্ষ্মীপুরের মালেকের ছেলে অটোরিকশাচালক সাইফুল, ও দু’জন অজ্ঞাত।
স্থানীয়রা জানায়, সকাল সাড়ে ১১টা থেকে মহিপাল ফ্লাইওভারের নিচে অবস্থান নেন ছাত্র-জনতা। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ মহিপাল ফ্লাইওভারের দক্ষিণাংশে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন ব্যানার- ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে। সড়ক অবরোধ করায় বন্ধ থাকে যান চলাচল। দুপুর দেড়টার দিকে শহরের ট্রাংক রোড থেকে দলবল নিয়ে শহীদ শহিদুল্লাহ কায়সার সড়ক হয়ে মহিপাল যায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় সড়কে গুলি তাক করে সাংবাদিকদের একটি ব্যাংকের ভেতর তাড়া করে মোবাইল, প্রেস জ্যাকেট ও আইডি কার্ড কেড়ে নিয়ে মারধর করে তারা। পরে মহিপাল এলাকায় পৌঁছালে ছাত্র-জনতার ওপর অতর্কিত গুলি ও হামলা চালায় নেতাকর্মীরা।
এ সময় ক্ষমতাসীন দলের আরেকটি পক্ষ শহরের ইসলামপুর রোডে বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ও হামলা করে। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ছাড়াও ইটপাটকেলের আঘাতে অনেকে আহত হন। বিকালে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে আহত ও গুলিবিদ্ধ হয়ে ২৫ জন ভর্তি হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন বাংলাভিশনের প্রতিনিধি রকিবুল ইসলাম, দিলদার হোসেন, জাফর, কামরুল, পথচারী সাইফুল ইসলাম ও যুবদল নেতা সাইদুল ইসলাম (৩২)।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। সড়ক অবরোধ করে পুলিশকে লক্ষ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পাল্টা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী মহিপাল উড়াল সেতুর পাশে জড়ো হয়ে স্লোগান শুরু করেন। এ সময় আশপাশে থাকা শিক্ষার্থীরা এবং সাধারণ মানুষ মিছিলে শামিল হন। বেলা ২টার দিকে সেখানে মিছিল নিয়ে আসেন সরকার দলীয় কর্মী-সমর্থকরা।
আরিফ হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে গুলি ও হামলা চালিয়েছে। অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সরওয়ার নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, সরকার পতনের মতো দাবি আমাদের কখনোই ছিল না। শুধু শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে কোটা সংস্কার চেয়েছি। কিন্তু সেখানে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তারা। আমাদের এখন একদফা, একদাবি। সরকারের পতন নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। সাগর নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, একটি স্বাধীন দেশে কীভাবে এসব হতে পারে একবার নিজের বিবেককে প্রশ্ন করেন। এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই।
হামলা ও নিহতের বিষয়ে জানতে ফেনীর পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলামকে মুঠোফোনে একাধিক বার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট হাফেজ আহম্মেদ জানান, আমি গত শুক্রবার থেকে অসুস্থ। চিকিৎসা নিতে ঢাকায় এসেছি। ফেনীর ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত না।
যারা বুদ্ধিমান নিজের বিবেকে প্রশ্ন করেন? আগে আওয়ামী লীগ করছেন ভাল কথা কিন্তু এখন আশেপাশে কত%লোক আওয়ামী লীগ করে দেখেন যারা বড়ো নেতা বা এমপি মন্ত্রী তারাতো শহরে বা বিদেশে চলে যাবে, আপনি কি করবেন? সুতরাং আপযত যদি বুদ্ধিমান হয়ে থাকেন নিরব বা ছাত্রদের সাথে থাকেন! বর্তমান ৯০% জনগণ ছাত্রদের পক্ষে! আপনি কতোবড় নেতা আপনার চেয়ে অনেক বড়ো নেতা সুযোগ বুজে পালিয়ে গেছে খোঁজ নিয়ে দেখেন!