শরীর ও মন
সিরিনজমা (Syringoma) ত্বকের ঘর্মগ্রন্থির এক ধরনের টিউমার
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবদুল হাই
২ আগস্ট ২০২৪, শুক্রবারটিউমার যেভাবে মানুষের মনে ভয়ের উদ্রেক হয়, আসলে মোটেই তেমন নয়। এটা মোটেই ক্ষতিকর রোগ নয়; তেমন কোনো বিরল রোগও নয়। অনেকের মুখেই এটা ঘামাচি বা ব্রনের মতো ছোট ছোট ফুসকুড়ির আকারে লক্ষ্য করা যায়। এটা শরীরের যেকোনো জায়গায় হতে পারে এবং এর বিভিন্ন ধরন আছে। যে ধরনটি সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়, সেটা হচ্ছে মুখের সিরিনজমা। সাধারণত চোখের নিচের পাতায়, গালের উপরি অংশে এবং অনেক ক্ষেত্রে গলায় এ রোগ পরিলক্ষিত হয়।
এ রোগের কারণ অজানা। বয়সন্ধিকালে অনেকেরই এ রোগের বিকাশ লক্ষ্য করা যায়। ছেলেদের চেয়ে মেয়েদেরই এই রোগটা বেশি হয়। এ রোগের পেছনে জেনেটিক কারণও থাকতে পারে, কারণ অনেক ক্ষেত্রে একই পরিবারের অনেক সদস্য এ রোগে ভোগেন। সাধারণত অতিরিক্ত মানসিক চাপ, সূর্যালোকের নিচে বেশিক্ষণ চলাফেরা করা, নিয়মিত মুখ পরিষ্কার না করা ইত্যাদি কারণে এ রোগ বেড়ে যায়।
সরিষা দানার মতো ছোট ছোট ফুসকুড়িই এ রোগীর লক্ষণ। অনেক সময় মনে হতে পারে শিশির বিন্দুর মতো ত্বকের একদম উপরেই এর অবস্থান। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ফুসকুড়িগুলো ত্বকের গভীর থেকেই উত্থিত হয়। ঘর্মগ্রন্থির নিষ্কাশন নালির মধ্যে এ টিউমারের জন্ম হয়।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আসলে কোনো ধরনের চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। তবে অনেক সময় সৌন্দর্য সচেতন নারীরা এগুলোকে মুখ থেকে দূরীভূত করতে চান। এজন্য সার্জিক্যাল চিকিৎসা যেমন রয়েছে, মেডিসিন চিকিৎসাও আছে। ইলেকট্রো-কটারি, লেজার থেরাপি ডার্মা-এব্রেশন ইত্যাদির মাধ্যমে ফুসকুড়িগুলোকে দূরীভূত করা যায়। মুখে খাওয়ার কিছু
ওষুধ যেমন আইসোট্রেটিনয়েন বেশ কাজে আসে। তবে কোনো অবস্থায়ই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ গ্রহণ করা উচিত নয়।
ঘরে বসেও এ রোগের চিকিৎসা নিজে নিজেই কিছুটা হলেও করা যায়। দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন, রোদে বের হওয়ার আগে প্রতিদিন সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করুন, প্রতিদিন ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার রাখুন। মুখ ভালোভাবে স্ক্রাব করলে এ রোগ যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে থাকে।
লেখক: (চর্ম, যৌন ও এলার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ), জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
চেম্বার-১২, স্টেডিয়াম মার্কেট, সিলেট।
ফোন-০১৭১২-২৯১৮৮৭