ঢাকা, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

খেলা

অলিম্পিকে প্রথম পদক সেন্ট লুসিয়ার

ট্র্যাকের নতুন রানী জুলিয়েন

স্পোর্টস ডেস্ক
৫ আগস্ট ২০২৪, সোমবারmzamin

এবারের অলিম্পিকে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সোনা জয়ের দৌড়ে ফেভারিটের তালিকায় ছিলেন শা’কারি রিচার্ডসন, নাকি শেলি-অ্যান ফ্রেজার-প্রাইসরা। ফ্রেজার-প্রাইস সেমিফাইনালে না থাকায় নিরঙ্কুশ ফেভারিট ছিলেন রিচার্ডসন। তবে সব হিসেব পাল্টে দিয়ে স্বর্ণপদক জিতেছেন সেন্ট লুসিয়ার মেয়ে জুলিয়েন আলফ্রেড। মেয়েদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে মাত্র ১০ দশমিক ৭২ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেরা হন সেন্ট লুসিয়ার ২৩ বছর বয়সী  স্প্রিন্টার। অলিম্পিকে যে কোনো ইভেন্টে সেন্ট লুসিয়াকে পদক এনে দেওয়া একমাত্র অ্যাথলেট তিনি। এই ইভেন্টের সেমিফাইনাল থেকেই নাম প্রত্যাহার করে নেন জ্যামাইকার হয়ে দুটি অলিম্পিক সোনাজয়ী শেলি-অ্যান ফ্রেজার-প্রাইস। শেষ সময়ে কারণ না জানিয়েই সরে দাঁড়ান তিনি। তাতে ফেভারিট ধরা হচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্রের শ্যা’কারি রিচার্ডসনকে। কিন্তু প্যারিসে চমক দেখালেন জুলিয়েন আলফ্রেড। শ্যা’কারি ১০.৮৭ সেকেন্ড সময় নিয়ে জিতেছেন রুপা।

বিজ্ঞাপন
১০.৯২ সেকেন্ড নিয়ে ব্রোঞ্জ জেতেন যুক্তরাষ্ট্রের আরেক স্প্রিন্টার মেলিসা জেফারসন। অলিম্পিকের ইতিহাসে ক্যারিবীয় দ্বীপদেশ সেন্ট লুসিয়ার এটি প্রথম পদক।  দেশটি প্রথমবার অলিম্পিক গেমসে অংশ নেয় ১৯৯৬-এ আটলান্টা আসরে। টানা আট অলিম্পিকসে পদকশূন্য ছিল ক্যারিবীয় দেশটি। এ বছরই জুলিয়েন আলফ্রেড বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স ইনডোর চ্যাম্পিয়নশিপে ৬০ মিটারে স্বর্ণপদক কুড়ান। ২০২২ সালের কমনওয়েলথ গেমসে ১০০ মিটারে রৌপ্য পদক জেতেন তিনি। জ্যামাইকার সেন্ট ক্যাথরিন হাইস্কুলে পড়াশোনার সময় স্প্রিন্টে প্রথম পাঠ তার। এরপর তিনি অ্যাথলেটিক্সের বিশেষ ক্যাটাগরিতে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১৫ সালে সেন্ট্রাল আমেরিকান এবং ক্যারিবিয়ান চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। ২০১৫ ও ২০১৭ সালে তিনি সেন্ট লুসিয়ার বর্ষসেরা জুনিয়র স্পোর্টসওম্যান স্বীকৃতি পান। ২০১৭ সালে কমনওয়েলথ যুব গেমস ১০০ মিটার চ্যাম্পিয়ন হন। ২০১৮ সালে যুব অলিম্পিক গেমসে জেতেন রৌপ্য। করোনার দীর্ঘ বিরতির পর ২০২২ সালে ইনডোর চ্যাম্পিয়নশিপে ৬০ মিটারে আলফ্রেড সর্বকালের সেরা পারফরম্যান্স করেন। তীব্র গরমের মধ্যেও ৭.০৪ সেকেন্ড সময়ে দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। সর্বকালের শীর্ষ ৩০ দ্রুততম নারীর একজন হয়ে ওঠেন। সেন্ট লুসিয়াকে প্রথম সোনার পদক এনে দেওয়ার পর হুঙ্কার দিলেও পরমুহূর্তে চোখে পানি দেখা যায় আলফ্রেডের। পদকটি উতসর্গ করেন  ১১ বছর আগে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে নাুফেরার দেশে পাড়ি জমানো বাবাকে। আলফ্রেড বলেন, ‘এটা মূলত ঈশ্বর, আমার কোচ এবং সর্বশেষ আমার বাবার জন্য। যিনি বিশ্বাস করতেন, আমি পারব। তিনি (বাবা) ২০১৩ সালে চলে গেছেন এবং তিনি আমাকে আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় মঞ্চে দেখতে পারবেন না। কিন্তু তিনি সব সময়ই তার মেয়ের অলিম্পিয়ান হওয়ার জন্য অহংকার বোধ করবেন।’

একদিন এমন সোনালি সাফল্যে ভাসবেন, সেই স্বপ্ন অনেক আগেই দেখেছিলেন আলফ্রেড। তিনি বলেন, ‘সব সময়ই বলে এসেছি, আমি সেন্ট লুসিয়ার প্রথম অলিম্পিক পদকজয়ীদের একজন হতে চাই। এখন আমি অলিম্পিক গেমসে (সেন্ট লুসিয়ার) প্রথম সোনার পদকজয়ী।’ এমন সাফল্যের পেছনে যে নিজের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার অবদানই বেশি ছিল আলফ্রেডের “আমি জেগে উঠেছি এবং লিখে রেখেছি, ‘জুলিয়েন আলফ্রেড, অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন।’ তাই আমি মনে করি, নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।” অনেকের কাছেই ১০০ মিটার স্প্রিন্টে আলফ্রেডের অলিম্পিক সোনা জয় বিস্ময়ের। গতকালের আগে পর্যন্ত তাকে নিয়ে মাতামাতি ছিল না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসে পড়ার সময় থেকেই নিজেকে তৈরি করা শুরু করেন আলফ্রেড। টেক্সাসে তিনি ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে বাওয়ারম্যান ট্রফি জিতেছেন, যেটা কিনা কলেজ ফুটবলের মর্যাদাপূর্ণ হেইসম্যান ট্রফির তুল্য। টেক্সাসে পড়ার সময় শেষ বছরে পাঁচটি এনসিএএ (ন্যাশনাল কলেজিয়েট অ্যাথলেটিক অ্যাসোসিয়েশন) শিরোপা জেতেন, যেটি রেকর্ডও। ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস থেকে গত বছর গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করার পরপরই তিনি স্পনসর হিসেবে পান বিশ্ববিখ্যাত প্রতিষ্ঠান পুমাকে। আলফ্রেড এ বছর ইনডোর চ্যাম্পিয়নশিপের ৬০ মিটারে জিতেছেন সোনার পদক। আলফ্রেড তার কোচ এড্রিক ফ্লোরিয়ালের অধীনে দীর্ঘদিন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এছাড়া জ্যামাইকার স্প্রিন্ট রাজা উসাইন বোল্টও তাকে অনুপ্রাণিত করেন। আলফ্রেড বলেন, ‘উসাইন বোল্ট অনেক মেডেল জিতেছে, সে আমার প্রেরণা।’ 
 

খেলা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

খেলা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status